Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

গজল-কাবাবের যুগলবন্দি, থাকছে বাঙালি থালিও

পুজোর সময় সর্ষে ইলিশ, ভেটকি পাতুরির সঙ্গে হাতছানি রয়েছে রকমারি কাবাবেরও। কোথাও শুরুতে লুচির সঙ্গে ধনেপাতা আর কাঁচালঙ্কা ছড়ানো ছোলার ডাল, কোথাও কমলালেবু, আনারসের মকটেল।

বিধান রোডের একটি হোটেলে বাঙালি থালি।

বিধান রোডের একটি হোটেলে বাঙালি থালি।

অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩৭
Share: Save:

পুজোর সময় সর্ষে ইলিশ, ভেটকি পাতুরির সঙ্গে হাতছানি রয়েছে রকমারি কাবাবেরও। কোথাও শুরুতে লুচির সঙ্গে ধনেপাতা আর কাঁচালঙ্কা ছড়ানো ছোলার ডাল, কোথাও কমলালেবু, আনারসের মকটেল। পাত পেড়ে বাঙালি পদ পরিবেশনের আয়োজন বা বাহারি নরম আলো ছড়ানো রেস্তোরায় উত্তর ভারতীয় আমিষ, নিরামিষ কাবাবের আয়োজন।

পানিট্যাঙ্কি মোড় লাগোয়া বিধান রোডের একটি হোটেল কর্তৃপক্ষ পুজোর ক’দিনের জন্য তাঁদের রেস্তোরার সম্প্রসারণ করে ফেলেছে। নামের ওই রেস্তোরাঁর পাশেই বাতানুকূল হলে পাতা হয়েছে চেয়ার-টেবিল। পুজোর ক’দিন ভিড় সামলানোর ব্যবস্থা। পুজোর জন্য নতুন মেনুকার্ডও ছাপিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আয়োজনের থিম-ই হল সাবেকি বাঙালিয়ানা। পাওয়া যাবে ‘বাঙালি থালি’। মঙ্গলবার দুপুরে রেস্তোরা কর্তৃপক্ষ পুজোর মেনুর একটি ‘মহড়া’ও সেরে রাখল। টেবিলে রাখা হল কাঁসার থালায় সাজানো নানা পদ। বাসমতি চালের ভাত থালার একপাশে গোল করে সাজানো। তার পাশে হলুদ রঙের পোলাও। পোলাওয়ের ভিতর থেকে মাথাচাড়া দিচ্ছে কাজু-কিসমিসেরা। লম্বালম্বি করে রাখা বেগুন ভাজা। দু’টি ফুলকো লুচি অবশ্য থালায় জায়গা পায়নি, পাশে আরেকটি প্লেটে রাখা হয়েছে। ছোলার ডাল, পটল ভাজা এবং পাপড়ও রয়েছে থালিতে। সঙ্গে তিনরকমের মাছের পদ। সর্ষে ইলিশ, ভেটকি পাতুড়ি আর চিতলের কালিয়া। বাঙালি মেনুতে মাছের আধিপত্য থাকলেও, বাদ যায়নি মাংসও। থাকবে পাঁঠার মাংসের কষা। শেষ পাতে চাটনি, মিষ্টি। রেস্তোরাঁর কর্ণধার বাবলা ঘোষ জানালেন, ‘‘এ ছাড়াও চিতল মাছের মুইঠ্যা, চিংড়ি, পমফ্রেট তন্দুরিও পাওয়া যাবে। পুজোর জন্য একেবারে সাবেকি বাঙালি পদের ওপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। তবে সঙ্গে বিরিয়ানি-সহ অন্য পদ তো রয়েছে। ’’


সেবক রোডের রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন ধরনের কাবাব।

কাবাবের সঙ্গে গজলকে মিশিয়ে দিয়েছে সেবক রোডের একটি রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ। পুজোর প্রতিদিন সন্ধে সাড়ে সাতটা থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত গজলের আসর চলবে রেস্তোরাঁয়। সুরের সঙ্গে মিশে যাবে কাবাবের উষ্ণ সুবাসও। সেখানে রয়েছে পানশালাও। কর্তৃপক্ষ জানান, পুজোর বিশেষ মেনু পাঁচ ধরনের কাবাব। আদা-রসুনের সঙ্গে কাজু বাদাম বাটা মাখিয়ে তৈরি বয়েছে মুর্গ সুনেহারা কাবাব। হালকা খয়েরি রঙের এই কাবাব মুখে দিলেই একইসঙ্গে হালকা মিষ্টি ও হালকা অম্ল মিশ্রিত স্বাদ ছড়িয়ে যাবে। পালং ও মেথি মিশিয়ে মুর্গ চাকোরি কাবাবের রং সবুজ। চিকেনের সঙ্গে থাকছে মাছের কাবাবও। বাসা মাছের কাবাবের উপরে চামচ রাখলেই কাবাব কেটে বসতে থাকবে সেই চামচ। ফিশ মালাই টিক্কা এতটাই নরম।

রয়েছে নিরামিষ কাবাবও। পনির মখমলি শিক কাবাবে কাজু, কিশমিসের সঙ্গে আনারদানাও মেশানো হচ্ছে, মেথি দিয়েই পনিরের আরও একটি কাবাবের পদ পাওয়া যাবে এই রেস্তোরাঁয়া। রেস্তোরার ম্যানেজার অমর সাহু বলেন, ‘‘গজল আর কাবাবের একটা যুগলবন্দি রয়েছে। এবার পুজোয় শিলিগুড়ির বাসিন্দাদের সেই যুগলবন্দি উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।’’

পুজোয় চাউমিনের ঢালাও আয়োজন করা হয়েছে হিলকার্ট রোডের একটি চিনা খাবারের রেস্তোরায়। চিকেন চাউমিন-ই রয়েছে তিন রকম। সঙ্গে রয়েছে চিংড়ির চাউমিনও। চিকেনের দশটি পদের মধ্যে পুজোর জন্য বিশেষ ভাবে প্যাকেজিং করা হয়েছে সেজওয়ান চিকেন। বরাবরই স্যুপের আয়োজনের জন্য ভিড় টানে এই রেস্তোরা। কর্তৃপক্ষ জানালেন, চিকেন এবং ক্রিম দিয়ে পুজোর সময়ে স্যুপের স্বাদেও বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা চলছে। বর্ধমান রোড, বিধান রোডের বিরিয়ানির জন্য পরিচিত দু’টি রেস্তোরাতেও থাকছে নানা আয়োজন। সেবক রোডের একটি শপিং মলের ফুড কোর্টে থাকছে পাঞ্জাবি খানা। মাটিগাড়ার শপিং মলের একটি রেস্তোরায় এ বারের বিশেষত্ব কন্টিনেন্টাল। সব মিলিয়ে পুজোর শিলিগুড়ির মেনুতে যেন গোটা দেশের স্বাদ উঠে এসেছে।

ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE