Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বড়জোড়ার যুবক মৃত ভিন্‌ রাজ্যে

ফের ভিন্‌ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাঁকুড়ার এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ওডিশার রৌরকেলার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শ্যামল মণ্ডল (২৩)। বড়জোড়ার মালিয়াড়া অঞ্চলের পিংরুই গ্রামে তাঁর বাড়ি। রৌরকেলার রঘুনাথপল্লি থানার বালুজুডি এলাকার একটি ঘরে এক সহকর্মীর সঙ্গে থাকতেন তিনি।

শ্যামল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

শ্যামল মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:২৪
Share: Save:

ফের ভিন্‌ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া বাঁকুড়ার এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। ওডিশার রৌরকেলার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম শ্যামল মণ্ডল (২৩)। বড়জোড়ার মালিয়াড়া অঞ্চলের পিংরুই গ্রামে তাঁর বাড়ি। রৌরকেলার রঘুনাথপল্লি থানার বালুজুডি এলাকার একটি ঘরে এক সহকর্মীর সঙ্গে থাকতেন তিনি। সোমবার রাতে সেই ঘরেই শ্যামলের গলায় ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যায়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে।

রৌরকেলার পুলিশ সুপার উমাশঙ্কর দাস মঙ্গলবার বলেন, “বড়জোড়া থানার বাসিন্দা ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতের পরিবারের লোকজন এসে গিয়েছেন। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে পেলেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তদন্ত শুরু হয়েছে।”

গত ডিসেম্বরেই কেরলে কর্মরত ইন্দাসের রোল গ্রামের যুবক হেমন্ত রায়ের (২৬) গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়। সেখানকার পুলিশ আত্মহত্যা মনে করলেও পরিবারের দাবি ছিল, তাঁকে খুন করা হয়েছে। দেহটি ফিরিয়ে এনে ফের বাঁকুড়ায় ময়না-তদন্ত করা হয়। সেই রিপোর্ট অবশ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

সেই ঘটনার রেশ কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের ভিন্‌ রাজ্যে কর্মরত জেলার আরও এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় জল্পনা দানা বেঁধেছে।

শ্যামলের পরিবার সূত্রে জানা যাচ্ছে, গত আড়াই বছর ধরে তিনি রৌরকেলায় কর্মরত ছিলেন। শ্যামলের বাবা নারান মণ্ডল ক্ষুদ্র চাষি, মা বেলারানিদেবী গৃহবধূ। দুই ছেলের মধ্যে শ্যামলই ছোট। তাঁর দাদা কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছেন। খবর পেয়ে ভেঙে পড়ছেন নারানবাবু ও তাঁর স্ত্রী। নারানবাবু ছেলের দেহ আনতে রৌরকেলা গিয়েছেন।

সেখান থেকে ফোনে নারানবাবু এ দিন বলেন, “ঘরের অভাব মেটাতেই বাইরে কাজ করতে গিয়েছিল ছেলে। রবিবার রাতেই আমাদের সঙ্গে ফোনে তার শেষ বার কথা হয়। সোমবার রাতে ওর সহকর্মী ফোন করে ঘটনাটি জানায়।” তিনি যুক্ত করেন, “ছেলের মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। তার আত্মহত্যা করার কোনও কারণ দেখছি না।” ঘটনার যথাযথ তদন্তের দাবি করেছেন তিনি।

ঠিক কী হয়েছিল সোমবার? সহকর্মী গঙ্গাজলঘাটির বাসিন্দা শান্তিময় গোড়ের সঙ্গে এক ঘরেই থাকতেন শ্যামল। শান্তিময় জানান, সোমবার কাজে যোগ দিতে যাননি শ্যামল। তাঁর দাবি, “আমি যখন সকালে বের হই, তখন দেখি শ্যামল জামাকাপড় কাচাকাচি করছে।’’ সন্ধ্যায় ডাকাডাকিতে শ্যামল দরজা খোলেনি।” তিনি জানান, তিনি ঘুলঘুলি থেকে উঁকি মেরে দেখেন ঘরের সিলিংয়ের একটি পাইপে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলছেন শ্যামল।

সন্ধ্যায় পরিবারটির সঙ্গে দেখা করেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুখেন বিদ ও ব্লক তৃণমূল সভাপতি অলক মুখোপাধ্যায়। মালিয়াড়া পঞ্চায়েত সদস্য বাপ্পা চন্দ্রাধূর্য্য বলেন, “আমরা চাই শ্যামলের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তে নামুক বাঁকুড়া পুলিশ।”

বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “দেহ ফিরিয়ে আনার পরে পরিবার যদি কোনও অভিযোগ দায়ের করে, তখন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead Body Odhisa Unnatural Death
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE