পুরভোটের মুখে সুসংহত বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পের উপভোক্তাদের দ্রুত বাড়ি তৈরির টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র রঞ্জন শীলশর্মার বিরুদ্ধে। শুক্রবার দার্জিলিং জেলা বিজেপি’র তরফে অভিযোগ তুলে শিলিগুড়ি পুরসভায় বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরে দলের তরফে পুর কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে সরকারি তরফে প্রকল্পের সুবিধা উপভোক্তাদের হাতে পৌঁছানোর দাবি তোলা হয়।
বিজেপির নেতাদের অভিযোগ, পুরসভার তালিকা নিয়ে রঞ্জনবাবু ৩৬, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ড-সহ লাগোয়া এলাকায় প্রচার শুরু করেছে। দুঃস্থ বাসিন্দাদের নামা তালিকায় উঠে জানিয়ে ব্যাঙ্কে উপভোক্তাদের নিজেদের অংশের টাকা জমা দিতে বলছেন। এতে দ্রুত তিনি ঘরের সরকারি টাকা পাইয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভোট মুখে সরকারি অফিসার না হলে তিনি কীভাবে এ কাজ করছেন, তা নিয়েই বিজেপি প্রশ্ন তুলেছেন।
জেলা বিজেপির সভাপতি রথীন বসু বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেস এই ধরণের রাজনীতিতেই বিশ্বাসী। যে কাজ সরকারি অফিসারদের করার কথা তা ভোটের মুখে রঞ্জনবাবুর মত তৃণমূল নেতারা করছেন। সরকারি অফিসারদের একাংশও এসব জেনে বুঝে চুপচাপ বসে থাকছেন।” এদিনের বিক্ষোভের পর বিজেপির জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক নন্দন দাস বলেন, “আমরা পুর কমিশনারকে সব খতিয়ে দেখতে বলেছি। ভোটের তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সব বন্ধ না হলে বড়মাপের আন্দোলন হবে।”
তৃণমূল নেতা রঞ্জনবাবু অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, “পুরসভার ৩৬, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক রয়েছে। ওই ঘর পাওয়ার উপভোক্তাদের তালিকা তৈরি হওয়ার খবর পাই। তাই উপভোক্তাদের টাকা জমা দিয়ে প্রকল্পের সুবিধা নিতে বলেছি মাত্র। এতে লুকিয়ে কিছু করার বা দুর্নীতির কি আছে!” তিনি জানান, আর পুরোটাই সরকারি পদ্ধতি। টাকা দেবে সরকার, পুরসভা। আমি এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর হিসাবে লোকজনকে খবর দিয়েছি মাত্র। আর ভোটের দিনক্ষণও ঘোষণা হয়নি। আসলে বিজেপি চায় না গরীব মানুষেরা ঘর পাক। তাই এ সব নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে। জহরলাল নেহরু আর্বান রিনিউয়াল মিশনের আওতায় সুসংসহত বস্তি উন্নয়ন প্রক ল্পের উপভোক্তাদের তালিকা গত বছর ধরেই পুরসভার তৈরি হচ্ছে। বাসিন্দাদের আবেদনের ভিত্তিতে কাগজপত্র খতিয়ে দেখে ওই তালিকা তৈরি হচ্ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, এবার পুরসভার ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১০১ জন এবং ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১৮৯ জন উপভোক্তা ঘর পাবেন। বাসিন্দাদের এই প্রকল্পে তিন দফায় ১ লক্ষ ৪৯ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। এরমধ্যে উপভোক্তাকে মাত্র ১৬ হাজার টাকা ব্যাঙ্কে জমা করতে হয়। এর পর সরকার প্রথম দফায় ৫০ হাজার, দ্বিতীয় দফায় ৪০ হাজার এবং তৃতীয় দফায় বাকি টাকা দেওয়া হয়। পুরসভার ওই এলাকায় প্রথম দফার টাকা দেওয়ার কাজ শুরু হবে।
বিজেপি’র অভিযোগ, রঞ্জনবাবুর এবারও ওই এলাকার ওয়ার্ড থেকে দলের টিকিট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সরকারি সুবিধার ব্যবস্থা তিনিই বাসিন্দাদের করে দিচ্ছেন বলে প্রচার শুরু করেছেন। এতে দুঃস্থ বাসিন্দারা প্রভাবিত হয়ে পড়বেন। সুকৌশলে ওই তৃণমূল নেতা ভোটের প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। বিষয়টির কিছু তিনি জানেন না বলে এদিন দাবি করেছেন পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া। তিনি বলেন, “বিজেপির স্মারকলিপি খতিয়ে দেখা হবে। এমন কিছু হয়েছে বলে আমি খবর পাইনি। আর এখনই ঘরের টাকা বিলির কোনও বিষয় নেই। সরকারি নিয়ম মেনেই সব হবে। বাসিন্দাদের পুরসভার তরফেই সব জানানো হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy