Advertisement
১১ মে ২০২৪

দক্ষিণের কড়চা

আমৃত্যু নগ্নপদ। হাঁটু পর্যন্ত ধুতি। বগলে ছাতা। কাঁধে সুতির চাদর। লম্বা ঝুলে পড়া গোঁফের উপর দিয়ে পুরু চশমা ভেদ করে অন্তর্ভেদী দৃষ্টি। তামাটে গৌরবর্ণের মানুষটির হাতে ‘বিদূষক,’ বোতল পুরাণ’ ও ‘জঙ্গিপুর সংবাদ’। ছড়া কেটে গান গেয়ে কলকাতার রাস্তায় পত্রিকা ফেরি করেন।

শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৪ ০০:০৭
Share: Save:

একশো পার

পণ্ডিত প্রেস

আমৃত্যু নগ্নপদ। হাঁটু পর্যন্ত ধুতি। বগলে ছাতা। কাঁধে সুতির চাদর। লম্বা ঝুলে পড়া গোঁফের উপর দিয়ে পুরু চশমা ভেদ করে অন্তর্ভেদী দৃষ্টি।

তামাটে গৌরবর্ণের মানুষটির হাতে ‘বিদূষক,’ বোতল পুরাণ’ ও ‘জঙ্গিপুর সংবাদ’। ছড়া কেটে গান গেয়ে কলকাতার রাস্তায় পত্রিকা ফেরি করেন। ‘কলকাতা যে কেবল ভুলে ভরা’ সেই মোক্ষম কথাটি হাসির গানের ছলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি।

রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বলতেন ‘আত্মঘাতী দেবশর্মা’, সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ‘বিদূষক’। যাঁর হাসিতে মেশানো ছিল শ্লেষ, কিন্তু তার মধ্যে ছিল না কোনও বিদূষণ। মণীশ ঘটক তো লিখেই দিয়েছিলেন ‘শুধু মাত্র যে তোমারে বিদূষক কয়, সে কভু পায়নি তোমার সত্য পরিচয়’।

তিনি ‘দাদাঠাকুর’ ওরফে শরচন্দ্র পণ্ডিত। মুর্শিদাবাদের সন্তান। তাঁর হাতে গড়া ‘জঙ্গিপুর সংবাদ’-এর বয়স এখন ১০১। রঘুনাথগঞ্জের মতো মফস্সল শহর থেকে ১০১ বছর ধরে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে ক্ষুদ্র পত্রিকা প্রকাশ করে যাওয়া বিরল বটে! প্রথম সংখ্যার প্রকাশকাল বাংলা ১৩২১ সনের ৫ ভাদ্র। ইংরেজি ১৯১৪ সাল। তার আগেই তৈরি হয় ‘পণ্ডিত প্রেস’। দাদাঠাকুর নিজেই বলতেন পত্রিকার এডিটর, প্রোপাইটার, বিজ্ঞাপন কালেক্টর, রিপোর্টার, রাইটার, কম্পোজিটর, ইঙ্কম্যান, প্রুফ রিডার এবং হকার, সবই তিনি একা নিজে।

বিদূষকের রসিকতা ছিল, “কেবল প্রেসম্যান আমি নই। সেটি ম্যান নয়, উওম্যান। অর্থাৎ আমার অর্ধাঙ্গিনী’। বলতেন, “যদি নিজে গ্রাহক হতে পারতাম, তাহলে কাগজ সেল্ফ সাপোর্টিং হত।” প্রেসের ভাল ও বড় যন্ত্র কিনতে কলকাতায় গিয়েছেন। তাঁর ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ এক সাহেব ধারে দামি যন্ত্র নিতে পীড়াপীড়ি করেন। সবিনয়ে তা প্রত্যাখান করে দাদাঠাকুর বলেন, “ক্ষমতার বাইরে যাওয়া আমার স্বভাব নয়। ঋণ গ্রহণ করাও আমার প্রকৃতিবিরুদ্ধ।”

এলাকার রাস্তাঘাট, সাঁকো, শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি জঙ্গিপুর সংবাদের লক্ষ্য ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে জনমত গঠনও। পত্রিকার শ্রীবৃদ্ধির জন্য লালাগোলার দানবীর মহারাজা যোগীন্দ্রনারায়ণ রায় নিঃশর্তে অর্থ দান করতে চাইলেন। দাদাঠাকুর বললেন, “জঙ্গিপুর মহকুমায় আপনি সবচেয়ে বড়লোক, তাই আপনিই আমার আদর্শ! আমার সংকল্প এক দিন লালগোলার মহারাজার মতো বড়লোক হব। কিন্তু আপনার মতো বড়লোক হব, আপনারই কাছে অর্থ সাহায্য নিয়ে? এতো হয় না মহারাজ!”

এই বুদ্ধিদীপ্ত ও আকর্ষণীয় জীবনকথাই এ বার ধরা পড়ছে যোজক-এর নতুন নাটক ‘দাদাঠাকুর’-এ। নামভূমিকায় রজত গঙ্গোপাধ্যায়, নির্দেশনায় দুলাল লাহিড়ী। কাল, ২১ অগস্ট, জঙ্গিপুর রবীন্দ্রভবনের মঞ্চে ফের জীবন্ত হয়ে উঠবেন, শাণিত ছড়া কাটবেন তিনি।

কিন্তু সে তো কেবল মঞ্চে? বাস্তবটা কী রকম? দাদাঠাকুরের মৃত্যুর পরে টানা ১৫ বছর ‘জঙ্গিপুর সংবাদ’ সম্পাদনা করেন তাঁর বড় ছেলে বিনয়কুমার পণ্ডিত। তাঁর মৃত্যুর পর নাতি অনুত্তম পণ্ডিত ৪০ বছর হাল ধরে আছেন পত্রিকার ও পণ্ডিত প্রেসের। অনুত্তমের আক্ষেপ, “সদ্য প্রকাশিত কোনও কাগজের জন্য সরকারি আনুকূল্য যতটা, ১০১ বছরের সংবাদপত্রের জন্যও তাই! একেই বোধহয় বলে, মুড়ি-মিছরির এক দর!”

বাঁ দিকের ছবিতে সে দিনের এবং এ দিনের জঙ্গিপুর সংবাদ, ডান দিকে, ‘দাদাঠাকুর’ নাটকের একটি মুহূর্ত।

বাঁকুড়া সন্ধান

ইসলাম হিন্দুস্তানে এসে পৌঁছনোর পরে সংঘর্ষ, সমন্বয় আর সহাবস্থানের অমোঘ নিয়মে কখন ধীরে-ধীরে বাংলাদেশের জনমানসে স্বতন্ত্র চেহারা পেয়ে গিয়েছে। বাঙালি হিন্দুর খাদ্যাভ্যাস, পরব, ক্রিয়া-অনুষ্ঠানের সঙ্গে ইসলামি আচারের মিশেলে তৈরি যৌথ সংস্কৃতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাহক হন হিন্দু সমাজের সেই অস্পৃশ্য ও নিম্নবিত্তেরা যাঁরা দুর্গতি থেকে নিষ্কৃতি পেতে নতুন ধর্মকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। এই ধর্মান্তরণ আর তার জেরে সংস্কৃতির মিশ্রণ কিন্তু সব জায়গায় একই ছাঁদে হয়নি। বরং অঞ্চলভেদে তাতে আঞ্চলিক বৈশিষ্ট্য চুঁইয়ে ঢুকেছে। বাঁকুড়ায় ইসলামের বিবর্তনের এমনই সব অনালোচিত অধ্যায় নিয়ে গবেষণা করছেন বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজ এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ইতিহাসের প্রাক্তন শিক্ষক, অশীতিপর রথীন্দ্রমোহন চৌধুরী। আগেই প্রকাশ পেয়েছে ‘বাঁকুড়াজনের ইতিহাস-সংস্কৃতি’, ‘নয়া বাঁকুড়ার গোড়াপত্তন ও বিকাশ’। এ বার আরও পূর্ণাঙ্গ করে বিষয়টি ধরার জন্য জেলার ইসলামি সংস্কৃতির প্রাচীন থেকে বর্তমান পর্যন্ত আলো ফেলতে চাইছেন ঐতিহাসিক নীহাররঞ্জন রায়ের ছাত্র। পির-ফকিরদের আস্তানা হিন্দু ও মুসলমানের যুগ্ম উপাসনাস্থল হিসেবে গৃহীত হল কেন? অথবা, খারেজি ধর্মীয় মাদ্রাসা শিক্ষার বিপুল আয়োজন সত্ত্বেও কী ভাবে বাঁকুড়ার মুসলিম সমাজের নতুন প্রজন্ম নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আগ্রহী হচ্ছে আধুনিক শিক্ষা ও পেশা গ্রহণে? এমন নানা প্রশ্নের উত্তর নিয়েই পশ্চিমরাঢ় ইতিহাস ও সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র, বাঁকুড়া থেকে সাত খণ্ডে প্রকাশিত হতে চলেছে ‘বাঁকুড়ার মুসলমান’।

সিনেমার খড়মাটি

“সিনেমা ক্রমশই সাহিত্যের অবলম্বন ছেড়ে নিজের স্বাধীন পথে গেছে। আর যতই সিনেমা স্বাধীন হয়েছে ততই সে সাহিত্যের কাছাকাছি জায়গা করে নিয়েছে।” ভার্জিনিয়া উলফের আশঙ্কার কথা উদ্ধৃত করে এই মন্তব্য চলচ্চিত্র চর্চাকার গাস্তঁ রোবের্জের। কিন্তু সিনেমা আর তার চিত্রনাট্য কি এক? সন্দেহ নেই, ছবির নির্যাস ধরা থাকে চিত্রনাট্যেই। কিন্তু তারও তো নানা রকমফের আছে। অভিনেতা চিত্রনাট্য তথা সংলাপ যে ভাবে পড়েন আর চিত্রগ্রাহক বা শব্দগ্রাহক সে ভাবে পড়েন কি? আবার শু্যটিংয়ের নানা বাঁকে চিত্রনাট্য যখন মূল থেকে সরে যায়, ছবির সম্পাদক তো সেই পাল্টে যাওয়া খসড়া থেকেই তাঁর কাজ শুরু করেন? সাধারণত যে ছাপা চিত্রনাট্যগুলি পাওয়া যায়, বিভিন্ন পত্রিকা বা বইয়ে সংকলিত হয় যেগুলি, তার একটা বড় অংশই পূর্ণাঙ্গ ছবিটি তৈরি হয়ে যাওয়ার পরে তা দেখে লেখা। ছাপার আখরে গাঁথা সেই ছবি কতটা সাহিত্যের নবধারা হয়ে উঠেছে, সেই আলোচনায় প্রায় সাড়ে চারশো পাতার বই চিত্রনাট্য/ সাহিত্যের নতুন ভুবন (পত্রলেখা) লিখে ফেলেছেন বিশ্বভারতীর বাংলা শিক্ষক, মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ নিবাসী মানবেন্দ্রনাথ সাহা। তাঁর যুক্তি বা বিশ্লেষণ নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকতে পারে, কিন্তু যত তথ্য, উদ্ধৃতি, চিত্রনাট্যের টুকরো তিনি জড়ো করেছেন, তা কাজে লাগার মতোই। রবিবার, ২৪ অগস্ট নন্দন ৩ প্রেক্ষাগৃহে বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হওয়ার কথা।

গানের ওপারে

রবীন্দ্রনাথের বিশ্বপরিচয়কে গানের ভিতর দিয়ে দেখা? সম্প্রতি এমন চেষ্টাই করলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। বাইশে শ্রাবণ উপলক্ষে লিপিকায় চিত্র-উপস্থাপনসহ বিশ্বপরিচয়-এর নানা অংশ ও তার বিশ্লেষণ পাঠ করলেন। সঙ্গে সঙ্গীতভবনের শিল্পীদের প্রাসঙ্গিক গান। রবীন্দ্রভবনের রবীন্দ্রচর্চা প্রকল্পের সংকলন রবীন্দ্রবীক্ষা-র সাম্প্রতিক সংখ্যায় বিশ্বভারতী-র অভিজ্ঞতা বলতে গিয়েও বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। রবীন্দ্রনাথকে বিচিত্র দিক দিয়ে দেখার ফসল ছড়িয়ে আছে এ বারে সংকলিত নিবন্ধগুলিতে। শ্যামলকান্তি চক্রবর্তী লিখেছেন সংগ্রহালয় ও রবীন্দ্রনাথ নিয়ে, গানের পাঠ নিয়ে আলোচনা করেছেন তপতী মুখোপাধ্যায় ও আলপনা রায়, রবীন্দ্রনৃত্য নিয়ে সুনীল কোঠারি, রবীন্দ্ররচনা চিত্রণে নন্দলাল বসুকে নিয়ে লিখেছেন আশিস পাঠক। পরবর্তী সংখ্যার পরিকল্পনায় আপাতত আছে রবীন্দ্রনাথ ও ঠাকুরবাড়ির স্মৃতিকথার নানা দিক, জানালেন রবীন্দ্রভবনের অধ্যক্ষ তথা পত্রিকার সম্পাদক তপতী মুখোপাধ্যায়।

পুরনো পাতা

সাদা গম্বুজ মাথায় মুঘল স্থাপত্যে নির্মিত বাড়িটির শ্বেত পাথরের মূর্তি দিয়ে সাজানো বারান্দায় হাঁটতে নামলেই পুরনো গন্ধটা আঁচ করা যায়। তার পর কোনও একটা ঘরে ঢুকে পড়তে পারলেই থরে থরে সাজানো বিপুল বইয়ের সম্ভারে মালুম হয় গ্রন্থাগারের বয়স শুধু তার চেহারাতে নয়, অভিজ্ঞতাতেও লেগে। আগামী ২৫ অগস্ট সন্ধেয় প্রায় ৫৬,৩৮০টি বইয়ের সম্ভার সিউড়ির বিবেকানন্দ গ্রন্থাগারের ১১৫ বছরের প্রতিষ্ঠা দিবস উদ্যাপন। ১৮৯৯ সাল থেকে এই যাত্রাপথ শুরু হয়েছিল হেতমপুরের রাজা রামরঞ্জন চক্রবর্তীর হাত ধরে। ‘ভারতবর্ষ’, তত্ত্ববোধিনী’র মতো দুষ্প্রাপ্য পত্রপত্রিকা থেকে ৭৫-৮০ বছর আগের লন্ডন থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন ইংরেজি বইও আছে এই গ্রন্থাগারের সংগ্রহে।

শ্রাবণে শামসুর

রাখালের বাঁশী কে আছেন?/ দয়া করে আকাশকে একটু বলেন,/ সে সামান্য উপরে উঠুক,/ আমি দাঁড়াতে পারছি না! শামসুর-কে মনে রেখে লিখেছেন হেলাল হাফিজ। ঠিক তার উল্টো পিঠে অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত লিখেছেন ‘বহুদিনকার বন্ধুকে যেই জড়িয়ে ধরেছিলাম/ উদাসী হাওয়ার মুকুল ঝরল রবীন্দ্রসংগীতে’। এ পার-ও পার জুড়ে ঝাঁক-ঝাঁক শাণিত, একাগ্র, ভবঘুরে পঙ্ক্তি আর অসম্ভব ঋজু একটি মনোভঙ্গী পিছনে ফেলে রেখে শামসুর রাহমান চলে গিয়েছেন অগস্টেই, আট বছর হল। এই শ্রাবণে তারই তর্পণ অনন্দা পত্রিকায়। শামসুরের কবিতা-ছড়া-সনেট নিয়ে চর্চা ছাড়াও রয়েছে নিশাত জাহান রানা বা মিলা মাহফুজার মতো স্বজনদের কলমে স্মৃতির আনাগোনা। একেবারে শেষে কবির জীবনপঞ্জি, গ্রন্থপঞ্জি ও চর্চাপঞ্জি খুবই খেটে করা। গোটা উপস্থাপনার জন্য সম্পাদক শ্রীপর্ণা রায় প্রশংসা দাবি করতেই পারেন।

চার্লি চার

তাঁকে দেখার কোনও শেষ নেই। টিভির পর্দা তাঁকে ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখায়। কিন্তু বড়পর্দায় তাঁকে দেখা অন্য মজা। ছোট-বড় সকলের জন্য সেই মজা নিয়ে বহরমপুর শহরে ফিরছেন চার্লি চ্যাপলিন। বহরমপুর ফিল্ম সোসাইটির ৫০ বছর পূর্তি উৎসবের অঙ্গ হিসেবে সংস্থার নিজস্ব প্রেক্ষাগৃহ ‘ঋত্বিক সদন’-এ আজ, বুধসন্ধ্যায় প্রদর্শিত হবে ‘দি গ্রেট ডিক্টেটর’। বৃহস্পতিবার ‘গোল্ড রাস’। রবিবার দেখানো হবে দু’টি ছবি ‘সার্কাস’ ও ‘মর্ডান টাইমস’। ইতিমধ্যেই শহরে বেশ সাড়া পড়েছে। হোক না পুরনো, চার্লি বলে কথা!

সরস্বতীর বরে

মাত্র এগারো বছর বয়সে নির্ধারিত শিল্পী না আসায় গুরুর নির্দেশে গাইতে উঠেছিলেন কীর্তনের আসরে। সেই থেকে টানা ছ’দশক গেয়ে চলেছেন তিনি। যাঁকে বাংলা কীর্তনের প্রাচীন ধারার শেষ উত্তরসূরি বলে মনে করেন অনেকেই।

বাংলাদেশের (তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান) কুষ্টিয়ায় হরিনারায়ণপুর গ্রামে ১৯৪৯ সালে জন্ম সরস্বতী দাসের। এক বছর বয়সে বাবা, কীর্তনিয়া রাধাকৃষ্ণ দাস এবং মা সুশীলাসুন্দরীর সঙ্গে নবদ্বীপে চলে আসেন। খুব ছোট বয়সে রাধাচরণ বাবাজির কাছে কীর্তন শেখা শুরু। পরে শেখেন কীর্তনাচার্য হরিদাস করের কাছে। ষোল বছর বয়স থেকে আকাশবাণীর, কলকাতা দূরদর্শন স্থাপিত হওয়ার পর থেকে টিভিরও নিয়মিত শিল্পী। গুরুর সঙ্গেই কীর্তনের স্বরলিপি এবং শ্রীখোলের তাললিপি করে দূরদর্শনে সম্প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও নিয়েছিলেন।

কীর্তন সরস্বতী, কীর্তন রসভারতী, গীতসুধা, কীর্তনলীলা সারিকা সরস্বতীর ঝুলিতে উপাধির শেষ নেই। কোনওটি মহানাম ব্রতব্রহ্মচারীর দেওয়া, কোনওটি বা নবদ্বীপ পুরাতত্ত্ব পরিষদের। রবীন্দ্রভারতী তাঁকে দিয়েছে ‘কীর্তনসম্রাজ্ঞী’ উপাধি। গত ২ অগস্ট রবীন্দ্রসদনে এক অনুষ্ঠানে মনসুর ফকির এবং সলাবত মাহাতোর সঙ্গে তাঁকেও সংবর্ধনা দেওয়া হল। তাঁর পা ছুঁয়ে গায়িকা শোভা মুদগল বললেন, “দুর্ভাগ্য এত দিন, এত বড় গুণী শিল্পীর গান শোনার সুযোগ আমার হয়নি।” প্রাচীন কীর্তনের ধারাটি রক্ষা করার জন্য নবদ্বীপে কীর্তন মহাবিদ্যালয় গড়ে তুলতে চান, তাই এখন অসম থেকে আন্দামান নিরলস ছুটে চলেছেন বছর পঁয়ষট্টির সরস্বতী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

south karcha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE