Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
ইংরেজবাজার

পদ নিয়ে বচসায় অচলাবস্থা স্কুলে

প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে এক শিক্ষক শিক্ষিকার বিবাদের জেরে স্কুলের পঠনপাঠন থমকে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০১:৫১
Share: Save:

প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে এক শিক্ষক শিক্ষিকার বিবাদের জেরে স্কুলের পঠনপাঠন থমকে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

এর জেরে মালদহের ইংরেজবাজারের গোবর্ধনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষিকা ইংরেজবাজার থানা এবং প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানিয়েছেন। শিক্ষা দফতর এবং পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়ায় বুধবার ওই শিক্ষিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার হুমকি দিয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষিকার বিরুদ্ধে পাল্টা ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক।

এদিকে, শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাজিয়ার জেরে পড়ুয়াদের পঠন পাঠন ব্যহত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন অভিভাবকরা। তাঁরা জানান, শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে বচসা এবং মামলায় ব্যস্ত রয়েছেন। যার জন্য পড়ুয়াদের পড়াশুনা লাটে উঠেছে। এই বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান দিলীপ দেবনাথ বলেন, ‘‘স্কুলে প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে। দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে। কী কারণে এমন হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’

ইংরেজবাজারের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ঘোড়াপীড় এলাকায় গোবর্ধন পুর প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখন এই স্কুলে ২৩২ জন পড়ুয়া রয়েছে। আর শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন ১০ জন। তার মধ্যে ছ’জন শিক্ষিকা। ২০১১ সাল থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছেন ইংরেজবাজার শহরের অরবিন্দপার্ক এলাকার বাসিন্দা এক মহিলা। তাঁর স্বামী দীর্ঘদিন আগেই অসুস্থতার কারণে মারা যান। তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। প্রত্যেকেই কলেজে পড়াশুনা করেন।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে গত ৩০ ডিসেম্বর স্থায়ী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কাজে যোগ দেন ইংরেজবাজার শহরে বাসিন্দা দীপক সেন। তিনি বার্লো গার্লস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক ছিলেন। তবে দীপকবাবু প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দিলেও ওই শিক্ষিকা তাঁকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না বলে অভিযোগ। এমনকি স্কুলের প্রয়োজনীয় নথিও ওই শিক্ষিকা নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। এছাড়া ওই শিক্ষিকাও নিয়মিত স্কুলে আসছেন না বলে অভিযোগ। যার জন্য স্কুল চালাতে সমস্যা হচ্ছে বলে দাবি প্রধান শিক্ষক দীপকবাবুর। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে মাস খানেক ধরে বচসা চলছে।

অভিযোগ, গত ২৮ জানুয়ারি ওই শিক্ষিকা স্কুলে গেলে প্রধান শিক্ষক তাঁর শ্লীলতাহানি করেন এবং অশ্লীল মন্তব্য করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওইদিনই ইংরেজবাজার থানায় এবং জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করেছিলেন ওই মহিলা। তারপরেও কোন তরফ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি শিক্ষিকার। তিনি বলেন, ‘‘আমি ভার প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দীর্ঘ দিন স্কুল চালিয়েছি। দীপকবাবু যোগ দেওয়ার পর সমস্ত দায়িত্বও বুঝিয়ে দিয়েছি। তারপরেও উনি নানা কারণে আমাকে হেনস্থা করছেন এবং আমার উদ্দেশে অশ্লীল মন্তব্য করছেন।’’ কোনও ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পুলিশ ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

অপরদিকে প্রধান শিক্ষক দীপকবাবু বলেন, ‘‘উনি আমাকে স্কুলের কোনও নথিই দিচ্ছেন না। এমনকি মিড-ডে মিলের হিসেব থেকে শুরু করে অন্য দায়িত্ব বুঝিয়ে দিচ্ছেন না। উনি প্রধান শিক্ষক পদেই থাকতে চাইছেন। যার জন্য এমন কাজ করছেন তিনি।’’

এদিকে, শিক্ষক শিক্ষিকাদের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে দ্রুত সমস্যা সমাধান করার দাবি তুলেছেন অভিভাবকরা। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE