সম্প্রসারণ হতে চলেছে সাঁইথিয়া রেল সেতুর। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরের (রোড) চিফ ইঞ্জিনিয়রকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে রেল। চিঠির কপি সাঁইথিয়া পুরপ্রধান, জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকেও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে।
জেলার বাণিজ্য কেন্দ্র সাঁইথিয়া শহরে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই সেতুটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সতীপীঠ নন্দীকেশ্বরী মন্দির ও জেলার একমাত্র হোমিওপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজও এই শহরে। এতে দিন দিন এই শহরে জনসংখ্যার চাপ বেড়েই চলেছে। অথচ, রাস্তা বলতে পশ্চিম থেকে পুর্বে চলে যাওয়া একটি রাস্তা। যোগাযোগের জন্য মানুষ সেই জন্য বেশিরভাগ সময় নির্ভর করেন শহরের উত্তর দক্ষিণে চলে যাওয়া রেলের সেতুটির ওপর।
সাঁইথিয়া সেন্ট এ্যান্ড্রুজ স্কুলের শিক্ষিকা পিয়ালি লোধের অভিযোগ, রেল সেতুটি চওড়ায় এতই কম যে একটি গাড়ি গেলে, পাশ দিয়ে পায়ে হেঁটে পার হওয়া দায়। জেলার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রাণ কেন্দ্র হওয়ার সুবাদে প্রতিদিন প্রচুর বাইরের গাড়ি আসে শহরে। ফলে নিত্যদিন যানজটে নাজেহাল হতে হয় স্কুল পড়ুয়া, পূণ্যার্থী, শহর বাসি থেকে বিভিন্ন কাজে আসা বহিরাগত লোকজনকে। আটকে যাচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্সও। যানজটে আটকে পড়ে নাকাল হতে হয় শহরবাসীকে।
ওই রেল সেতুর উপর দিয়েই ১০টনের বেশি ভাড়ি গাড়ি যাতায়াত নিষেধ। ভগ্নপ্রায় সেতুর গায়ে পুর কর্তৃপক্ষ তাও লিখে দিয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কারণ যাতায়াতের একমাত্র পথ ওই সেতু। সাঁইথিয়া পুব পাড়ের বাসিন্দা সমাজকর্মী দেবাশিস সাহা, উপ পুরপ্রধান শান্তুনু রায়, ওষুধ ব্যবসায়ী শ্যামল মিত্ররা বলেন, “এর আগে সেতু সম্প্রসারণের দাবিতে বহু আন্দোলন মিটিং মিছিল হয়েছে শহরে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। রেল সেতু সম্প্রসারণের সঙ্গে সেতুর পুব পাড়ে একটি রেলের টিকিট কাউন্টার, ও প্ল্যাটফমের উত্তর দিকে এক-দুই ও তিন-চার প্ল্যাটফম ছুঁয়ে রেল লাইনের দু’ প্রান্তে যাতায়াতের জন্য একটি ফুট ব্রিজের দাবিও দীর্ঘদিনের।” বাসিন্দারা জানান, কান্দী রেলওয়ে সংযুক্ত করণ কমিটি ও স্থানীয় পুর কর্তৃপক্ষও দীর্ঘদিন থেকে এ ব্যাপারে দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। রেল সেতুর জ্যামে পরে টিকিট কাউন্টার পৌঁছতে পৌঁছতেই অনেক সময় নির্দিষ্ট ট্রেন ছেড়ে চলে যায়। একটি টিকিট কাউন্টার ও একটি ফুট ব্রিজের দাবি তাঁদের।
রেল সুত্রে জানা যায়, ১৯২৫ সালে সাঁইথিয়ায় রেলসেতুটি নির্মাণ হয় লাইনের দু’পাড়ের মানুষ ও যানবাহন যাতায়াতের জন্য। শহর বাড়লেও সাঁইথিয়ার তুলনায় রাস্তাঘাট বাড়েনি। দীর্ঘ ৯০ বছরে রেলের সেতুর সম্প্রসারণ হয়নি। তেমনি অতি প্রয়োজন সত্ত্বেও রাজনৈতিক কারণে একটি বাইপাসও করে উঠতে পারেনি পুর কর্তৃপক্ষ। রেল সেতুর সম্প্রসারণ সেই জন্য পুরসভার পক্ষ থেকে চিঠি প্রাপ্তি ও রেলকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাসে খুশি বাসিন্দারা। এদিকে সেতুর সম্প্রসারণের সুখবরের মাঝেই সেতুর দু’ধারে ফুটপাত ঘিরে গজিয়ে ওঠা দোকানগুলির ভবিষৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাঁইথিয়ার পুরপ্রধান বিপ্লব দত্ত বলেন, “সে সব পরে ভাবা যাবে। শহরবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ও প্রয়োজন, তাই যে কোনও মুল্যে আগে রেল সেতুর সম্প্রসারণ হওয়া প্রয়োজন। সেতু সম্প্রসারণের ম্যাপ বা কবে থেকে কাজ শুরু হবে সে ব্যাপারে রেল এখনও কিছু জানায়নি, তবে, রেলসেতু সম্প্রসারণের ব্যাপারে রেল কর্তৃপক্ষের চিঠি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেলকে সব রকম সহযোগিতার আশ্বাস জানিয়ে চিঠি দিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy