Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ভোটারদের প্রভাবিত করেছেন মন্ত্রী, অভিযোগ

পুনর্নির্বাচন চলাকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং দলের সাংসদ বুথ লাগোয়া এলাকায় দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পাটেশ্বরী প্রাথমিক স্কুলের বুথে পুনর্নির্বাচন হয়। এ দিন পুনর্নির্বাচন চলাকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব এবং জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন ওই এলাকায় যাওয়া এবং দীর্ঘ সময় সেখানে দলের ক্যাম্প অফিসে বসে ছিলেন বলে অভিযোগ।

শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পুনর্নিবাচনকেন্দ্রের সামনের দলের বুথে বসে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।

শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পুনর্নিবাচনকেন্দ্রের সামনের দলের বুথে বসে রয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১২
Share: Save:

পুনর্নির্বাচন চলাকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং দলের সাংসদ বুথ লাগোয়া এলাকায় দীর্ঘক্ষণ বসে থেকে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার শিলিগুড়ির ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে পাটেশ্বরী প্রাথমিক স্কুলের বুথে পুনর্নির্বাচন হয়। এ দিন পুনর্নির্বাচন চলাকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব এবং জলপাইগুড়ির সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন ওই এলাকায় যাওয়া এবং দীর্ঘ সময় সেখানে দলের ক্যাম্প অফিসে বসে ছিলেন বলে অভিযোগ। ওই ওয়ার্ডের সিপিএম, কংগ্রেস এবং বিজেপি’র প্রার্থীরা তা নিয়ে রিটার্নিং অফিসার, পর্যবেক্ষক, নিবার্চন ওসি-কে জানান। তবে তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।

নিবার্চন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটাররা প্রভাবিত হতে পারে বলে মন্ত্রী বা সাংসদের মতো কেউ ভোট কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকতে পারেন না। মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, ‘‘নিবার্চন কমিশনের নিয়মে বলা রয়েছে বুথের ১০০ মিটারের মধ্যে মন্ত্রী, সাংসদরা বা ভোটারদের প্রভাবিত করে হবে এমন কেউ থাকতে পারবেন না। অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা সেটা খতিয়ে দেখেছি। কিন্তু কাউকে দেখতে পাইনি। তা ছাড়া লিখিত ভাবে কোনও অভিয়োগও দফতরে পাঠানো হয়নি।’’ নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক ওসি (ইলেকশন) প্রদীপ দাস জানান, অভিযোগ পেয়ে অফিসাররা তা খতিয়ে দেখতে গিয়েছিলেন। তবে মন্ত্রী বা সাংসদ কাউকে তাঁরা দেখতে পাননি।

মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই চলা হয়েছে। ১০০ মিটারের অনেক বাইরে দলের ক্যাম্প অফিসে কিছুক্ষণ ছিলাম। সেখানে বিজেপি’র ক্যাম্প অফিসও ছিল। তাতে অসুবিধার কী আছে বুঝতে পারছি না?’’ মন্ত্রীর মতো জলপাইগুড়ির তৃণমূলের সাংসদ বিজয় চন্দ্র বর্মনও জানিয়েছেন বুথ থেকে দূরে দলের ক্যাম্প অফিসে তিনি মন্ত্রীর সঙ্গে কিছুক্ষণ বসে ছিলেন। পরে উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে যোগ দিতে যান। তিনি বলেন, ‘‘বৈঠকে যোগ দিতে এসেছিলাম। তাঁর ফাঁকে ওই এলাকায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।’’ মন্ত্রী, সাংসদ ছাড়াও দলের প্রাক্তন কাউন্সিলর দুলাল দত্ত, কৃষ্ণ পালদের মতো অনেক নেতারাই সেখানে এ দিন সকাল থেকে ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন বলে অভিযোগ।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ বিজেপি প্রার্থী দীপায়ন বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, মন্ত্রী ভোটকেন্দ্রের কিছুটা দূরে দলের নেতাদের নিয়ে সাড়ে আটটা থেকে তিন ঘন্টা ঠায় বসেছিলেন। বাসিন্দারা ভোট দিতে যাওয়ার আগে মন্ত্রী তাঁদের অনেকর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। কথা বলে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেন, ‘‘রিটার্নিং অফিসার দীপাপ প্রিয়া, ওসি (ইলেকশন)-সহ সকলকেই অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।’’

তা ছাড়া মন্ত্রী সাংসদ সেখানে দীর্ঘ সময় বসে থাকলেও নিবার্চনের অফিসাররা অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সময় কেন তাকে দেখতে পেলেন না তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। ওই ওয়ার্ডের কংগ্রেস এবং সিপিএমের প্রার্থী সন্তোষ রায় এবং জগলাল রায় আলাদাভাবে একই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরাও মহকুমাশাসক-সহ বিভিন্ন জায়গায়

এ ব্যাপারে অভিযোগ জানান। বিজেপি’র দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু বলেন, ‘‘মন্ত্রী অনেককে নিয়ে বুথের কাছে ক্যাম্প অফিসে বসেছিলেন। ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। মোবাইলে এসএমএস পাঠিয়ে অভিযোগ করেছিলাম। প্রয়োজনে এ ব্যাপারে আইনের দ্বারস্থ হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE