ডুয়ার্স উত্সবকে ঘিরে একে অপরের বিরুদ্ধে মহকুমা প্রশাসন ও পুরসভা আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় সরগরম আলিপুরদুয়ার। উত্সবে ময়লা পরিষ্কার না করার অভিযোগে আলিপুরদুয়ার পুরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা করে ডুয়ার্স উত্সব কমিটি। কমিটির সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সৌরভ চক্রবর্তী। কমিটির পক্ষে উত্সব কমিটির সভাপতি তথা মহকুমা শাসক নিখিল নির্মল মামলা করেন।
পুরসভা কর্তৃপক্ষর দাবি, উত্সবের জন্য পুরসভার অনুমতি না থাকলেও বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মেটানো যেত। তা না করে মহকুমাশাসক এসডিও কোর্ট থেকে জনগণের অসুবিধার কথা বলে মাঠ পরিষ্কারের জন্য পুরসভাকে ৫০ শতাংশ টাকা মেটানোর রায় দেন। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। যার শুনানি হবে ৭ জুন। এরই এক মাসের মাথায় ৯ এপ্রিল পাল্টা উত্সব কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন পুরসভার সিপিএমের চেয়ারম্যান অনিন্দ্য ভৌমিক। কমিটির বিরুদ্ধে মাঠের কর, জল, শ্রমিকদের খরচ-সহ ৩৩ হাজার টাকা না মেটানোর অভিযোগ তোলা হয়। মামলার পরবর্তী দিন ৭ই মে। মহকুমাশাসক বলেছেন, “আমার মামলার রায়ের বিরুদ্ধে পুরসভা উচ্চ আদালতে গিয়েছি বলে শুনেছি। মাঠ পরিষ্কার না করায় আমি মামলা করেছিলাম।”
বুধবার পুরসভায় গিয়ে ডুয়ার্স উত্সবের সাধারণ সম্পাদকের নামে মামলা প্রত্যাহারারের দাবি জানান তৃণমূলের কাউন্সিলরা। তাঁদের বক্তব্য, মহকুমাশাসকের করা মামলা নিয়ে ২৮ মার্চ পুরসভার বৈঠক হয়। সেখানে ৫ তৃণমূল কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মামলার জবাব দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়।। এক মাস পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলেও জানানো হয়। শহর তৃণমূল নেতা তথা দলের কাউন্সিলর আশিস দত্ত বলেন, “পুরসভার বৈঠকে আমরাও ছিলাম। চেয়ারম্যান কাউকে কিছু না জানিয়ে কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সৌরভবাবুর নামে মামলা করেন। এটা পুরোই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মহকুমাশাসকের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। সৌরভবাবুর নামে মামলা তোলার দাবি করেছি।”
পুর চেয়ারম্যান অনিন্দ্যবাবু বলেন, “মামলা করার জন্য কাউন্সিলরদের অনুমতির প্রয়োজন নেই। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করব ভেবেছিলাম। তা নানা কারণে সম্ভব হয়নি। আসলে তৃণমূলের নেতার নামে মামলা হওয়ায় তৃণমূলের কাউন্সিলররা তা তুলতে বলেছেন। বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করব।”
চাপান-উতোর যে একটা চলছে, তা তৃণমূল নেতা সৌরভবাবুর কথায় পরিষ্কার হয়েছে। তিনি বলেছেন, “পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে মামলাটি করা হয়েছে। মাঠ পরিষ্কার না করায় মহকুমা শাসক পুরসভার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, তার পাল্টা মামলা করতে গিয়ে মহকুমা শাসকের সঙ্গে আমার নাম জড়ানো হয়েছে। সিপিএম রাজনীতি করায় আমাদের কাউন্সিলররা এ দিন পুরসভায় গিয়ে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।” পুরসভার বক্তব্য, যে কোনও উত্সব কমিটি প্রধান উদ্যোক্তা হলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বকেয়া না পেয়ে তাঁদের নামে মামলা করা হয়েছে। এতে রাজনীতি নেই।
পুর আইনজীবী সুহৃদ মজুমদার জানান বিচারক আলিপুরদুয়ার থানাকে মামলা রজু করে তার তদন্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। তাই আশা করছি, থানার আইসি দ্রুত মামলা রজু করবেন। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি দেবাশিষ চক্রবর্তী এই দিন জানিয়েছেন, লোকসভা নির্বাচনের কাজের জন্য কোর্টের নির্দেশ এখনও দেখা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy