Advertisement
০২ মে ২০২৪

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি বালুরঘাটে

রবিবার শহরের স্থানীয় নাট্যতীর্থ মঞ্চে আয়োজিত এক নাগরিক কনভেনশনের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া এই জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উপস্থিত শহরের শিক্ষাবিদ থেকে স্কুল শিক্ষক এবং নাট্যকর্মী থেকে সমাজকর্মীরা আলোচনায় এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:১২
Share: Save:

দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার দাবিতে সরব হলেন নাগরিকেরা।

রবিবার শহরের স্থানীয় নাট্যতীর্থ মঞ্চে আয়োজিত এক নাগরিক কনভেনশনের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া এই জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে উপস্থিত শহরের শিক্ষাবিদ থেকে স্কুল শিক্ষক এবং নাট্যকর্মী থেকে সমাজকর্মীরা আলোচনায় এর গুরুত্ব তুলে ধরেন।

দক্ষিণ দিনাজপুরে ৬টি কলেজ চালুর পাশাপাশি আরও দুটি কলেজ তৈরির কাজ প্রায় শেষ হতে চলেছে। দিশারী সংকল্প নমে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষে শিক্ষক তুহিনশুভ্র মন্ডল জানান, প্রতি বছর এই জেলা থেকে প্রায় ১৫ হাজার ছাত্রছাত্রী স্নাতক হলেও তার প্রায় ৮০ শতাংশ ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেননা পার্শ্ববর্তী জেলা কিংবা দূরবর্তী জেলায় গিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের মতো আর্থিক সামর্থ্য ও পরিস্থিতি বেশির ভাগেরই নেই বলে তিনি দাবি করেন। জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় হলে এই পরিস্থিতি বদলাবে এবং উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবেন স্থানীয় ছাত্রছাত্রীরা।

ইতিমধ্যে বালুরঘাট কলেজের শিক্ষক আশিস দাস সহ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নাগরিকদের পক্ষ থেকে বালুরঘাটে একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রেক্ষাপট ও গুরুত্ব বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। স্থানীয় মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর মাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ রাষ্ট্রপতির কাছেও পুনরায় দাবি সনদ পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্যুষ নামে একটি সমাজসেবি সংস্থা। এদিনের আলোচনা সভায় বালুরঘাট বিএড কলেজের সম্পাদক নবকুমার দাস বলেন, ‘‘এই জেলায় প্রাচীনকালে দেবীকোট এবং জগদ্দল মহাবিহার নামে দুটি বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। তথাপি দেশের স্বাধীনতার পর থেকে উচ্চশিক্ষা প্রসারে বঞ্চিত সীমান্তবর্তী এই জেলার মানুষ।’’

বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার মতো প্রয়োজনীয় ৩০০ বিঘা সরকারি খাস জমিও বালুরঘাটের খাসপুর এলাকায় রয়েছে বলে বক্তব্যে তুলে ধরেন প্রাক্তন সমাজকল্যাণমন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী। এ ছাড়া শহরের অদূরে হোসেনপুর এবং বড় রঘুনাথপুর এলাকাতেও প্রচুর খাস জমি রয়েছে বলে উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার প্রাথমিক পরিকাঠামো থাকার কথা আলোচনায় উঠে আসে।

শিল্পহীন দক্ষিণ দিনাজপুরে কর্মসংস্থানের বিষয়টিও অত্যন্ত জরুরি বলে তুলে ধরে বিশিষ্ট নাগরিকেরা বলেছেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র শিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতা করে না, কর্মসংস্থানেরও সহায়ক হয়। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিভিন্ন প্রকার কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন কর্মসংস্থানের পথেও একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হবে। এ জেলায় সড়ক যোগাযোগ পথ ও রাস্তাঘাটের উন্নতি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পক্ষে যা সহায়ক পরিকাঠামো কাজে লাগানো যাবে বলে উল্লেখ করে তুহিন বলেন, ‘‘এ জেলার কৃষি ও মৎস্য সম্পদের কার্যকারিতার পথে দিশা দেখতে পারে গবেষণা। কৃষি, মৎস্য, পরিবেশ সম্পর্কে গবেষণা করে সঠিক অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। তাকে যাথার্থ্য প্রদান করতে পারে একটি বিশ্ববিদ্যালয়।’’ আপাতত এদিনের আলোচনা সভা থেকে দাবি সনদ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে মন্ত্রী, সাংসদ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE