প্রতীকী ছবি।
সন্ধ্যার পর থেকেই দেখা মিলছিল না স্বামীর। খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে বাড়ি সংলগ্ন একটি পুকুরের পাড়ে তাঁকে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন বাড়ির লোকজন। আর সেই খবর পেয়েই গায়ে আগুন দিলে আত্মঘাতী হলেন স্ত্রীও।
মঙ্গলবার রাতে ইঁদপুরের ভেদুয়াশোল গ্রামের ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত দম্পতি হলেন আকুল দাস (৭২) ও পরিবালা দাস (৫৫)। বুধবার ওই দম্পতির দেহ ময়না-তদন্তের পরে পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আকুলবাবুর দুই ছেলে। গ্রামেই একটি গুমটি দোকান চালাতেন তিনি। এখন দুই ছেলে সেই দোকান দেখেন। আকুলবাবুর ছোট ছেলে সুমন্ত দাস এ দিন বাঁকুড়া মেডিক্যালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, “রাতে দাদা ও আমি দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরে জানতে পারি, বাবাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন আমরা দুই ভাই বাবার খোঁজ শুরু করি। বাড়ির পাশেই একটি পুকুর পাড়ে গিয়ে দেখি, বাবার অসাড় দেহ পড়ে রয়েছে।’’ তাঁরা দেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন।
সুমন্ত জানান, ঘটনাটি যখন তাঁরা পুলিশকে জানানোর জন্য তোড়জোড় শুরু করেছেন, ঠিক তখনই তাঁর মা পরিবালাদেবী একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। তারপরে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেন বলে তাঁদের দাবি। পরিবারের লোকজন যখন তাঁকে ওই ঘরের ভিতর থেকে উদ্ধার করেন, ততক্ষণে তিনি গুরুতর জখম। সেই অবস্থায় তাঁকে বাড়ি থেকে উদ্ধার করে বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান পরিজনেরা। তারপর হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন থাকার পরে বুধবার সকালে মৃত্যু হয় পরিবালাদেবীর। সুমন্তবাবুর দাবি, “মায়ের মানসিক সমস্যা ছিল। বাবার মৃত্যুর ঘটনা মেনে নিতে না পেরেই তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।’’
তবে আকুলবাবু মৃত্যু কী ভাবে হল, তা নিয়ে ধন্দ দানা বেঁধেছে। তদন্তকারী পুলিশ কর্মীদের অনুমান, অতিরিক্ত পরিমাণ ঘুমের বড়ি খেয়ে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন আকুলবাবু। পুলিশের দাবি, প্রথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন সকালে পরিবালাদেবীর সঙ্গে ঝগড়া হয় আকুলবাবুর। মানসিক অবসাদেই তিনি আত্মহত্যার করে থাকতে পারেন বলে অনুমান পুলিশের।
যদিও পুলিশের দাবি, মানতে চাননি সুমন্ত। তিনি বলেন, “বাড়িতে ঝগড়া হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। বাবার শরীরও অসুস্থ ছিল। ঘুমের বড়ি বাবা খেয়েছিলেন কি না তা আমরা নিশ্চিত নই।” পুলিশ জানিয়েছে, দু’টি পৃথক অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy