Advertisement
১৯ মে ২০২৪

কলেজ ক্যান্টিন ভাঙচুর, নালিশ

বকেয়া টাকা চাওয়ায় কলেজ ক্যান্টিনে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল ছাত্রদের একাংশের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতের ওই ঘটনার পরে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওই ক্যান্টিনের মালিক পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন।

মুখে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যকর্তার। —নিজস্ব চিত্র।

মুখে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয় স্বাস্থ্যকর্তার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৪ ০১:২৩
Share: Save:

বকেয়া টাকা চাওয়ায় কলেজ ক্যান্টিনে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল ছাত্রদের একাংশের বিরুদ্ধে। সোমবার রাতের ওই ঘটনার পরে জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ওই ক্যান্টিনের মালিক পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ছাত্র সংসদের কর্তারা ভাঙচুরের কথা স্বীকার করলেও তাঁদের দাবি, বাইরের কেউ ঘটনার সঙ্গে জড়িত। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, “ক্যান্টিনটি কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে। তাই অভিযোগকারীকে বলেছি কলেজ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাতে।”

ক্যান্টিনের মালিক সমরনাথ দাস জানান, প্রতিদিনের মতো সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ তিনি ক্যান্টিন বন্ধ করে বাড়িতে চলে যান। মঙ্গলবার সকালে ফিরে দেখেন ঠান্ডা পানীয়ের কার্টুন মেঝেতে পড়ে। মদ ও বিয়ারের বোতল বাইরে থেকে এনে ভেঙে গোটা ঘরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই ক্যান্টিনের সামনে গ্রিল দিয়ে ঘেরা থাকলেও কোনও পাল্লা নেই। মালিকের অভিযোগ, রাতে দুষ্কৃতীরা গাছের ডাল ভেঙে, বাঁশ এনে গ্রিলের ফাঁকা দিয়ে ঢুকিয়ে খুঁচিয়ে সমস্ত সামগ্রী মেঝেতে ফেলে গুঁড়িয়ে দেয়। দরজা ভেঙে ভিতরেও ঢোকার চেষ্টা করেছিল তারা। তাঁর দাবি, বাঁশ দিয়ে ক্যাশবাক্স টেনে নিয়ে ছ’হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। রাতে কলেজ চত্বরে যে পাহারাদারেরা থাকেন তাঁরা কেউ ওই ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেনি। ক্যান্টিন মালিক সমরনাথ দাস বলেন, “৪২ বছর থেকে ক্যান্টিন চালাচ্ছি। আগে কোনদিন এমন ঘটনা ঘটেনি। শুক্রবার বকেয়া টাকা চেয়েছিলাম। শুনেছি, ওই কারণে চতুর্থ বর্ষের কিছু ছাত্র ভাঙচুর চালায়। ঘটনার কথা পুলিশকে জানিয়েছি। অধ্যক্ষ নেই। তিনি এলে তাঁকেও জানাব।” ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের অধ্যক্ষ জ্যোতির্ময় ঝম্পটি অবশ্য দাবি করেন, গোটা ঘটনাই গুজব। তিনি বলেন, “আমি বাইরে আছি। তবু খবর পেয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি ওই ধরনের ঘটনাই ঘটেনি। মনে হচ্ছে কেউ ওই কথা হাওয়ায় ভাসিয়েছে।”

কলেজের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক শুভাশিস ঘোষ জানান, ক্যান্টিনের পরিস্থিতি তিনি গিয়ে দেখেছেন। তাঁর কথায়, “খুব খারাপ লাগছে। ওখানে আমি নিজেও খাওয়া দাওয়া করি। মনে হচ্ছে বাইরের কেউ ঘটনাটি করেছে।” কলেজের শিক্ষকদের অনেকেই ক্যান্টিনের পরিস্থিতি দেখে অবাক হয়েছেন। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার চতুর্থ বর্ষের শেষ পরীক্ষা ছিল। ক্যান্টিন মালিক জানান, পরীক্ষা শেষে যে ছাত্ররা বাড়িতে ফিরে যান, তাঁদের অনেকে ক্যান্টিনে ধারে খাওয়াদাওয়া করেন। ওঁরা চলে যাওয়ার আগে টাকা দিয়ে যান। কলেজ ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে রাতে ব্যান্ড বাজিয়ে আনন্দ করেন। এভাবেই বছরের পর বছর চলছে। তিনি বলেন, “এবার অন্তত ২২ জন ছাত্রর কাছে ২৫ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছিল। শুক্রবার ছেলেদের কাছে বকেয়া টাকা চাই। সোমবার ওঁদের কেউ খেতে আসেনি। রাতে ফুর্তি করে ওদেরই কয়েকজন ক্যান্টিনে ভাঙচুর চালায় বলে শুনেছি। পুলিশকে সমস্ত বিষয় খুলে বলেছি।” যদিও কলেজ সংসদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “এ ভাবে ভাঙচুর চালানোর সাহস কলেজের ছেলেদের হবে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE