Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কৃষ্ণা নবমীতে শুরু রাজবাড়ির পুজো

তিন দশকের ঐতিহ্য মেনে এ দিন বুধবার থেকে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুর চন্ডীমণ্ডপে। প্রতি বছরই কৃষ্ণানবমী তিথিতে পুজো শুরু হয় চাঁচল রাজবাড়ির পুজোর। চাঁচল থেকে এক কিলোমিটার দূরে পাহাড়পুরের এই পুজোই রাজবাড়ির পুজো বলে পরিচিত।

বুধবার পাহাড়পুরে চণ্ডীমণ্ডপে শুরু হল পুজো। নিজস্ব চিত্র।

বুধবার পাহাড়পুরে চণ্ডীমণ্ডপে শুরু হল পুজো। নিজস্ব চিত্র।

বাপি মজুমদার
চাঁচল শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:১৬
Share: Save:

তিন দশকের ঐতিহ্য মেনে এ দিন বুধবার থেকে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল মালদহের চাঁচলের পাহাড়পুর চন্ডীমণ্ডপে। প্রতি বছরই কৃষ্ণানবমী তিথিতে পুজো শুরু হয় চাঁচল রাজবাড়ির পুজোর। চাঁচল থেকে এক কিলোমিটার দূরে পাহাড়পুরের এই পুজোই রাজবাড়ির পুজো বলে পরিচিত। এ দিন সকালে পুরোহিত জয়নারায়ণ মজুমদার রীতি মেনে ঘটে জল ভরে পুজো শুরু করেছেন। ষষ্ঠীর দিন সন্ধ্যায় দেবী মূর্তি নিয়ে আসা হয় চন্ডীমণ্ডপে। ততদিন পর্যন্ত নিয়মিত ঘটে পুজো হয়।

একসময়ে রাজবাড়ির পুজোয় সামিল হতো আশেপাশের সব গ্রাম। জাঁকজমকে এলাকায় সাড়া পড়ে যেত। এখন রাজা নেই। বিক্রি হয়ে গিয়েছে রাজবাড়িও। পুজো পরিচালনা করে ট্রাস্টি বোর্ড। এবার পুজোর বাজেট কিছুটা বেড়েছে। ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যরা জানালেন, পুজোর বাজেট ৯ হাজার টাকা। বাজেট কম হলেও, পুজোর ঐতিহ্যে কোনও কাটছাঁট করা হয়নি বলে ট্রাস্টি বোর্ডের তরফে দাবি করা হয়েছে।

ট্রাস্টি বোর্ডের স্থানীয় পর্যবেক্ষক পিনাকীজয় ভট্টাচার্য বলেন, “শুধু মাত্র বাজেটের বরাদ্দে পুজো সম্ভব নয়। কিন্তু প্রতিবছর স্থানীয় বাসিন্দারা সাহায্য করেন। আলোকসজ্জার ব্যবস্থাও করেন তাঁরা।”

রাজবাড়ির পুজো হয় পাহাড়পুরে স্থায়ী চন্ডীমণ্ডপে। চন্ডীমন্ডপে রয়েছে বড় তামার ঘট। কলসিতে করে জল নিয়ে এসে ঘট ভরে পুজো শুরু হয়। তারপর থেকে প্রতিদিনই পুজোর সঙ্গে সন্ধ্যায় চন্ডীপাঠ হয়। দশমীর সন্ধ্যায় দেবী বিসর্জন পর্যন্ত প্রতিদিনই চন্ডীপাঠ হয়। দেবী এখানে চতুর্ভুজা সিংহবাহিনী। রাজবাড়ির পুজো বলে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে এই পুজোকে কেন্দ্র করে বাড়তি আবেগ রয়েছে। সেই সঙ্গে এলাকায় প্রচলিত বিশ্বাস, পাহাড়পুর চন্ডীমণ্ডপের দেবী এলাকাকে সুরক্ষিত রেখেছেন। আবেগ আর বিশ্বাসে ভর করেই পুজোর দিনগুলোতে একবারের জন্য হলেও পাহাড়পুর চন্ডীমণ্ডপে হাজির হন চাঁচলের বাসিন্দারা।

৩০০ বছর আগে এই পুজো শুরু হয়েছিল হরিশ্চন্দ্রপুরের সেকসাতন গ্রামে। পরে এই পুজো পাহাড়পুরে চলে আসে। চন্ডীমন্ডপের উল্টোদিকে সতীঘাট। শোনা যায়, রাজ পরিবারের এক মহিলা সেখানে স্বামীর চিতায় সহমরণে গিয়েছিলেন। এরপরে নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়ে রাজার পূর্ব পুরুষরা সতীঘাট থেকে অষ্টধাতুর তৈরি দেবী প্রতিমা উদ্ধার করেন। রাজবাড়ি লাগোয়া ঠাকুরবাড়িতে সেই মূর্তি রাখা হয়। পুরনো প্রথা মেনে সপ্তমীর দিন ভোরে ঠাকুরবাড়ি থেকে অষ্টধাতুর ওই প্রতিমা শোভাযাত্রা করে নিয়ে যাওয়া হয় পাহাড়পুরের চন্ডীমণ্ডপে। বসানো হয় মৃন্ময়ী দেবী প্রতিমার পাশে। প্রথা মেনে অষ্টমীর দিন কুমারী পুজোও হয়। ওই দিন ভিড় উপচে পড়ে চন্ডীমণ্ডপে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chanchal paharpur rajbari pujo durga puja
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE