Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
তারাপীঠে যুব সম্মেলন

দলের আদর্শ বোঝাতে বিজেপির পাঠশালা

ক্ষমতায় আসার আগে এবং পরে অন্য রাজনৈতিক দল থেকে তৃণমূল যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছিল রাজ্যে। বর্তমানে একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তৃণমূল-সহ অন্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে আসার। বীরভূম জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৪ ০০:৪৬
Share: Save:

ক্ষমতায় আসার আগে এবং পরে অন্য রাজনৈতিক দল থেকে তৃণমূল যোগ দেওয়ার হিড়িক পড়েছিল রাজ্যে। বর্তমানে একই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে তৃণমূল-সহ অন্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে আসার। বীরভূম জেলাও তার ব্যতিক্রম নয়।

দিন দিন বিজেপি যে তার প্রভাব বাড়ানোর চেষ্টা করছে লোকসভা নির্বাচনেও তার প্রমাণ মিলেছে। লোকসভা ভোটের পরেও বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রবণতা রয়েছে। তাই অন্য দল ছেড়ে নতুন যাঁরা আসছেন তাঁদেরকে দলীয় ভাবধারায় দিক্ষিত করার সিদ্ধান্ত নিল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব। সেই কারণে তারাপীঠে দলের যুব সংগঠনের সদস্যদেরকে তিনদিনব্যাপী প্রশিক্ষণের ডাক দিল বিজেপির জেলা যুব মোর্চা। আজ শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত সেই প্রশিক্ষণ চলবে। বিজেপির জেলা সহ-সভাপতি শুভাশিস চৌধুরী বলেন, “জেলায় মুরারই থেকে ইলামবাজার পর্যন্ত ১৯টি ব্লক-সহ রামপুরহাট, সিউড়ি, বোলপুর, সাঁইথিয়া, নলহাটি, দুবরাজপুর এই ৬টি পুরসভা এলাকা নিয়ে রাজনৈতিক ভাবে মোট ২৫টি ব্লক ও মণ্ডল কমিটিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে এবং পরে দলের মধ্যে যুব সদস্যদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রত্যেকটি ব্লক এবং মণ্ডল কমিটি থেকে ৩৫০ জন যুবককে বাছাই করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শুক্রবার এই প্রশিক্ষণের উদ্বোধনের আগে দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এবং অন্য নেতৃত্বের উপস্থিতিতে প্রকাশ্য সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছে।”

অন্য দিকে, বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “সিপিএম, কংগ্রেস, তণমূল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে বিজেপিতে অনেক নতুন লোক বিজেপিতে আসছেন। তাঁদেরকে বিজেপি দলের চিন্তাধারা, ভাবধারায় উদ্বুগ্ধ করার জন্য প্রশিক্ষিত হওয়ার প্রয়োজন আছে। যুবসমাজকে আমাদের দলের রাজনৈতিক শিক্ষায়, দলের অর্থনীতি, কৃষিনীতি, শিল্পনীতি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়ার জন্য এই প্রশিক্ষণ শুধু বীরভূমে নয় রাজ্যের সর্বত্র চলছে। এ ছাড়া এই সম্মেলন থেকে যুবকদের রাজ্যে শাষক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ভাবে প্রতিরোধ করার ডাক দেওয়া হবে।”

প্রসঙ্গত, বুধবার দুবরাজপুর ব্লকের সাহাপুর পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু মানুষ বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। কিছু দিন আগে বোলপুর থানা এলাকার কোপাইতে তৃণমূলের ‘দখলে’ থাকা একটি বাড়ি বিজেপির হাতে চলে আসে। তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করেছিল, ওই বাড়ি বিজেপি জোর করে দখল করেছে। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব পাল্টা দাবি করেছিল, স্বেচ্ছায় ওই বাড়ির চাবি তৃণমূল তাদের হাতে তুলে দিয়েছে। তবে জোর করে দখল বা স্বেচ্ছায় চাবি বিজেপির হাতে তুলে দেওয়া হোক না কেন, রাজ্য জুড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর্ব চলছে।

বিজেপির যুব মোর্চার জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা দাবি করেছেন, “লোকসভা নির্বাচনের আগে জেলায় সদস্য সংখ্যা ৩ হাজার বেড়েছিল। সেই সংখ্যা এখন ২০ হাজারের বেশি ছাড়িয়ে গিয়েছে। প্রায় ১৮ হাজার জন দলের সদস্য সংখ্যা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে তাঁদের সদস্য দেওয়ার জন্য কাগজ চেয়ে পাঠানো হয়েছে। এককথায় বীরভূম জেলায় এখন বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে বোলপুর এবং সিউড়ি মহকুমার সেই সমস্ত এলাকায় যেখানে তৃণমূলের আক্রমণে মানুষ দিশেহারা সেই সমস্ত এলাকার মানুষ বিজেপির উপর আস্থা রাখছেন এবং হাজার হাজার মানুষ এখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে সাহস পেয়েছেন। তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস ছেড়ে তাঁরা বিজেপি দলের সদস্য পদ গ্রহণ করছেন।”

এ দিকে যুব মোর্চার প্রশিক্ষণ নিতে চাইছেন যেমন, মাস কয়েক আগে বিজেপিতে যোগ দেওয়া সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য শিবদাস লেট তেমনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া কীর্ণাহার, নানুর, ইলামবাজার, বোলপুর, খয়রাশোল এলাকার শতাধিক যুব সম্প্রদায়। শিবদাস লেট , কীর্ণাহারের দেবাশিস ভট্টাচার্যদের কথায়, “যে কোনও রাজনৈতিক দলের তার সাংবিধানিক রীতিনীতি প্রত্যেকটি কর্মীকে মেনে চলা উচিৎ। তা ছাড়া বর্তমানে বিজেপি একমাত্র ভারতের প্রাচীন ঐতিহ্যের ধারক এবং বাহক বলে বিজেপি দলের চিন্তাধারায় অনেকেই প্রশিক্ষণ নিতে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আমরাও নিচ্ছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bjp youth meeting ideology
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE