দার্জিলিঙের পথে রোহিণীতে ঘিসিঙ্গকে শ্রদ্ধা। শুক্রবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
মেঘে ঢাকা আকাশ। বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে জাতীয় সড়ক বরাবর, শুক্রবার সকাল থেকে রাস্তার দু’ধারে সবুজ-কালো দলীয় পতাকা নিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা দলীয় কর্মী সমর্থক আর পাহাড়ি মানুষের মুখেও জমে ছিল মেঘ।
বেলা দু’টো নাগাদ সেই রাস্তা ধরেই জিএনএলএফ সুপ্রিমো সুবাস ঘিসিঙ্গের কফিন-বন্দি দেহ শেষ বারের মতো পাহাড়ে পাড়ি দেওয়ার মুখে সেই মেঘটাই কান্না হয়ে ভেঙে পড়ল যেন। সমর্থকদের হা-হুতাশ, কান্না আর স্লোগানে শব্দময় হয়ে উঠল রাস্তাঘাঠ। আর এই শোকের আবহেই, শ’পাঁচেক গাড়ির দীর্ঘ কনভয় নিয়ে তাঁর শেষযাত্রা রোহিণী, কার্শিয়াং, ঘুম, সোনাদা ছুঁয়ে হারিয়ে গেল তাঁর প্রিয় শহর দার্জিলিঙের দিকে। সন্ধ্যায় দার্জিলিঙের জাকির হোসেন রোডে দলীয় কার্যালয়ে পৌঁছয় ঘিসিঙ্গের দেহ। জিএনএলএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণের কথা মাথায় রেখে আজ, শনিবার দেহটি দার্জিলিঙেই থাকবে। কাল, রবিবার সুবাস ঘিসিঙ্গের আদিবাড়ি মিরিক লাগোয়া মঞ্জুতে তাঁর শেষকৃত্য হবে।
এ দিন কালিম্পঙে ছিলেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ। প্রবীণ
নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শনিবার পাহাড়ে জিটিএ-র সব দফতর বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছেন গুরুঙ্গ। তিনি বলেন, “আমি কয়েকটা জরুরি কাজে ব্যস্ত। তাই শেষ শ্রদ্ধা জানাতে যেতে পারছি না। দলের তরফে নেতারা অবশ্যই যাবেন।”
এ দিন ঘিসিঙ্গের মরদেহে রাজ্য সরকারের তরফে শেষ শ্রদ্ধা জানান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। একে একে মালা দেন কংগ্রেসের
শঙ্কর মালাকার, দাওয়া নরবুলা, সিপিএম নেতা তুলসী ভট্টরাই, দার্জিলিং ডুয়ার্স ইউনাইটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের মহেন্দ্র পি লামা প্রমুখ। ছিলেন, জিএনএলএফ ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া রাজেন মুখিয়া, শান্তা ছেত্রী, বিন্নি শর্মাও। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী শোক বার্তা পাঠান তাঁর পরিবারের কাছে।
জিএনএলএফের তরফে এ দিনই ঘোষণা করা হয়, সুবাস ঘিসিঙ্গের স্থলাভিষিক্ত করা হচ্ছে তাঁর ছেলে মোহনকে। দলের মুখপাত্র মহেন্দ্র ছেত্রী বিমানবন্দর চত্বরেই জানিয়ে দেন, দলের নতুন সভাপতি হিসাবে প্রয়াত নেতার ছেলেকেই বেছে নিতে চান তাঁরা। মহেন্দ্র বলেন, “সুবাস ঘিসিঙ্গের স্বপ্নকে সফল করতে হবে। ষষ্ঠ তফসিলের মাধ্যমে আলাদা রাজ্যের সমমর্যাদা পাওয়াই আমাদের লক্ষ্য।”
তিনি জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক স্থির হয়েছে দলের নতুন সভাপতি হিসাবে সর্বসম্মতিক্রমে মোহন ঘিসিঙ্গকেই নির্বাচিত করা হয়েছে। মোহন জানান, দলীয় নেতাদের সিদ্ধান্তের কথা শুনেছেন তিনি। তিনি বলেন, “এখনই এ নিয়ে কিছু বলছি না। বাবা’র শ্রাদ্ধশান্তির কাজ শেষ হলেই সবাইকে নিয়ে বৈঠক করব। তার পরেই যা বলার বলব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy