সাংসদ হাত বাড়ালেও উন্নয়নে পিছিয়ে থাকায় প্রশ্নের মুখে বালুরঘাট পুরসভা শহর উন্নয়নে দলের সাংসদের সহায়তাকে কাজে লাগাতে পারছে না বলে অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভার বিরুদ্ধে। বিরোধীদের সমালোচনা তো বটেই এনিয়ে দলের অন্দরেও প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে পুরকর্তৃপক্ষকে। রাজ্যে বালুরঘাটের সাংসদ অর্পিতা ঘোষের সাংসদ কোটার বাৎসরিক ৫ কোটি টাকা উন্নয়ন প্রকল্পে খরচের সাফল্য পঞ্চায়েতস্তরে পৌঁছলেও কেন শহর এলাকা পিছিয়ে তা নিয়ে জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাংসদ অর্পিতাদেবীও উদ্বেগ চাপা থাকেনি। বালুরঘাটে পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রতি মাসের মনিটরিং বৈঠকে এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু কাজের অগ্রগতি হয়নি বলে অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন যাবত সাংসদ কোটার টাকায় বালুরঘাট শহরে হাইমাস্ট আলো, ত্রিফলা পথবাতি থেকে টয়লেট এবং রাস্তাঘাটের উন্নতির মতো নাগরিক পরিষেবার উন্নয়নে দ্রুত প্রকল্প জমা দিতে বলা হলেও পুরসভার তরফে তা জমা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। আগামী ৪ সেপ্টেম্বর ফের বালুরঘাটে আসবেন সাংসদ অর্পিতাদেবী। এবং দলের পুর প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকে তিনি কাজের অগ্রগতি জানতে চাইবেন। ফলে সোমবার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা উঠলে পুরকর্তৃপক্ষকে চিন্তিত দেখা যায়।
সাংসদ কোটার টাকায় উন্নয়ন কাজের প্রকল্পের সুপারিশ সাংসদ করেন। কিন্তু প্রকল্পের অনুমোদন থেকে রূপায়ণের যাবতীয় দায়িত্বের রাশ থাকে জেলাশাসকের উপর। জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘পুরসভা থেকে কোনও প্রকল্প তৈরি করে জমা দিলে সঙ্গে সঙ্গে তা সাংসদের সুপারিশের জন্য পাঠানো হয়। ফলে এ ক্ষেত্রে পুরসভার তরফে দ্রুত প্রকল্প রচনা করে জমা দিলে কাজ শুরু হতে বেশি সময় লাগার কথা নয়।’’ চলতি আর্থিক বছরে জেলায় সাংসদ কোটায় প্রাপ্ত প্রায় ৫ কোটি টাকার মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পে ৯৫ শতাংশ টাকা খরচ করে সদ্বব্যবহারপত্র দিল্লিতে পাঠানোয় আগামী ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরের সাংসদ কোটার প্রথম কিস্তির আড়াই কোটা টাকাও জেলায় ঢুকে গিয়েছে। যা অন্য অনেক জেলার সাংসদেরা পাননি বলে সরকারি সূত্রের খবর।
এদিন পুরসভার চেয়ারপার্সন চয়নিকা লাহা বলেন, ‘‘আত্রেয়ী সেতু ও খাঁড়ির বাঁধ এলাকায় শহরের প্রবীণ নাগরিকদের বসার জন্য ৪ লক্ষ টাকার প্রকল্প জমা দেওয়া হয়েছে। মোট ৩৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে শহরের ৭টি জায়গায় শৌচাগার তৈরির খসরা প্রকল্পও জমা দেওয়া হয়েছে।’’ তবে হাইমাস্ট আলো এবং ত্রিফলা আলো সহ শহরের সৌন্দর্য্যায়নের পুরসভা বেশ কিছু প্রকল্প এখনও তৈরি করে জমা দিয়ে উঠতে পারেনি বলে অভিযোগ। পার্কিং এর সমস্যা মেটাতেও কোনও প্রকল্প নিয়ে উঠতে পারেনি।
প্রায় দেড় বছরের উপর বালুরঘাট পুরসভার ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল। দলীয় সাংসদও তার কোটার টাকায় শহর উন্নয়নের জন্য হাত বাড়িয়ে আছেন। অথচ দলীয় কাউন্সিলারদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবই ওই কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল দেবজিত রুদ্র পুরসভার পূর্ত বিভাগের দায়িত্বে থাকাকালীন ৬ মাস আগে প্রকল্পগুলি তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু দলের কাউন্সিলারেরা তার বিরুদ্ধে সম্প্রতি রাস্তা সংস্কারে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ তোলায় তিনি গত একমাস থেকে পূর্ত দফতরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে চেয়ারপার্সনকে চিঠি দিয়ে বসে আছেন বলে অভিযোগ। দেবজিতবাবু অবশ্য শারীরিক অসুস্থতার কারণে ওই দায়িত্ব থেকে সরে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
তবে চেয়ারপার্সন চয়নিকাদেবী সমস্যর কথা স্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য ‘‘পূর্ত বিভাগের তরফে প্রকল্পগুলি তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। ওই কারণে প্রকল্প তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে। তবে আমরা সমস্যা কাটিয়ে প্রকল্প রচনার উদ্যোগ নিয়েছি।’’ পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীল বলেন, ‘‘শহরের কয়েকটি এলাকায় সিমেন্টের ঢালাই রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাংসদ কোটার টাকায় শহরের সৌন্দর্য্যায়নের জন্যও খসরা প্রকল্প তৈরি করতে বিভাগীয় পুর অফিসারদের বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy