স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে রায়গঞ্জ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী দেবাশিস বসুর বিরুদ্ধে পুলিশকে খুনের মামলা দায়ের করার অনুমতি দিল আদালত। বুধবার বিকাল ৪টে নাগাদ বিচারক সব্যসাচী চট্টরাজ কেস ডায়েরি খতিয়ে দেখে খুন, প্রমাণ লোপাট ও নিষিদ্ধ স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে পুলিশকে ৩০২, ২০১ ও ২৭(২) ধারায় মামলা দায়েরের অনুমতি দেন। দেবাশিসবাবুর জামিনের আবেদন নাকচ করে তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এ দিন পুলিশ দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা করার অনুমতিও চেয়েছিল। পুলিশ সূত্রের দাবি, আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার পরেও খুন হয়ে থাকতে পারে। সে জন্য দুটি বিষয়েই মামলা রুজুর জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। দেবাশিসবাবুর আইনজীবী সুব্রত দে-র দাবি, ‘‘পুলিশ কোনও মামলায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে একইসঙ্গে ৩০২ ও ৩০৬ ধারায় আদালতে মামলা করার আবেদন জানাতে পারে না। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এদিন আদালত প্রথমে পুলিশকে একইসঙ্গে ৩০২ ও ৩০৬ ধারায় মামলা করার অনুমতি দিলেও পরে ৩০৬ ধারায় মামলা করার অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়। তিনি যে স্ত্রীকে খুন করেছেন সেই বিষয়ে এখনও পুলিশ আদালতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করতে পারেনি। আমরা উচ্চ আদালতে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেশ করে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’’ সরকারি আইনজীবী নীলাদ্রি সরকার বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই পুলিশ দেবাশিসবাবুর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগে মামলা করার জন্য আদালতের কাছে অনুমতি চেয়েছে।’’ উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ‘‘পুলিশ আইন মেনে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই তদন্ত করে সব মামলা করে।’’
গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে রায়গঞ্জের তুলসীতলা এলাকায় নিজের শোওয়ার ঘরে রক্তাক্ত অবস্থায় রেণুকা বসু (৪৩) নামে ওই বধূর দেহ মেলে। রাতেই দেবাশিসবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তাঁর বাড়ির পিছনের ডোবার ধারের ঝোপ থেকে একটি নাইনএম এম পিস্তল ও তিন রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করে। রাত ৯টা নাগাদ থানায় আটক থাকা অবস্থায় পুলিশ বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অভিযোগে দেবাশিসবাবুকে গ্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র আইনের ২৫ ও ২৭ ধারায় মামলা দায়ের করে। শনিবার আদালতের মাধ্যমে তাঁকে চার দিনের নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। এ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ শুনে আদালত চত্বরে ভেঙে পড়েন দেবাশিসবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘মানসিক কোনও কারণে আমার স্ত্রী আত্মহত্যা করেছেন। আমি পুলিশকে তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করার পরেও আমাকেই মিথ্যা খুনের মামলায় ফাঁসানো হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy