Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
নির্দেশকে বুড়ো আঙুল

শুশুনিয়ায় জমছেই থার্মোকল

বুধবার শুশুনিয়ায় গিয়ে দেখা গেল, পাহাড় কোলে পিকনিক স্পটের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের তরফে অনেক ডাস্টবিন দেওয়া হয়েছে।

যথেচ্ছ: জেলা প্রশাসন ময়লা ফেলার পাত্র দিয়েছে। কিন্তু তার বাইরেই আবর্জনা ফেলে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

যথেচ্ছ: জেলা প্রশাসন ময়লা ফেলার পাত্র দিয়েছে। কিন্তু তার বাইরেই আবর্জনা ফেলে যাচ্ছেন পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ছাতনা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

নিয়ম ভাঙলে রেয়াত করা হবে না, জানিয়েছিলেন মহকুমাশাসক। বলে গিয়েছিলেন, বাঁকুড়ার অন্যতম পর্যটনস্থল শুশুনিয়ার পরিবেশ বাঁচাতে এ বার প্রশাসন কড়া হবে। ইতিমধ্যেই ওই পাহাড় এলাকায় প্লাস্টিক, থার্মোকল, মাদক দ্রব্য বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পাহাড় কোলের নানা জায়গায় ফেস্টুন টাঙিয়ে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু পুরনো ছবিটা যে বিশেষ বদলেছে, তা নয়।

বুধবার শুশুনিয়ায় গিয়ে দেখা গেল, পাহাড় কোলে পিকনিক স্পটের বিভিন্ন জায়গায় প্রশাসনের তরফে অনেক ডাস্টবিন দেওয়া হয়েছে। অথচ পিকনিক করতে আসা দলবল আবর্জনা ডাঁই করে ফেলে গিয়েছে ডাস্টবিনের পাশে। ওই আবর্জনা স্তুপে থার্মোকলের থালা, বাটি, প্লাস্টিকের গ্লাসও দিব্যি রয়েছে। হাওয়ায় উড়ছে এঁটো থালা, বাটি। ছড়িয়ে পড়ছে নানা জায়গায়। নষ্ট হচ্ছে পাহাড়ের পরিবেশ।

বদল কোথায় হল?

মহকুমাশাসক (বাঁকুড়া সদর) অসীমকুমার বালা বলেন, “এমনটা হওয়ার কথা নয়। আমি ব্লক দফতর ও গ্রামপঞ্চায়েতকে পিকনিক স্পটে কড়া নজরদারি চালাতে বলেছি। তারপরেও কেন এই ঘটনা ঘটছে তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

সবে শুরু হয়েছে শীতের মরসুম। এখনই পিকনিক করতে শুশুনিয়ার কোলে সাধারণ মানুষের ঢল না নামলেও সপ্তাহান্তের ছুটিতে অনেকে চড়ুইভাতি করতে আসছেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই শুশুনিয়া এলাকার দোকানগুলিতে প্লাস্টিক ও থার্মোকলের থালা, বাটি, গ্লাস বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে প্রশাসন। বিডিও (ছাতনা) মলয় চট্টোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, দোকানগুলিতে লুকিয়ে চুরিয়ে ওই সমস্ত জিনিস বিক্রি হচ্ছে কি না, নিয়ম করে তা-ও দেখা হচ্ছে।

কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দাবি, পিকনিক করতে আসা লোকজন সঙ্গে করেই নিয়ে আসছেন প্লাস্টিক আর থার্মোকলের জিনিস। ওই সব ব্যবহার করতে দেখেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না, তাঁরাই সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। পাহাড়কোলে কি নজরদারি শুরু হয়েছে? মলয়বাবু বলেন, “শুশুনিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের উপরে এলাকাটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পিকনিক পার্টি নিয়ম মানছে কি না, তা দেখতে পঞ্চায়েত লোক নিয়োগ করেছে।”

তাহলে সমস্যাটা কোথায়?

শুশুনিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান স্বপন তন্তুবায় বলেন, “একটি কমিটি গড়ে দিয়ে পিকনিক পার্টির গাড়ির রাখার টাকা আদায় এবং এলাকা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখনও সে ভাবে পর্যটনের মরসুম শুরু হয়নি বলেই হয়তো নজরদারিতে খামতি থেকে যেতে পারে।” স্বপনবাবু জানান, তিনি ওই কমিটির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে নজরদারি কড়া করার নির্দেশ দেবেন।

প্রতি বছরই পর্যটন মরসুমে শুশুনিয়ার পরিবেশ নোংরা আবর্জনায় ভরে ওঠে। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন দূর-দূরান্ত থেকে পাহাড়ের টানে ছুটে আসা পর্যটকেরা। এ বছর মহকুমাশাসকের আশ্বাসে ভর করে অনেকেই ভেবেছিলেন পরিস্থিতি বদলাবে। তবে শুরুতেই ফাঁক ফোঁকর দেখা যাচ্ছে। মহকুমাশাসক বলেন, “শীঘ্রই আমি শুশুনিয়া গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিন দেখব। পঞ্চায়েত ও ব্লক দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে কোথায় সমস্যা হচ্ছে জেনে ব্যবস্থা নেব।” এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

picnic wastage garbage Susunia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE