রাজ্য সরকারের প্রকাশ করা গেজেট বিজ্ঞপ্তিকে কেন্দ্র করে ভক্তিনগর থানা এলাকা কোন জেলায় থাকবে তা নিয়ে ফের টানাপড়েন তৈরি হয়েছে।
গত ১০ অক্টোবর রাজ্য সরকারের ‘কলকাতা গেজেটে’ নব গঠিত আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি, এই দুই জেলার থানার তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকায় দেখা যায়, জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের এক্তিয়ারে থাকা ৮টি থানার তালিকায় ভক্তিনগরের নাম নেই। গত বুধবার ওই নির্দেশ জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের কাছে এসে পৌঁছতেই শুরু হয় বির্তক।
জলপাইগুড়ি জেলার ১৭টি থানার মধ্যে ৮টি থানা নতুন আলিপুরদুয়ার জেলায় গিয়েছে। সে হিসেবে জলপাইগুড়িতে ভক্তিনগর নিয়ে ৯টি থানা থাকার কথা থাকলেও, সরকারি গেজেটে ভক্তিনগরকে জলপাইগুড়ি জেলায় দেখানো হয়নি বলে জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ। দু’বছর ধরেই ভক্তিনগর থানা শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের আওতাধীন। যদিও, প্রশাসনিক ভাবে ভক্তিনগর এলাকা জলপাইগুড়ি জেলাশাসকের নিয়ন্ত্রনাধীন। আইনজীবী সহ জলপাইগুড়ির বিভিন্ন সংগঠনের অভিযোগ, সরকারি গেজেট নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
জলপাইগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে গেজেটের বিরোধিতা করে হাইকোর্টে যাওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আগামী সোমবার হাইকোর্টে ‘রিট পিটিশন’ দাখিল হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।
ভক্তিনগর থানা কোন জেলার আদালতের আওতায় থাকবে, তা নিয়ে গত দু’বছরের বেশি সময় ধরে টানাপড়েন চলছে। ২০১২ সালের অগস্ট মাসে শিলিগুড়িতে পুলিশ কমিশনারেট গঠন করে রাজ্য সরকার। সে সময়ে শিলিগুড়ি লাগোয়া জলপাইগুড়ি জেলার ভক্তিনগর থানা এলাকাকেও কমিশনারেটের আওতায় নিয়ে আসা হয়। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনও শুরু হয় জলপাইগুড়িতে।
আন্দোলন-বিক্ষোভের পরে সিদ্ধান্ত হয় ভক্তিনগর থানা শিলিগুড়ি কমিশনারেটে চলে গেলেও, জলপাইগুড়ি জেলা জজ তথা জেলা আদালতের এক্তিয়ারেই থাকবে এই থানা। এর ফলে থানা হিসেবে শিলিগুড়িতে থাকলেও, বিচারবিভাগ এবং সাধারণ প্রশাসনিক দিক থেকে ভক্তিনগর জলপাইগুড়িতেই থাকল বলে দাবি করা হয়। যদিও ভক্তিনগরের একাংশ বাসিন্দা এবং সংগঠনের তরফে আবার থানার মতো বিচারবিভাগ এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও শিলিগুড়ির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার দাবি ওঠে। জলপাইগুড়ির সঙ্গে দূরত্ব বেশি হওয়ায় বাসিন্দাদের যাতায়াতে সমস্যা হয় বলে অভিযোগ তোলে শিলিগুড়ি বৃহত্তর নাগরিক মঞ্চও।
চলতি মাসে গেজেট বিজ্ঞপ্তি সেই বির্তককে ফের চাগিয়ে তোলে। আলিপুরদুয়ার জেলা গঠনের সময়েই জেলার ‘অঙ্গচ্ছেদে’র প্রতিবাদে জলপাইগুড়িতে আন্দোলন শুরু হয়।
চলতি মাসে গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারির পরে আন্দোলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অভিনন্দন চৌধুরী বলেন, “নাগরিক কনভেনশন থেকে শুরু করে, অবস্থান বিক্ষোভের একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।”
তাঁর কথায়, “হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনও ভাবেই ভক্তিনগরকে জলপাইগুড়ির আওতার বাইরে নিতে দেওয়া হবে না।”
তবে একাংশ আইনজীবীদের দাবি, বিজ্ঞপ্তিতে কোনও ধন্দ নেই। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে দুই জেলার পুলিশ সুপারদের এক্তিয়ারে থাকা থানার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ভক্তিনগর থানা জেলা পুলিশ সুপারের অধীনে নেই, তাই তালিকাতেও থাকার কথা নেই বলে তাদের দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy