প্রাথমিক ধাক্কা সামলে কর্মী বৈঠকে নেমে পড়লেন তৃণমূলের বিদায়ী জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। রবিবার বিকেলে দক্ষিণ দিনাজপুরের বংশীহারি ব্লকের গাঙ্গুরিয়া এলাকায় বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন পোড় খাওয়া ওই সাংগঠনিক নেতা। এদিকে নতুন জেলা সভাপতি মনোনীত হওয়ার পর ৬ দিন কেটে গেলেও শঙ্করবাবুর সঙ্গে বিদায়ী সভাপতি বিপ্লববাবুর দূরত্ব কমার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
শঙ্করবাবুর সঙ্গে তপন ও গঙ্গারামপুরের বিধায়কের কথা হলেও এখনও কোনও কথা হয়নি বিপ্লববাবুর। হয়নি দুই তরফে কোনও সৌজন্য বিনিময়। এই পরিস্থিতিতে পারস্পরিক দূরত্ব সরিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরের সদ্য নির্বাচিত তৃণমূল জেলা সভাপতি শঙ্করবাবুই বিদায়ী জেলা সভাপতি বিপ্লববাবুর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। যা শুনে বিপ্লববাবুও বলেছেন, ‘‘আলোচনা হোক। কোনও আপত্তি নেই।’’
শনিবার জেলায় ফিরে বিপ্লববাবুকে পদ থেকে সরানোর বিষয়ে শঙ্কর চক্রবর্তী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। দলনেত্রীর কান ভারী করে লাগাতার ষড়যন্ত্র করে তাকে জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। দলের সাধারণ কর্মীরা ওই ষড়যন্ত্রের জবাব দেবেন বলেও তিনি দাবি করেন। স্বভাবতই কথা উঠেছে, ক্ষুব্ধ বিপ্লববাবুর সঙ্গে নিজে থেকে কথা বলে তাকে নরম করতে শঙ্করবাবু উদ্যোগী হয়েছেন কি না, তা নিয়ে। সে প্রসঙ্গে নতুন জেলা সভাপতির বক্তব্য, ‘‘আমার সঙ্গে কারও বিরোধ নেই। জেলা সভাপতি হয়ে সকলকে নিয়ে চলার বার্তা আগেই দিয়েছি। বিধায়ক বিপ্লবের সঙ্গেও আমি দেখা করবো।’’
গত মঙ্গলবার শঙ্করবাবুকে নতুন জেলা সভাপতি মনোনীত করার পর থেকে জেলা কমিটির কোনও অস্তিত্ব নেই। বিধানসভা ভোটের আগে নতুন করে জেলা কমিটি গড়ার দিকে যাবেন না বলে শঙ্করবাবু এদিন বালুরঘাটে বলেন, ‘‘আপাতত জেলা কমিটিতে কোনও পরিবর্তন হবে না। বিধায়কেরা সংশ্লিষ্ট এলাকার চেয়ারম্যান হওয়ায় তারাই ব্লক স্তরে কমিটি গঠন থেকে সাংগঠনিক বিষয়টি দেখবেন।’’ জেলা সভাপতি হয়ে এখন তাঁর প্রথম কাজ বিধায়কদের সঙ্গে দেখা করা বলে শঙ্করবাবু জানিয়েছেন।
ইতিমধ্যে তিনি তপনের বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা এবং গঙ্গারামপুরের বিধায়ক সত্যেন রায়ের সঙ্গে একপ্রস্ত কথা বলেছেন। এবার বিপ্লববাবুর সঙ্গে দেখা করে তিনি কথা বলবেন বলে শঙ্করবাবু জানিয়েছেন। তবে কবে হবে সেই সাক্ষাৎ, তা শঙ্করবাবু বলেননি।
তবে বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘শঙ্করদার সঙ্গে আলোচনা হোক না। কোনও অসুবিধা নেই। তবে বিধানসভার চেয়ারম্যানেরাই যদি নিজ কেন্দ্রের সমস্ত সাংগঠনিক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেন। তবে জেলা সভাপতি বদলের অর্থ কি হলো?’’ তা ছাড়া তিনি মুকুল রায় অনুগামী নন বলে বিপ্লবাবাবু তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, ‘‘মুকুল রায়ের অনুগামী হলে শঙ্করদার বদলে আমি মন্ত্রী হতাম। কেননা সে সময় মুকুলই ছিল দলে দ্বিতীয় ব্যক্তি।’’ আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে দ্বন্দ্ব সরিয়ে নতুন ও বিদায়ী জেলা সভাপতির মধ্যে ওই সাক্ষাত কতটা কার্যকর হয়, দলের সাধারণ কর্মী সমর্থকেরা সে দিকে তাকিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy