Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

দিলীপের জেল হাজত, হোম খুলতে স্মারকলিপি

আবাসিক কিশোরীদের যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত ধৃত হোম কর্ণধার দিলীপ মহন্তের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হল। মঙ্গলবার বালুরঘাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মহীতোষ দত্ত অভিযুক্ত দিলীপের জামিনের আবেদন খারিজ করে তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:০৬
Share: Save:

আবাসিক কিশোরীদের যৌন নিগ্রহে অভিযুক্ত ধৃত হোম কর্ণধার দিলীপ মহন্তের ১৪ দিনের জেল হেফাজত হল। মঙ্গলবার বালুরঘাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মহীতোষ দত্ত অভিযুক্ত দিলীপের জামিনের আবেদন খারিজ করে তার ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিন তিওড়ের ওই হোম চালুর দাবিতে আন্দোলনে নামে কংগ্রেস। ওই হোমের নাবালিকাদের ধর্ষণ কান্ডে মূল অভিযুক্ত দিলীপের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে এদিন দুপুরে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায়ের নেতৃত্বে শহরে মিছিল করে জেলা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে জেলাশাসকের উদ্দেশে জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিকের কাছে অবিলম্বে দুঃস্থ আবাসিক মেয়েদের হোমে ফেরানোর ব্যবস্থা করে হোমটি চালুর দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। ওই বিক্ষোভ আন্দোলনে হোমের ছাত্রী ও অভিভাবকেরাও সামিল হন। দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশে এনজিও পরিচালিত ওই হোমটি বন্ধ করা হয়েছে। আবাসিক ছাত্রীদের তাদের নিজের এলাকার সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে ভর্তি ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, তিওড়ের ওই হোমটি গত প্রায় ৯ বছর ধরে চলছে। কিন্তু বিগত দিনের আবাসিক মেয়েদের কোনও নথি সমাজকল্যাণ দফতরের কাছে নেই। ফলে ২০০৬ সাল কিংবা তার পরবর্তী বছরগুলিতে কত জন আবাসিক মেয়ে ওই হোমে ছিল, দশম শ্রেণি পাশ করার পর তারা হোম থেকে বাড়ি ফিরে কত জন উচ্চশিক্ষা নিয়েছে কিংবা তারা এখন কোথায়—এ সব তথ্য না মেলায় সরকারি স্তরে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ্যের সমাজকল্যাণ দফতর হোমের প্রত্যেক আবাসিক মেয়েদের ভরণপোষণের জন্য প্রতি মাসে ১২০০ টাকা দিত। কোন তথ্যের উপরে তারা কতজন আবাসিক মেয়েদের জন্য আর্থিক বরাদ্দ দিতেন, এ সংক্রান্ত ফাইল কেন দফতরে নেই, তা নিয়ে সমাজকল্যাণ আধিকারিক সনৎ দত্ত কিছু বলতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছে কংগ্রেস।

গত ১৯ অগস্ট বর্ধমানের পানাগড় থেকে ফেরার দিলীপকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পরদিন বালুরঘাট আদালতে হাজির করিয়ে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজত চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। বিচারক মহীতোষ দত্ত ১২ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এদিন পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হলে দিলীপকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের দ্বিতীয় কোর্টে তোলা হয়েছিল। মামলার শুনানিতে সরকারি আইনজীবী সুভাষ চাকি বলেন, ‘‘পুলিশি হেফাজতের সময়সীমার মধ্যে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে। অভিযুক্ত দিলীপের বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ সিসি ক্যামেরা, কম্পিউটার, ১৯ বোতল দামি বিলিতি মদ সহ ৪৫ রকম জিনিস বাজেয়াপ্ত করেছে। অভিযুক্ত দিলীপের গাড়ির দুই চালক ধৃত সুব্রত বিশ্বাস ও বরুণ দত্ত তাদের গাড়ি করে হোম থেকে দিলীপের বালুরঘাটের বাড়িতে নিয়ে যেত। ইতিমধ্যে টিআই প্যারেডে হোমের নির্যাতিতা ৬ কিশোরী তাকে শনাক্ত করেছে।’’ অভিযুক্তের আইনজীবী অরিন্দম চট্টোপাধ্যায় দিলীপ এবং দুই চালকের জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে চালকদেরও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE