তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভায় ঝাড়ুদার নিয়োগে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে, তদন্তের দাবিতে সরব হল ফরওয়ার্ড ব্লক। গত বৃহস্পতিবার পুরসভা ১৯ জনকে ঝাড়ুদার পদে নিয়োগ পত্র দেয়। অভিযোগ, ওই তালিকায় মাস ছয়েক আগে তৃণমূলে যোগ দেওয়া দুই তৃণমূল কাউন্সিলের স্ত্রী এবং এক কাউন্সিলরের ছেলের নাম রয়েছে। তাই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে ফরওয়ার্ড ব্লক। শনিবার কোচবিহারের সুকান্তমঞ্চে নাগরিক কনভেনশনে যোগ দিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সম্পাদক তথা বিধায়ক উদয়ন গুহ। তদন্তের দাবিতে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়ার এবং অনশনে বসারও হুমকিও দিয়েছেন বাম নেতারা।
এ দিন উদয়নবাবু বলেন, “পুরসভায় কর্মী নিয়োগ নিয়ে আমরা তদন্ত চাই। নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যথাযথ তদন্ত হলেই, প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।” পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দ সাহা জানান, বাম নেতৃত্ব বৈঠকে বসে অবৈধ নিয়োগ নিয়ে কী ধরণের আন্দোলন হবে তার কর্মসূচি চূড়ান্ত করবে।
তৃণমূলের তরফে অবশ্য নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনও অস্বচ্ছতা নেই বলে দাবি করা হয়েছে। পুরসভার চেয় ারম্যান দীপক ভট্টাচার্য বলেন, “সদ্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিয়েছি। নিয়োগ প্রক্রিয়া আগে থেকেই চলছিল। সেই প্রক্রিয়া অনুযায়ী নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবেই হয়েছে। এর থেকে বেশি কিছু বলতে পারব না।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, পুরসভায় নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ মিথ্যে। তাঁর কথায়, “ওই প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে হয়েছে বলে জানি।”
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে পুরসভায় বেশ কিছু স্থায়ী পদের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। পিয়ন, ঝাড়ুদার, মজদুর, গাড়ি চালক পদে মোট ৮৯ জন কর্মী নেওয়ার কথা জানানো হয়। রাজ্য সরকারের অনুমোদন ক্রমে গত বৃহস্পতিবার প্রথম দফায় ৪৬ জনকে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি ঝাড়ুদার পদ রয়েছে। ওই পদেই ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর স্বপন চন্দ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কমল রায়ের স্ত্রী, এবং ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সন্ধ্যা দাসের ছেলে ইমন দাসের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ। মাস ছয়েক আগে স্বপনবাবু কংগ্রেস ছেড়ে এবং অন্য দুই কাউন্সিলর ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন।
ফরওয়ার্ড ব্লকের অভিযোগ চাকরির টোপ দিয়েই তাঁদের দলবদল করানো হয়েছিল। কাউন্সিলর স্বপনবাবু ও কমলবাবুর দাবি, “ভিত্তিহীন অভিযোগ। যখন নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছিল, তখন আমরা দল ছাড়িনি। আর কাউন্সিলরের পরিবারের কেউ কি চাকরি পেতে পারে না?” কাউন্সিলর সন্ধ্যা দেবী বলেন, “কষ্ট করে সংসার চলে। স্বামী শয্যাশায়ী। অনেক কষ্ট করে ছেলে তফশিলি জাতি কোঠায় চাকরি পেয়েছে। এখন এ সব অভিযোগ ঠিক নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy