Advertisement
১০ মে ২০২৪

ঠিকাদারের বাড়ি লক্ষ করে গুলি

ঠিকাদারের বাড়ি লক্ষ করে গুলি ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল ডুয়ার্সের বীরপাড়া থানা এলাকার রামঝোরা চা বাগানে। বোমার স্‌প্লিনটারের আঘাতে জখম হয়েছেন ওই পরিবারের এক সদস্য। ওই যুবককে প্রথমে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বীরপাড়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৩৪
Share: Save:

ঠিকাদারের বাড়ি লক্ষ করে গুলি ও বোমা ছোড়ার অভিযোগ উঠল ডুয়ার্সের বীরপাড়া থানা এলাকার রামঝোরা চা বাগানে। বোমার স্‌প্লিনটারের আঘাতে জখম হয়েছেন ওই পরিবারের এক সদস্য। ওই যুবককে প্রথমে বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। এখানেই চিকিৎসা চলছে তার। বুধবার গভীর রাতের ওই ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় আতঙ্ক
সৃষ্টি হয়েছে।

গত আঠারো অক্টোবর রামঝোরা বাগানে গুলি করে,কুপিয়ে খুন করা হয় দলমোড় এলাকার বাসিন্দা রূপেশ থাপা কে। ওই খুনের ঘটনায় আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের এক নেতার নাম জড়িয়ে যায়। ন’জনের নামে বীরপাড়া থানায় অভিযোগ জানানো হয়। দু’জনকে গ্রেফতার করা হলেও বাকিরা ফেরার বলে পুলিশ জানিয়েছিল। পুলিশের খাতায় ফেরারের তালিকায় থাকা তিন জনের নামে বাড়িতে বোমা, গুলি ছোড়ার অভিযোগ করেছেন ওই ঠিকাদার। বাসিন্দাদের অভিযোগ, শাসক দলের ওই নেতার ছত্রছায়ায় থাকাতেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। রামঝোরা, লঙ্কাপাড়া এলাকায় তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। নিয়মিত লোকজন কে হুমকি দিয়ে তোলা তুলছে। জয়গাঁর মহকুমা শাসক পার্থসারথি মজুমদার জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

সোমবার রামঝোরা চা বাগানের ঝোপের পাশ থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়া এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তাঁকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে আসে। ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের বাগানের শ্রমিক লাইনে গুলি চলায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

রামঝোরা বাগানের মিডল লাইনের বাসিন্দা দেবরাজ ছেত্রী পঞ্চায়েতের ঠিকাদার। তার দোতলা কাঠের বাড়িতে স্ত্রী ও ছ’বছরের পুত্র সন্তান ও এক ভাইপো থাকেন। অভিযোগ, বুধবার রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ একটি মোটর সাইকেলে চেপে তিন জন তার বাড়ির সামনে এসে তিন রাউন্ড গুলি চালায় ও একটি বোমা ছোড়ে। দোতলার ঘরের দরজা খুলতে দেবরাজের ভাইপো সঞ্জুর পায়ে স্‌প্লিন্টার লাগে। কোনওমতে ঘরে ঢুকে পড়ে সে। এলাকায় হাতির উপদ্রব ঠেকাতে ফি রাতে লোকজন পটকা ফাটায়। সে কারণে গুলি ও বোমার আওয়াজ শুনেও লোকজন তেমন আমল দেন নি। তবে ভাইপো আঘাত পাওয়ার পর চিৎকার করে লোকজন ডাকার চেষ্টা করেন দেবরাজ। সে সময় দুষ্কৃতীরা চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে খুন করা হবে বলে হুমকি দিয়ে বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়।

ওই ঠিকাদারের অভিযোগ, যে তিন জন এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাঁরা রুপেশ খুনের ঘটনায় জড়িত। তিনি বলেন,‘‘কেন তারা আমাকে প্রাণে মারতে আসে তা বুঝতে পারছি না। গভীর রাতে পুলিশ কে ফোন করা হলেও থানা থেকে পুলিশ আসে বৃহস্পতিবার সকালে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ওরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পুলিশ তাদের রুপেশ খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করছে না।’’

মোর্চা নেতা মধুকর থাপার বলেন, ‘‘তৃণমূল নেতাদের ছত্রছায়ায় দুষ্কৃতীরা এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। পরবর্তীতে ওই ঠিকাদারের কোনও ক্ষতি হলে তার দায় পুলিশকে নিতে হবে।’’ আরএসপি নেতা গোপাল প্রধানের কথায়, ‘‘রুপেশ খুনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হলে এই ঘটনা ঘটত না।’’ তৃণমূলের জেলা সহকারী সভাপতি নকুল সোনারের দাবি, ‘‘কারা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা আমরা জানি না। কোনও দুষ্কৃতীকে দলের কেউ মদত দেয়না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE