Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

নতুন পুজোর আনন্দে মাতবে বটতলাপাড়া

বেশ কিছুদিন ধরেই মনে একটু একটু করে ইচ্ছেটা তারা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সেই ইচ্ছে পূরণ করতে যে সামর্থ ও ঐক্যবদ্ধ সহমত দরকার ছিল তা গত বছর পর্যন্ত করে উঠতে পারেননি বটতলা পাড়ার বাসিন্দারা। কিন্তু এ বার তা করে উঠতে পেরেছেন।

প্রথম পুজোর প্রস্তুতি।—নিজস্ব চিত্র।

প্রথম পুজোর প্রস্তুতি।—নিজস্ব চিত্র।

অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়
রামপুরহাট শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:০৭
Share: Save:

বেশ কিছুদিন ধরেই মনে একটু একটু করে ইচ্ছেটা তারা বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সেই ইচ্ছে পূরণ করতে যে সামর্থ ও ঐক্যবদ্ধ সহমত দরকার ছিল তা গত বছর পর্যন্ত করে উঠতে পারেননি বটতলা পাড়ার বাসিন্দারা। কিন্তু এ বার তা করে উঠতে পেরেছেন। তারই ফল হিসেবে রামপুরহাট শহরে একটি নতুন দুর্গাপুজোর সংযোগ ঘটল।

তাই রামপুরহাট ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় এখন সাজো সাজো রব। এলাকায় গড়ে উঠছে মণ্ডপ এবং চালধোয়ানী পুকুরপাড়ে বটতলা ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। পাড়ায় এ বার প্রথম দুর্গাপুজা। সেই জন্য একটু বাড়তি উৎসাহ নিয়ে মণ্ডপ এবং প্রতিমা তৈরির কাজ দেখতে যেমন ব্যস্ত পাড়ার কচিকাঁচারা তেমনি পাড়ার আঠারো বছরের তরুণ থেকে পঞ্চাশ বছরের প্রৌঢ়দের মধ্যেও বাড়তি উন্মাদনা। কাজ ঠিকঠাক চলছে কি না সেই দায়িত্ব নিয়ে তাঁরা নিজেদের মধ্যে রোজ সকাল সন্ধ্যা মিলিত হচ্ছেন। এলাকায় নতুন পুজোকে ঘিরে পাড়ার মানুষের উৎসাহ, উন্মাদনা, আনন্দ চোখে পড়ার মতো। উদ্যোক্তাদের কথায়, আগে চালধোয়ানী পাড়ায় একটি সর্বজনীন দুর্গাপুজা হত। সেই পুজোতে রামপুরহাট ১১ নম্বর ওয়ার্ডের চালধোয়ানী পুকুর পাড় সংলগ্ন বাসিন্দারা যেমন, তেমনি রামপুরহাট পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলা পাড়া এলাকার বাসিন্দারাও ওই পুজোর সঙ্গে মিলেমিশে যেতেন। পরে চালধোয়ানী পুকুরপাড়ের পশ্চিম দিকে নতুন করে একটি আর একটি পুজো চালু হল।

বেশ কিছু দিন যাবত এই ভাবে চলার পর বটতলা পাড়ায় নতুন নতুন বসতি গড়ে উঠতে শুরু করে। এলাকা বাড়তে থাকে। বাড়তে থাকে এলাকার মানুষের চাহিদা। এই ভাবে নতুন রীতি, নতুন আঙ্গিক, নতুন উপকরণ এবং এলাকার মানুষের চাহিদাকে প্রাধান্য— সব নিয়েই এ বছর বটতলা পাড়ায় নতুন পুজো বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন। পুজো কমিটির সম্পাদক পথিক মণ্ডল বললেন, “এলাকায় এখন প্রায় ৪০০ ঘর লোক বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই আলাদা করে নিজেদের পাড়ায় দুর্গাপুজো শুরু করার ইচ্ছে অনেক দিন থেকে মনের মধ্যে পুষে রেখেছিলেন। সেই ইচ্ছে থেকে নিজেদের সাধ্য মতো পাড়ায় প্রথম পুজোর আনন্দে সকলে মেতে উঠেছি।” বটতলা পাড়ার বধূ প্রতিমা মণ্ডল, অর্পিতা প্রামাণিক, সোমা সরকারদের কথায়, “পাড়ায় পুজো না থাকার জন্য এতদিন কেউ কেউ মায়ের অঞ্জলি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মণ্ডপে মণ্ডপে ঘুরপাক খেতাম। কেউ বা একটু প্রসাদ খেয়ে উপোস ভঙ্গ করার জন্য একটু প্রসাদের অপেক্ষায় থাকতেন। পাড়ায় পুজো হওয়ার জন্য এ বার সেই চাপটা থাকবে না।” কী বলছে ছোটরা? বীরু, আদিত্য, অর্ণবদের পাড়ায় এ বার ঠাকুর, মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য স্কুল ছুটি ছিল। ওই দিন সকাল থেকে নাওয়া-খাওয়া ভুয়ে তারাও পাড়ার নতুন পুজোর আনন্দে মেতেছে।

উদ্যোক্তারা জানালেন, রামপুরহাট শহর সমন্বয় কমিটি এবং প্রশাসন সকলের অনুমোদন নিয়ে সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে এ বার এক লক্ষ টাকা বাজেট নিয়ে পুজো করা হচ্ছে। পঞ্চমীর দিন থেকে চলবে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। রয়েছে নবমীর দিন ভোগ খাওয়ানোর ব্যবস্থাও। উদ্যোক্তাদের কথায়, “প্রতিযোগিতা নয়। নিজেদের মনের মতো করে মা দুর্গার আবাহন করার জন্য এই পুজোর আয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

pujo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE