এক দিনমজুর যুবককে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। বুধবার রাতে ফালাকাটা থানায় ওই তৃণমূল নেতা শশীমোহন বর্মনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, মৃত যুবকের নাম রতন বণিক (২৮)।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ফালাকাটার ক্ষীরেরকোট গ্রামের বাসিন্দা ওই যুবক ভুটানে দিনমজুরি করতেন। সম্প্রতি গ্রামে ফেরেন তিনি। পড়শি এক বধূর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে বলে সোমবার রাতে ওই তৃণমূল নেতা অপবাদ দেওয়ায় রতন বিষ খান বলে অভিযোগ। মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
গোটা বিষয়টি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছে তৃণমূল। ওই অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবিতে বৃহস্পতিবার এলাকায় মিছিলও করে তাঁরা। ফালাকাটা থানার আইসি ধ্রুব প্রধান জানান, তৃণমূল নেতার নামে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্তের পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আইসির দাবি।
মৃত ওই যুবকের ভাই টোটন বণিকের দাবি ওই বধূর সঙ্গে তাঁর দাদার কোনও অবৈধ সম্পর্ক ছিল না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘মামলা প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিচ্ছেন পঞ্চায়েত সদস্য ও তৃণমূল নেতারা। তাতে গ্রামে থাকা দায় হয়ে পড়বে।’’ তিনি জানান, তাঁর দাদা গ্রামের একটি বাড়িতে যাতায়াত করতেন। কিন্তু ওই বাড়ির বধূর সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক ছিল না। তবুও অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য ওই মহিলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে, এমনটাই গ্রামে রটিয়ে দেবে বলে ভয় দেখিয়ে দাদার কাছ থেকে টাকা দাবি করে। মোবাইলও কেড়ে নেয়। সে সময়ে কথা কাটাকাটি হওয়ায় রতন বিষ খান বলে টোটনের অভিযোগ। তাঁদের দাবি, চিকিৎসাধীন রতন গোটা ঘটনা জানিয়েছেন তাঁদের।
জটেশ্বর দুই নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের ওই অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য শশীমোহনবাবু বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি পেশায় গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তার। আমার দোকানের পাশে ওই মহিলার বাড়ি। মহিলা ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে রতনের ঝগড়া হচ্ছিল। ওই মহিলার সঙ্গে রতনের সম্পর্ক ছিল বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বিবাদ চলার সময় গ্রামের অন্যদের সঙ্গে আমিও ঘটনাস্থলে গিয়ে ফের দোকানে ফিরে আসি। পরে শুনি ওই যুবক বিষ খেয়েছে।’’
তাঁর দাবি, ‘‘আমার সঙ্গে ওই যুবকের এক দুঃসম্পর্কের কাকার বিবাদ হয় কিছুদিন আগে। তিনি আরএসপি করেন। তিনি কারসাজি করে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। ওই পরিবারকে কোনও হুমকি দেওয়া হয় নি। গ্রামে শুধু মিছিল বের করা হয়েছে।’’ অভিযুক্ত দলের পঞ্চায়েত সদস্যের পাশে দাড়িয়েছেন ফালাকাটার বিধায়ক অনিল আধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ঘটনা নিয়ে খোঁজ নিয়েছি। ওই যুবক জনসমক্ষে বিষ খায়। পঞ্চায়েত কোনও প্ররোচনা দেয়নি। সদস্যের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy