ভোটের ফল ঘোষণার দিন যাতে বড় কোনও গণ্ডগোলের ঘটনা না ঘটে সেদিকে নজর রেখে নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। আজ, মঙ্গলবার কোচবিহার জেলার চার পুরসভা কোচবিহার সদর, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও মাথাভাঙা পুরসভার ভোট গণনা। তা নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই গণনাকেন্দ্রগুলির সামনে সশস্ত্র পুলিশ রাখার পাশাপাশি আশেপাশের এলাকাতেও টহলদারি চালাবে পুলিশ।
নিরাপত্তার খাতিরে কোচবিহারে সশস্ত্র পুলিশের সঙ্গে ইএফআর এবং র্যাফও মোতায়েন করা হয়েছে। সশস্ত্র মহিলা পুলিশের একটি দলও নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব বলেন, “এখন পর্যন্ত কোথাও কোনও গণ্ডগোল হয়নি। আমরা পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। কেউ অশান্তি করার চেষ্টা হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কোচবিহার সদর মহকুমাশাসক বিকাশ সাহা বলেন, “শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট হয়েছে। গণনা পর্বও শান্তিপূর্ণ হবে বলে আশা করছি।”
ভোট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয় কোচবিহারে।
শাসক দল তৃণমূলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে সরব হন বিরোধীরা। তুফানগঞ্জ এবং দিনহাটায় বিরোধী দলের কর্মীদের মারধরের ঘটনাও ঘটে। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ প্রশাসনকে ব্যবহার করে নির্বাচনের হুমকি দেন বলেও অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে চাপে পড়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসন।
ভোটের দিন বড় কোনও গণ্ডগোলের ঘটনা না ঘটলেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরিকল্পিত সন্ত্রাসের অভিযোগ ওঠে। বিরোধী দলের এজেন্টকে বের করে দেওয়া, ক্যাম্প অফিস ভেঙে দেওয়া, বুথ জ্যামের মতো অভিযোগ ওঠে। ভোটের পরেও গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থমথমে। চার পুরসভার মধ্যে কোচবিহার সদর দখলে ছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের। বাকি তিনটি পুরসভা দিনহাটা, মাথাভাঙা, তুফানগঞ্জ ছিল বামেদের দখলে। এবারে কোচবিহার পুরসভা দখলে আনতে যেমন মরিয়া হয়ে উঠেছে বামেরা সেরকমই বামেদের হাত থেকে তিন পুরসভা ছিনিয়ে নিতে সক্রিয় হয়ে ওঠে তৃণমূল। তা নিয়েই উত্তেজনা শুরু হয়।
বাম নেতা তথা ফরওয়ার্ড ব্লকের কোচবিহার জেলা সম্পাদক উদয়ন গুহ বলেন, “তৃণমূল সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা করেছিল। পুলিশ-প্রশাসন সদর্থক ভূমিকা নেওয়ায় তা তারা করতে পারেনি। আশা করছি গণনার দিনও একই ভূমিকা থাকবে তাঁদের। মানুষ ভোট দিতে পেরেছে। তাঁদের ভোটের জয় নির্ধারিত হবে।”
বিজেপির কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিখিল রঞ্জন দে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে নিরপেক্ষ ভূমিকা বজায় রাখার আবেদন জানান। তিনি বলেন, “ভোটের দিন পুলিশ-প্রশাসনের যা ভূমিকা ছিল গণনার দিনও তেমন থাকা ঊচিত।” তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, কোথাও কোনও গণ্ডগোলের পরিস্থিতি নেই। দলের জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “মনগড়া কিছু কাহিনী বাজারে ছেড়ে বিরোধীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। কোনও সন্ত্রাস যে নেই তা ভোটের দিন প্রমাণিত হয়েছে। এর পরেও তাঁদের আর কথা বলা মানায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy