শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন পর্ষদের (এসজেডিএ) আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনায় বরাত পাওয়া একটি সংস্থার প্রায় ১৭ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই দুর্নীতি মামলায় এই প্রথম কোনও সংস্থার টাকা বাজেয়াপ্ত করল ইডি।
বুধবার ইডি-র তদন্তকারীদের একাংশ জানান, এসজেডিএ-র তরফে ওই বেসরকারি সংস্থাকে তিনটি শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি নির্মাণ, মহানন্দা অ্যাকশন প্ল্যানে নিকাশি তৈরি, নদী বাঁধ ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সংস্কারের বরাত দেওয়া হয়। ওই সমস্ত প্রকল্পে প্রায় ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। অভিযোগ, তার মধ্যে পঞ্চাশ শতাংশ টাকা ওই সংস্থাকে দিয়েও দেওয়া হয়, অথচ কোনও কাজই হয়নি। এমন অভিযোগের তদন্তে নেমে ওই সংস্থার আয়-ব্যয় ও সম্পত্তির খোঁজ নিতে শুরু করেন তদন্তকারীরা। ওই বেসরকারি সংস্থার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি মালিক, কর্মচারী থেকে তাঁদের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ঠিকাদার এবং তাঁদের আত্মীয়দের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিছু টাকার খোঁজ মেলে। সব মিলিয়ে তার পরিমাণ প্রায় ১৭ কোটি ৮৯ লক্ষ টাকা। তবে বাকি টাকার এখনও খোঁজ মেলেনি।
দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর এসজেডিএ-র তৎকালীন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্যকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ২০১৩ সালে ১৬ মে এসজেডিএ-র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরদ দ্বিবেদী প্রধাননগর থানায় আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ করেন দফতরের ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদার সংস্থার বিরুদ্ধে। পরে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো, ই-টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জাল নথি তৈরি করে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়া নিয়ে সব মিলিয়ে ৮টি অভিযোগ করা হয়েছিল। পুলিশ এসজেডিএ-র তিন বাস্তুকার মৃগাঙ্কমৌলি সরকার, সপ্তর্ষি পাল এবং প্রবীণ কুমারকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতার করা হয় কলকাতার মূল ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার অজিত বন্দ্যোপাধ্যায়, তাঁর ছেলে দেবব্রত, শিলিগুড়ির একাধিক ঠিকাদার সংস্থার কর্ণধার সুব্রত দত্ত, শঙ্কর পাল-সহ মোট ১৩ জনকে। জেরা করা হয় রুদ্রনাথবাবুকে। এসজেডিএ বোর্ডের সদস্য তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মা, তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার তৎকালীন সভাপতি চন্দন ভৌমিক, কংগ্রেস বিধায়ক শঙ্কর মালাকারকেও জেরার মুখে পড়তে হয়। এসজেডিএ-র প্রাক্তন সিইও গোদালাকিরণ কুমার তখন মালদহের জেলাশাসক ছিলেন। তাঁকেও একাধিকবার জেরা করা হয়। পরে জেরা করার সময় তাঁকে গ্রেফতার করা হলে ওই ঘটনার জেরে রাতারাতি শিলিগুড়ির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামনকে বদলি করে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর কয়েক মাসের মধ্যেই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডি-কে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু করে ইডি-ও। সিআইডি-র তরফেও তাদের নথিপত্র দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy