জলপাইগুড়িতে বৃষ্টি।
সকাল থেকে মেঘাচ্ছন্ন ছিল আকাশ। সঙ্গে ছিল ধুলো ঝড়। দুপুরের পরে শুরু হয় দমকা হাওয়া-সহ ঝিরঝিরে বৃষ্টি। পশ্চিমি ঝঞ্ঝার জেরে দিনভর আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে সোমবার বিপর্যস্ত হল জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার স্বাভাবিক জনজীবন। বিদায় নিয়েও শীত ফিরে এল। আচমকা বৃষ্টি দেখে কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে কৃষি কর্তা থেকে আলু চাষিদের। তবে খুশি চা চাষিরা।
সকালে ধুলো ঝড়ের প্রকোপ এতটাই ছিল যে জাতীয় সড়কে যান চলাচল বিপর্যস্ত হয়েছে। ফগ লাইট জ্বেলে বাস ট্রাক চলাচল করেছে। ধুলোয় মোড়া রাস্তা সারা দিনই কুয়াশাচ্ছন্ন ছিল। দুপুরের পরে বৃষ্টি নামতে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও কনকনে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু হয় জনজীবন। শীত বিদায় নিয়েছে মনে করে তুলে রাখা গরম জামা ফের নামাতে বাধ্য হয়েছেন অনেকেই।
জলপাইগুড়ির কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে উত্তরের আকাশে মেঘের আনাগোনা বেড়েছে। দমকা শীতল হাওয়ার সঙ্গে ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সেই কারণে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ নিম্নগামী হয়েছে। রবিবার জলপাইগুড়িতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার সকাল ১১টায় তা নেমে দাঁড়ায় ২৩ ডিগ্রি। বেলা বাড়তে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কমেছে। আবহাওয়া দফতরের কর্তারা জানান, আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই পরিস্থিতি চলবে।
কয়েকদিন রোদের পরে আকাশে মেঘের ঘনঘটা দেখে এ দিন চাষি মহলে বিপরীতমুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সকাল থেকে খুশিতে ছিলেন জেলার ক্ষুদ্র চা চাষিরা। ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামলে সেচের খরচ কমবে। তবে মাথায় হাত পড়েছে আলু চাষিদের। এক নাগাড়ে বৃষ্টি পড়লে খেতের আলুর পচন শুরু হবে, এই আশঙ্কায় তাঁদের অনেকে দিশেহারা হয়ে পড়েন। জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে কিছুটা উপকার হয়েছে। তবে কয়েক ঘণ্টা ভারি বৃষ্টি হলে সেচের খরচ অনেকটা কমত।”
দিনভর বৃষ্টির পরে সন্ধেয় মেঘে ছেয়ে গেল বালুরঘাট শহর। সোমবার অমিত মোহান্তের তোলা ছবি।
এ দিকে কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খেতে আলু তোলার কাজ শেষ হয়নি। প্রচুর আলু মাঠে আছে। ভারি বৃষ্টিপাত হলে ওই আলুতে পচন রোগ শুরু হবে। শুধু তাই নয়, জেলা কৃষি আধিকারিক সুজিত পাল বলেন, একটানা ঝিরঝিরে বৃষ্টি চললে আলু চাষিরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। ধূপগুড়ির গাদং এলাকার আলু চাষি রমেশ সরকার জানান, বাজারে দাম নেই দেখে অনেকে খেত থেকে আলু তোলার কাজ শুরু করেনি। কিন্তু মঙ্গলবার আবহাওয়া একই থাকলে খেতে আলু ফেলে রাখা যাবে না। তিনি বলেন, “মাটি ভিজে গেলে পচন রোগ ছড়াবে। সামাল দেওয়া সম্ভব হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy