Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিভ্রাট মেটাতে ঢেলে সাজছে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা

বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে অনেক দিনের ক্ষোভ রয়েছে মালদহে। অনেক জায়গাতে বিদ্যুৎ থাকে না দীর্ঘ সময় ধরে। থাকলেও লো ভোল্টেজের জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। সে জন্য বছর ধরেই বেশ কয়েকবার জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক অবরোধ, অনশন করেছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চাঁচল শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৫ ০২:২৯
Share: Save:

বিদ্যুৎ বিভ্রাট নিয়ে অনেক দিনের ক্ষোভ রয়েছে মালদহে। অনেক জায়গাতে বিদ্যুৎ থাকে না দীর্ঘ সময় ধরে। থাকলেও লো ভোল্টেজের জন্য সমস্যায় পড়তে হয়। সে জন্য বছর ধরেই বেশ কয়েকবার জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়ক অবরোধ, অনশন করেছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা।

বিদ্যুৎ দফতর জানিয়েছে, সেই সমস্যা মোকাবিলার উপযুক্ত আর্থিক সামর্থ্য তৈরি হয়েছে দফতরের। তা দিয়ে বিদ্যুতের আটটি নতুন সাব স্টেশন হচ্ছে মালদহে। এ ছাড়া পুরোপুরি পৃথক হচ্ছে কৃষি ও বাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহের ফিডার লাইনও। বসানো হচ্ছে ১৯১৯টি নতুন ট্রান্সফর্মার।

কেন্দ্রীয় প্রকল্প দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনায় মালদহে গ্রামীণ এলাকার বিদ্যুৎ বণ্টন ব্যবস্থার সংস্কারে ২৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ মিলেছে। ওই প্রকল্পের টাকায় মালদহে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে উদ্যোগী হয়েছে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। প্রকল্পের কাজের ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্টও তৈরি হয়ে গিয়েছে।

গ্রামীণ এলাকায় দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা প্রকল্পে বরাদ্দের পাশাপাশি আইপিডিএস (ইন্টিগ্রেডেড পাওয়ার ডেভলপমেন্ট) প্রকল্পে ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভার জন্য পৃথকভাবে ৯৪ কোটি বরাদ্দ মিলেছে। নতুন বছর থেকেই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। ওই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে মালদহে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় বিপর্যয় রোধ করা যাবে বলে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দাবি।

বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার মালদহের রিজিওনাল ম্যানেজার দিলীপকুমার বাছাড় বলেন, আগামী ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে জেলা জুড়ে গ্রামাঞ্চলের পাশপাশি শহর এলাকাতেও বিদ্যুৎ সরবরাহে আশার আলো ছড়িয়ে পড়বে। প্রকল্পের ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানি ও বাকি অর্ধেক কাজ ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে করানো হবে।

দফতর সূত্রেই জানা যায়, জেলায় বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির দুটি ডিভিশনের একটি উত্তর ও অন্যটি দক্ষিণ মালদহ। নতুন সাব স্টেশনগুলি হবে ছত্রক, আশাপুর, দেওতলা, আদিনা, নালাগোলা, গোলাপদঞ্জ, মোবারকপুর ও মিল্কিতে। ৩৩ বাই ১১ কেভিএ ওই নতুন সাব স্টেশনগুলি তৈরি ছাড়াও পুরনো ১৩টি সাব স্টেশনের ক্ষমতা বাড়ানো হবে।

গরমের মরসুমে কৃষিপ্রধান এই এলাকায় লো ভোল্টেজের জন্য জমিতে জলসেচ করতে না পারায় বিপাকে পড়তে হয় চাষিদের। এখন কৃষি ও বাড়ির সংযোগের একই ফিডার লাইনে থাকায় ওই সমস্যা হচ্ছে। এই প্রকল্পে কৃষি ও বাড়ির ফিডার লাইন পৃথক করা হবে। এজন্য নতুন ২৬টি ফিডার লাইন হবে। নতুন ফিডার লাইনের জন্যই ১৫৫৯টি নতুন ট্রান্সফর্মার বসবে। এ ছাড়া আরও ৩৬০টি নতুন ট্রান্সফর্মার বসানো সহ ১৫৯টি ট্রান্সফর্মার ক্ষমতা বাড়ানো হবে।

লো ভোল্টেজ ও লোডশেডিংয়ের পাশাপাশি ওভারহেড তারে ঝড়-বৃষ্টিতে গাছ ভেঙে পড়ায় নাজেহাল হতে হয় মানুষকে। কোথাও তারে গাছ পড়ে বিভ্রাটের ঘটনায় ত্রুটি খুঁজতেই দিনের পর দিন পেরিয়ে যায় দফতরেরও। ওই সমস্যা এড়াতে ভাল কেবলের তার বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

গ্রামীণ এলাকার পাশাপাশি ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ পুরসভায় বরাদ্দ ৯৪ কোটি টাকায় একইভাবে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ করা হবে। এ ছাড়া আদিনায় জেলার মধ্যে সব থেকে বড় পাওয়ার স্টেশন তৈরিতে উদ্যোগী হয়েছে। বিদ্যুৎ ট্রান্সমিশন কোম্পানি ওই কাজ করবে। আপাতত জেলার মধ্যে ঘোড়াপির ও সামসিতে ১ লক্ষ ৩২ হাজার ভোল্টের দুটি পাওয়ার স্টেশন রয়েছে। আদিনারটি হবে ২ লক্ষ ২০ হাজার ভোল্ট ক্ষমতাসম্পন্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE