অবরুদ্ধ: অবরোধে থমকে ট্রেন। শুক্রবার রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র।
রেল পুলিশের বাধায় সিউড়ি স্টেশনে ভেস্তে গেল বামপন্থী যুব সংগঠনের পূর্বঘোষিত রেল রোকো কর্মসূচি। যাত্রী পরিষেবা বৃদ্ধি-সহ ওই কর্মসূচি পালনে শুক্রবার সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ স্টেশনে পৌঁছেছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর শতাধিক সদস্য। কিন্তু স্টেশন চত্বরে ওঠার মুখেই আন্দোলনকারীদের বাধা দেয় আরপিএফ ও জিআরপি। দু’পক্ষের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। সংগঠনের অভিযোগ, তাঁদের সদস্যদের সরাতে লাঠিচার্জ করে আরপিএফ। যদিও ওই অভিযোগ মানেনি রেল পুলিশ।
একাধিক রেল রুট বাতিলের প্রতিবাদ, রেলের শূন্যপদে নিয়োগ, পর্যাপ্ত ট্রেন চালানো, দেশব্যাপী রেল পরিষেবা সংক্রান্ত কয়েকটি দাবি সামনে রেখে রেল রোকো কর্মসূচি নিয়েছিল বামপন্থী ওই যুব সংগঠন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ওই কর্মসূচি পালন করা হলেও কলকাতায় একটি পরীক্ষা থাকায় পিছিয়ে তা করা হয় শুক্রবার। সেই কর্মসূচি পালনের জন্যই রাজ্যের বিভিন্ন স্টেশনের মতো, পূর্ব রেলের অন্ডাল–সাঁইথিয়া শাখায় জেলা শহর সিউড়ি স্টেশনে যান ওই সংগঠনের সদস্যরা। অন্যান্য দাবির সঙ্গে সিউড়ি –প্রান্তিক রেলপথ চালু করার দাবিও ছিল। কিন্তু প্লাটফর্মে উঠতে পারলেও রেল লাইন পর্যন্ত পৌঁছনো সম্ভব হয়নি। সংগঠনের দাবি, প্লাটফর্মে যেতেই তেড়ে আসে রেল পুলিশ এবং তাঁদের মারতে শুরু করে। লাঠির আঘাতে ৪-৫ জন আহত হন। সংগঠনের জেলা সম্পদক মতিউর রহমানের দাবি, আক্রান্ত হন তিনিও। রেল পুলিশ অবশ্য লাঠিচার্জের অভিযোগ মানেনি। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগে থেকে এই কর্মসূচির কথা তাদের জানানো হয়নি। যাঁরা এসেছিলেন তাঁদের কাছে প্লাটফর্ম টিকিটও ছিল না। সেই সময় রুটের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন হুল এক্সপ্রেসে সিউড়ি স্টেশনে পৌঁছনোর কথা ছিল। সময় হয়েছিল অন্ডালগামী একটি লোকাল ট্রেনেরও। রেলযাত্রীরা যাতে সমস্যায় না পড়েন এবং আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না হয়, সেই কারণে পুলিশ অন্দোলনকারীদের প্রতিহত করেছে। ডিওয়াইএফআইয়ের জেলা সম্পদক মতিউর রহমান জানান, যাত্রীদের অসুবিধা করার উদ্দেশ্য ছিল না ,তাঁদের দাবি সামনে আনতেই এই কর্মসূচি পালন। সেটা হতে দেয় নি রেল পুলিশ।
এ দিকে, ডিওয়াইএফআই-এর রেল রোকো আন্দোলনের প্রভাব পড়ে রামপুরহাটেও। পাশাপাশি ওই স্টেশনে প্লাটফর্মের সংখ্যা বাড়ানোর দাবি জানান দলের স্থানীয় নেতৃত্ব। শুক্রবার রামপুরহাট স্টেশনে ১৫ মিনিট রেল রোকো কর্মসূচি পালন করেন সংগঠনের সদস্যরা। তার জেরে গুয়াহাটিগামী কাঞ্জনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ওই সময় রামপুরহাট স্টেশনে থমকে যায়। ডিওয়াইএফআই-এর জেলা সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ সিংহ জানান, রামপুরহাট স্টেশনে প্লাটফর্মের সংখ্যা কম থাকায় অনেক সময় স্টেশনের বাইরে ট্রেন দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে। তাতে যাত্রীরা ভোগান্তির মুখে পড়েন। তা ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে রেলে স্বচ্ছ ভাবে কর্মী নিয়োগের দাবিও জানানো হয়। রেল রোকো কর্মসূচির পর ডিওয়াইএফআই কর্মীরা রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে জমায়েত করেন। সেখানে কেন্দ্রের নানান জনবিরোধী নীতির সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের নেতারা।
রেলের সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ, যাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিতকরণ, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পুনর্নিয়োগ বন্ধ-সহ ১২ দফা দাবিতে ডিওয়াইএফআই-এর কর্মসূচি পালিত হয় বোলপুর স্টেশনেও। সাময়িক ভাবে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy