জেলের ওয়ার্ডেন পদের পরীক্ষার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের অভিযোগে বালুরঘাটে ধৃত ৬ পরীক্ষার্থীকে আদালত থেকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু করল পুলিশ। সোমবার ভারতীয় দন্ডবিধির ১৮৮, ৪১২ এবং ৪২০ র মতো জামিন অযোগ্য জালিয়াতির ধারায় মামলা দায়ের করে বালুরঘাটের সিজেএম আদালতে তোলা হয়েছিল ধৃতদের। বিচারক আবেদন মেনে ধৃত ৬ জনকে আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতরা মালদহের মানিকচকের বাসিন্দা। পরীক্ষাকেন্দ্রে বসে মোবাইল দেখে তারা উত্তর লিখছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষাকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত ধরণের প্রশ্নপত্র থাকায় একজন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে পাশের জনের প্রশ্নপত্রের অমিল ছিল। এক নজরদার শিক্ষকের কথায়, ‘‘প্রত্যেক প্রশ্নপত্রে একটি আলাদা নম্বর ছিল। সেই নম্বর লিখে মোবাইল থেকে মেসেজ করলে হুবহু ওই প্রশ্নপত্রের উত্তর চলে এসেছে বলে সন্দেহ। কেননা মোবাইল দেখে ধৃত এক পরীক্ষার্থী উত্তর লিখছিল।’’ ফলে জেলের ওয়ার্ডেনের পরীক্ষায় গোপনে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগও উঠতে শুরু করেছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়ার বলেন, ‘‘ধৃতরা পরীক্ষা কেন্দ্রে বসে মোবাইলে কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। কী উত্তর এসেছিল। সমস্ত বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষা বাতিলের বিষয়টি বোর্ডের ব্যাপার বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
রবিবার দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের ৭টি স্কুল ও কলেজে জেলের ওয়ার্ডেন পদের জন্য লিখিত পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে মোট ১৬ জন পরীক্ষার্থীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের মধ্যে ১০ জন পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢোকার সময় মোবাইল সহ ধরা পড়ে যায়। বোর্ডের নির্দেশে সঙ্গে সঙ্গে তাদের পরীক্ষা বাতিল করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপরে পরীক্ষা চলাকালীন বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আরও ৬ জনকে মোবাইল সহ ধরে ফেলেন নজরদার শিক্ষকেরা। তাদেরকেও গ্রেফতার করা হয়। ধৃত ১৬ জনের মধ্যে ১০ জনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়। বাকি ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।
রবিবার সারা রাজ্যের সঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুরে ওয়ার্ডেন পদের জন্য বালুরঘাটের স্কুল কলেজে প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। জেল সূত্রের খবর, এ জেলার ২০ পদের জন্য অন্তত পাঁচ হাজার চাকরি প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় বসেন। পুলিশ সূত্রের খবর, মোবাইল নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু ১০ জন পরীক্ষার্থী গোপনে মোবাইল নিয়ে ঢুকতে গিয়ে শুরুতেই মেটাল ডিটেক্টরে ধরা পড়ে যান। তাদের পরীক্ষা বাতিল হয়ে যায়। পাশাপাশি ৬জন পরীক্ষার্থী মোবাইলের সাহায্যে নকল করার সময় পুলিশ তাদের ধরে ফেলে। বালুরঘাট থেকে ধৃত মোট ১৬ জন পরীক্ষার্থী মালদহের কালিয়াচক এবং মনিকচকের বাসিন্দা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy