রেল পরিষেবা বাড়ুক মালদহে
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের অন্তর্গত উত্তর মালদহ লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় রেল পরিষেবা বাড়ানো দরকার। কারণ মালদহ জেলার উত্তর অংশ বহু দিন ধরে বহু ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে। তাই বহু কাজে মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকার (হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল, মালতীপুর, রতুয়া বিধানসভা এলাকা) মানুষকে প্রায় মালদহে ছুটতে হয়। কিন্তু মালদহ সদর থেকে উত্তর অংশের সড়ক পথে দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার। অনেক ক্ষেত্রে এই দূরত্ব আরও অনেক বেশি। সেই জন্য সাধারণ মানুষকে নির্ভর করতে হয় রেল যোগাযোগের উপর।
কিন্তু স্বাধীনতার ছয় দশক পরেও রেল কর্তৃপক্ষ উত্তর মালদহ থেকে মালদহ টাউন স্টেশনে সকাল ৯টার আগে পৌঁছনোর কোনও ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেনি। পৌঁছানোর সঠিক সময় সকাল ৯টা ১০ থাকলেও বাস্তবে অন্য চিত্র। অথচ ১৫৬৪০ ডাউন পুরী গুয়াহাটি এক্সপ্রেস, ১৫৯৪২ ডাউন ঝাঁঝা-ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস কিংবা ডাউন কলকাতা-গুয়াহাটি ‘কলকাতা’ এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলি উত্তর মালদহের বুকের উপর দিয়ে সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছে যায়। আবার মালদহ টাউন স্টেশন থেকে বিকেল পাঁচটার পর উত্তর মালদহে আসার কোনও উপায় নেই কিংবা সকাল সাড়ে আটটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত উত্তর মালদহমুখী কোনও প্যাসেঞ্জার ট্রেন মালদহ স্টেশন থেকে ছাড়ে না। অথচ মালদহ স্টেশনে সকাল দশটা থেকে কম বেশি বিকেল চারটে পর্যন্ত বর্ধমান প্যাসেঞ্জার, সাহেবগঞ্জ প্যাসেঞ্জার, হাওড়া ফাস্ট প্যাসেঞ্জার কিংবা নবদ্বীপধাম এক্সপ্রেসের মতো ট্রেনগুলি দাঁড়িয়ে থাকে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল, মালদহ জেলায় বাস করেও মালদহের সমস্ত রেল পরিষেবা উত্তর মালদহবাসীরা উপভোগ করতে পারে না। যেমন ১৩০১২ ডাউন মালদা-হাওড়া ইন্টারসিটি এক্সপ্রেস (ভায়া কাটোয়া) কিংবা ১৩১৬১ ডাউন তেভাগা এক্সপ্রসের মতো ট্রনগুলিতে প্রত্যহ সকালে দক্ষিণ বঙ্গে যাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও উত্তর মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকা তার স্বাদ থেকে বঞ্চিত থাকে। তাই তীর্থের কাকের মতো বেলা ১১টা পর্যন্ত তাদের ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। দক্ষিণ বঙ্গে যাওয়ার প্রথম ট্রেন এটাই।
তাই এলাকার উন্নয়নের স্বার্থে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষর কাছে আবেদন, আরও বেশি প্যাসেঞ্জার ট্রেন দিন এবং এক্সপ্রেস ট্রেনের স্টপেজের ব্যবস্থা করুন। তবেই মালদহ শহর থেকে উত্তর মালদহের দূরত্ব ঘুচবে।
প্রদ্যুত্ দাস, উত্তর মালদহ (মালতীপুর), মালদহ।
উপেক্ষিত দঃ দিনাজপুর
সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে উন্নীত করার বিল পাশ হয়ে গেল। প্রতিবেশী জেলা হিসাবে দক্ষিণ দিনাজপুরবাসীরও এতে আনন্দ হবার কথা বইকী। কিন্তু কতগুলি প্রশ্ন উঁকি মারছে মনে। দক্ষিণ দিনাজপুর আর কত দিন শাসক দলের কাছে উপেক্ষিত থাকবে? ১৯৯২ সালের ১ এপ্রিল যে দিন পশ্চিম দিনাজপুর ভেঙে উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর নামে দুটি জেলার জন্ম হল, সে দিন থেকেই ভাগ্যদেবী যেন দক্ষিণ দিনাজপুরের ললাটে উপেক্ষিতর তিলক কেটে দিল। অথচ লক্ষ করলে দেখা যাবে শাসক দলের প্রতি এ জেলার আনুগত্য কোনও দিনই কম ছিল না। বাম আমলেও এ জেলার পাঁচটি বিধানসভা আসনের পাঁচটিই শাসক দল পেয়েছিল। শতকরা হিসেবে যা ১০০ শতাংশ। অথচ তারা এ জেলায় শিল্পস্থাপন তো দূরের কথা, একটি সরকারি স্কুল, সরকারি বি এড কলেজ, মেডিক্যাল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় করে উঠতে পারেনি। তখন জেলায় দু’জন মন্ত্রী ছিলেন। আবার ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলও জেলার ৬টি আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনে জয়লাভ করেছিল। শতকরা হিসেবে ৮০ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু তারাও দেখছি জেলার উন্নতির বিষয়ে উদাসীন। আজ উত্তরবঙ্গে যা কিছু উন্নতি হচ্ছে, তার মানচিত্রে এ জেলার নাম নেই। শিলিগুড়িতে মিনি মহাকরণ হচ্ছে। কোচবিহারে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে, মালদহ বা রায়গঞ্জেও বিশ্ববিদ্যালয় বা মেডিক্যাল কলেজ হচ্ছে। কিন্তু দক্ষিণ দিনাজপুরে কিছুই না। তা ছাড়া জেলায় বহু সরকারি কার্যালয় এখনও হয়ে ওঠেনি। দক্ষিণ দিনাজপুরের প্রতি কেন এমন বঞ্চনা, তা অবশ্যই আমাদের ভাবায়।
অনুন্নত জায়গাকে উন্নতির মাধ্যমেই সমৃদ্ধ করা যায়। এ জেলা এমনিতেই অনুন্নত। জেলায় শিল্প নেই। বৃহত্ কোনও প্রতিষ্ঠানও নেই যা জেলার গৌরব বৃদ্ধি করতে পারে। রেল বা বিমান যোগাযোগ বিশেষ ভাল নয়। কিন্তু উন্নয়নের মধ্য দিয়েই তো এ জেলাকে সমৃদ্ধ করা যেত। তৃণমূল সরকার আসার পরে শোনা গেল জেলায় একটি কৃষি মহাবিদ্যালয় হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত তার কোনও হদিশ পাওয়া গেল না।
সুদীপ কুমার দাস। বানিহারি, গঙ্গারামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy