Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

পুরসভার চেক বিলি করে বিতর্কে গৌতম

সবে পুরভোট শেষ হয়েছে। কবে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গঠন হবে সেই বিজ্ঞপ্তি এখনও জারি করেনি রাজ্য সরকার। এই অবস্থায়, শিলিগুড়ি পুরভবনে গীতাঞ্জলি আবাসন প্রকল্পের অনুষ্ঠানে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা ৩১-৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ৯০ জন বাসিন্দাকে প্রথম দফায় চেক বিলি করা হয়।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পে চেক বিলি করছেন মন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।

গীতাঞ্জলি প্রকল্পে চেক বিলি করছেন মন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৩:০২
Share: Save:

সবে পুরভোট শেষ হয়েছে। কবে শিলিগুড়ি পুরবোর্ড গঠন হবে সেই বিজ্ঞপ্তি এখনও জারি করেনি রাজ্য সরকার। এই অবস্থায়, শিলিগুড়ি পুরভবনে গীতাঞ্জলি আবাসন প্রকল্পের অনুষ্ঠানে গিয়ে বিতর্কের মুখে পড়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব। বুধবার শিলিগুড়ি পুরসভার তরফে জলপাইগুড়ি জেলার অধীনে থাকা ৩১-৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ৯০ জন বাসিন্দাকে প্রথম দফায় চেক বিলি করা হয়। ১০ জনের হাতে তিনি চেক তুলে দেন। এর পরেই মন্ত্রী অনৈতিক ভাবে পুরসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য।

সদ্য শেষ হওয়া পুর নির্বাচনে জিতে বামেদের তরফে শিলিগুড়ি পুরসভায় মেয়র পদপ্রার্থী তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘‘গৌতমবাবু পুর এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রী নন। একমাত্র ওই দফতরের মন্ত্রী হলে তিনি পুরসভার কাজে আসতে পারেন। গৌতমবাবু অবৈধ ভাবে, খুশি মতো ওই কাজ করছেন। পুরসভার আধিকারিকদের ডেকে তাঁর মতো করে কাজ করাচ্ছেন। এটা তিনি পারে না। আমরা ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাব। রাজ্য পুর দফতরে অভিযোগ জানাব।’’ তাঁর কথায়, বিগত পুরবোর্ডের মেয়াদ অনেক আগেই ফুরিয়েছে। তার পর প্রশাসক বোর্ডের হাতে পুরসভা চালানোর ভার দেওয়া হলেও তাদের মেয়াদও শেষ হয়েছে। নির্বাচনের পর এখন দ্রুত বোর্ড গড়ার দাবি জানানো হচ্ছে। অথচ তা না করে মন্ত্রী অন্যায় ভাবে পুরসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন।

অশোকবাবুর অভিযোগ নিয়ে গৌতমবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওঁর বক্তব্য গুরুত্ব দিতে চাই না। পুর উন্নয়নের বার্তা দিয়েছিলাম। বিভিন্ন নাগরিক সভাতেও বিভিন্ন সমস্যার কথা উঠে এসেছিল। তা মেটাতে আমরা দায়বদ্ধ। জাতি, দল, মত নির্বিশেষে আমরা সেই কাজ করতে চাই।’’

এ দিন অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘ভোটের আগেই এই টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু যে দিন চেক বিলি করা হবে বলে ঠিক হয় সেই দিনই পুরভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ায় ওই অনুষ্ঠান হয়নি। না হলে বিধিভঙ্গ করা হত। সে কারণে এখন এই অনুষ্ঠান হচ্ছে। তা ছাড়া কোনও কারণে প্রকল্পের টাকা আসছিল না। আমি আবাসন দফতরের সঙ্গে কথা বলে সেই কাজ দ্রুত করার ব্যবস্থা করি।’’ পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানান, জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে ওই টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। পুরসভার মাধ্যমে টাকা বিলির ব্যবস্থা করতে বলা হয়। মন্ত্রীর হাত দিয়ে চেক বিলির কথাও জানানো হয়েছিল।

বিজেপি’র জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, ‘‘আগে থেকেই মন্ত্রী গৌতমবাবু নিজের খুশি মতো পুরসভার কাজে হস্তক্ষেপ করছেন। কিছু বললেও তিনি শুনছেন না। পুরসভাকে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না’’ কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকার একই সুরে জানান, মন্ত্রী ওই কাজ অনৈতিক বলে তিনিও মনে করেন। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভায় জবরদস্তি হস্তক্ষেপ করে তিনি কাজ করতে চাইছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE