Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

প্রদর্শনী, ছবিতে জাপানি সংস্কৃতি

জাপানিরা নাটকে যে মুখোশ ব্যবহার করেন, সেই মুখোশগুলি এ বারের প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়ের কিছু রোল ছবি ও বিশেষ আঁশযুক্ত কাগজে আঁকা সাদা-কালো ছবি রয়েছে নন্দনের এই প্রদর্শনীতে।

দর্শক: জাপানি ছবির প্রদর্শনীতে অতিথিরা। বিশ্বভারতীতে। —নিজস্ব চিত্র।

দর্শক: জাপানি ছবির প্রদর্শনীতে অতিথিরা। বিশ্বভারতীতে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৩
Share: Save:

বিশ্বভারতীতে ‘জাপানি সংস্কৃতির ছোঁয়া’ শীর্ষক অনুষ্ঠান হল। উদ্যোক্তা ছিল বিশ্বভারতী ভাষাভবনের জাপানি বিভাগ ও কলাভবন। প্রথমেই কলাভবনের নন্দনে জাপানি চিত্র ও মুখোশের একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন চিত্রকর যোগেন চৌধুরী, কলকাতার জাপান দূতাবাসের দূত মাসাউকি তাগা সহ জাপানের প্রতিনিধিরা। প্রদর্শনীটি চলবে ২৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

জাপানিরা নাটকে যে মুখোশ ব্যবহার করেন, সেই মুখোশগুলি এ বারের প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়াও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময়ের কিছু রোল ছবি ও বিশেষ আঁশযুক্ত কাগজে আঁকা সাদা-কালো ছবি রয়েছে নন্দনের এই প্রদর্শনীতে। মুখোশ ও ছবি সহ মোট ৩৬টি বিষয় রয়েছে। রোল ছবিগুলোর মধ্যে বিখ্যাত হল ওকাকুরার একটি ছবি। যেটি তিনি নিজেই এঁকেছিলেন। ওকাকুরা জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়িতে যাতায়াত করতেন। সেখান থেকেই অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ঠাকুরবাড়ির অন্য সদস্যরা জাপানের ছবির প্রতি আকৃষ্ট হন।

যোগেন চৌধুরীর কথায়, ‘‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নন্দলাল বসু জাপানে গিয়ে যে ছবি সংগ্রহ করেছিলেন, তা এখনও বিশ্বভারতীতে সংরক্ষিত আছে। এটা খুবই গর্বের ব্যাপার। এ রকম আর কোথাও নেই।’’ জাপানি সংস্কৃতির ছোঁয়া শীর্ষক অনুষ্ঠান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এই ধরনের অনুষ্ঠানে জাপান-ভারত সম্পর্কও আরও সুদৃঢ় হবে।’’ প্রদর্শনীর উদ্বোধনের পরে রবীন্দ্রভবনের বিচিত্রায় জাপানের চা-উৎসব ‘চাদো’-এর একটি প্রদর্শনী দেখান জাপানের উরাসেনকে স্কুলের চা-মাস্টার ও শিক্ষক সোসেই আজিওকা।

চা-উৎসবে তিনি যে চা তৈরি করেন তা পান করেন জাপানি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান গীতা কীনী ও চিত্রশিল্পী যোগেন চৌধুরীকে। এই উৎসব জাপানিদের অন্যতম প্রধান উৎসব।

জাপানের এই চা উৎসব প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার জানিয়েছিলেন, জাপানির কাছে এটা ধর্মানুষ্ঠানের তুল্য। ও ওঁদের জাতীয় সাধনা। চা তৈরির প্রত্যেক অঙ্গ যেন ছন্দের মতো। ধোয়া মোছা, আগুন জ্বালা, চাদানির ঢাকা খোলা, গরম জলের পাত্র নামানো, পেয়ালায় চা-ঢালা, অতিথির সম্মুখে এগিয়ে দেওয়া— সমস্ত এমন সংযম এবং সৌন্দর্যমণ্ডিত যে, না দেখলে বোঝা যায় না। চা-পানের প্রত্যেক আসবাবের প্রশংসাও করেছিলেন কবিগুরু। কবিগুরুর সেই বর্ণনাই যেন নিজেদের চোখের সামনে দেখলেন সকলে। জাপানি বিভাগের পড়ুয়াদের কথায়, ‘‘বিষয়টা বইতে পড়েছিলাম। সেই জিনিসই চোখের সামনে দেখতে পাওয়াটা খুব বড় পাওনা।’’

চা-উৎসবের পরে লিপিকা প্রেক্ষাগৃহে জাপানের অন্যতম একটি বাজনা ‘কেৎসুমি’ বাজান গেনজিরো ওকুরা। তাঁকে ‘লিভিং ন্যাশনাল ট্রেসার অফ জাপান’ বলা হয়। প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে এই যন্ত্রটি নারা প্রদেশে আবিষ্কৃত হয়। গেনজিরো ওকুরা জানান, তিনি ভারতে এসেছেন বুদ্ধের জন্য। জাপানের সংস্কৃতির ছোঁয়া এখানে পেয়েও তিনি আনন্দিত। সাধারণ দর্শকেরা মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন জাপানি বিভাগকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE