Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিরোধী-প্ররোচনায় পা নয়, শিবপুরে আবেদন তৃণমূলের

শিবপুর মৌজায় জমি আন্দোলনের নামে বিরোধীদের ‘প্ররোচনা’য় পা না দিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করলেন তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতারা।

শিবপুর মাঠে সভায় বক্তব্য রাখছেন ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র।

শিবপুর মাঠে সভায় বক্তব্য রাখছেন ফিরহাদ হাকিম। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:০০
Share: Save:

শিবপুর মৌজায় জমি আন্দোলনের নামে বিরোধীদের ‘প্ররোচনা’য় পা না দিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনুরোধ করলেন তৃণমূলের মন্ত্রী-নেতারা। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের চেষ্টায় শিবপুর মৌজায় বিশ্ববিদ্যালয়, ‘আইটি হাব’, ‘থিম সিটি’ গড়ে উঠলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে বলেও আশ্বাস দিলেন। মঞ্চ থেকে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তৃণমূলের শীর্ষ নেতা সুব্রত বক্সির মুখে এই কথা শুনে খুশি জমিদাতাদের একটা বড় অংশ। তবে জমিদাতাদের অন্য একটি অংশ অবশ্য ওই জমিতে শিল্পের দাবিতে আন্দোলনের পথ থেকে সরে আসতে নারাজ।

বাম জমানায় ২০০১ সালে শিবপুর মৌজায় শিল্পের জন্য প্রায় তিনশো একর জমি অধিগৃহীত হয়। অধিগৃহীত জমিতে শিল্প, কর্ম সংস্থান, ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে এক সময় সরব হয়েছিল তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল। তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে ওই জমিতে শিল্পের দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন করেছেন স্থানীয় জমিমালিক এবং কৃষক ও বর্গাদারদের একাংশ। সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি তাঁদের নৈতিক সমর্থন জানিয়েছে।

তৃণমূল সূত্রের খবর, সম্প্রতি সাবস্টেশন গড়াকে নিয়ে জমি-আন্দোলন মাথা তোলে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। বহিরাগত বিরোধীদের ‘উস্কানিতে’ সেখানে পরিস্থিতি তেতে ওঠে বলে অনুমান তৃণমূলের অনেক নেতারই। সেই প্রেক্ষিতেই শনিবার দুপুরে শিবপুর মাঠের সভায় বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানান তৃণমূল নেতারা।

পুলিশের হিসেবে সভায় হাজির ছিলেন প্রায় ৪০ হাজার লোক। মঞ্চে ছিলেন রাজ্যের আরও দুই মন্ত্রী—আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় ও চন্দ্রনাথ সিংহ। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল, জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী এবং পাশের জেলা বর্ধমানের একাধিক বিধায়ক। ফিরহাদ বলেন, “মুর্শিদাবাদের এক নেতা নাটক করে, জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো হতে চাইছেন। অধীরবাবু (প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী) নাটক করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হওয়া যায় না।”

অধীরের পাল্টা জবাব, ‘‘নাটক ওঁরাই করেছেন। রাজনৈতিক নাটক করেছেন। ভোটের আগে এক কথা বলেছিলেন। এখন এক কথা বলছেন। স্থানীয় মানুষের কথা ভেবে ওখানে শিল্প হোক। কর্মসংস্থান হোক।’’ ফিরহাদ এবং সুব্রত বক্সি অবশ্য দাবি করেছেন, শিবপুরে ‘আইটি-হাব’, বিশ্ব বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে গেলে, সেখানে প্রযুক্তি এবং বৃত্তিমূলক শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কর্ম সংস্থানও হবে।

তৃণমূল নেতারা মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাম জমানায় বিঘা পিছু জমির দর দেওয়া হয়েছিল ৪৮ হাজার টাকা। তৃণমূল ক্ষমতায় এসে সেখানে ১,০৪৯ জন জমিদাতাকে চিহ্নিত করে, তাঁদের বকেয়া (বিঘা পিছু আরও ২০ হাজার টাকা) দিয়েছে। সে প্রক্রিয়া এখনও চলছে। ফলে, অসন্তোষের জায়গা থাকার কথা নয়। যদিও জমিদাতাদের মধ্যে অন্তত একশো জন তেমন মনে করেন না। জানাচ্ছেন, ওই জমিতে শিল্পের দাবিতে তাঁরা ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। শিল্প ছাড়া শিবপুরে উল্লেখযোগ্য কর্মসংস্থান হবে না বলেও তাঁদের ধারণা।

মঞ্চ থেকে বিরোধীদের আক্রমণ করলেও এ দিন শিবপুর নিয়ে একটি কথাও বলেননি অনুব্রত মণ্ডল। কেন? অনুব্রত পরে বলেন, ‘‘এখানে আমরা যা করছি, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েই করছি। আমাদের লক্ষ্য, মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্ন স্বার্থক করা। এর বেশি কিছু বলার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Firhad Hakim tmc Instigation Oppositions
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE