Advertisement
০৭ মে ২০২৪

‘মিথ্যা মামলা’, বিক্ষোভ কংগ্রেসের

কংগ্রেসের নেতাদের তৃণমূল মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে অভিযোগ তুলে উত্তর দিনাজপুর জেলায় ন’টি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস।

ইসলামপুরে বিক্ষোভ-মঞ্চে্র।

ইসলামপুরে বিক্ষোভ-মঞ্চে্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:০৮
Share: Save:

কংগ্রেসের নেতাদের তৃণমূল মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে অভিযোগ তুলে উত্তর দিনাজপুর জেলায় ন’টি থানার সামনে বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস।

মঙ্গলবার কংগ্রেসের নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা জেলার রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, ইটাহার, করণদিঘি, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া, ইসলামপুর ও চোপড়া থানার সামনে দুপুর ২টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একযোগে বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভ চলাকালীন ইসলামপুর, চোপড়া, গোয়ালপোখর ও চাকুলিয়া থানার সামনে গিয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে দেখা যায় রায়গঞ্জের প্রাক্তন সাংসদ দীপা দাশমুন্সিকে। রায়গঞ্জ থানার সামনে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বে বিক্ষোভে সামিল হন দলের নেতা, কর্মী ও সমর্থকেরা।

কংগ্রেসের দাবি, এদিন জেলার নয়টি থানা মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার কর্মী সমর্থক বিক্ষোভে সামিল হন। দীপা জানান, বুধবার ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা ধর্মঘটকে আইএনটিইউসি সমর্থন করেছে।

মোহিতবাবু বলেন, ‘‘জেলার মাটি কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। তাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে জেলার একাধিক কংগ্রেস নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘কংগ্রেসের কেউ তৃণমূলের উপর হামলা চালায়নি। উল্টে তৃণমূলের সমর্থকেরা কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। পুলিশ শাসক দলের হয়ে কাজ করছে।’’

জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘পুলিশের কাছে আমাদের আবেদন, জেলায় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে শাসক দলের চাপে পড়ে কোনও বেআইনি কাজ করবেন না। আমাদের বিশ্বাস, গণতন্ত্র ও সংবিধান মেনে আপনারা তদন্ত করলে আমাদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মিথ্যা মামলা দায়ের হত না।’’

জেলা যুব কংগ্রেসের সহকারী সভাপতি তুষারকান্তি গুহ ও ছাত্র পরিষদের রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ সাহা এদিন বিক্ষোভ মঞ্চ থেকে সুর চড়িয়ে পুলিশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে দাবি করেন, কংগ্রেসের কোনও নেতা বা কর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হলে বা অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহার করা না হলে দলের যুব ও ছাত্র সংগঠনের সমর্থকেরা জেলা জুড়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। সেই সময় আইনশৃঙ্খলার কোনও অবনতি হলে তার দায় পুলিশ ও শাসক দলকে নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ অগস্ট কংগ্রেসের ডাকা বাংলা বনধের দিন বিভিন্ন সরকারি দফতরে পিকেটিং করে ফেরার পথে কংগ্রেসের নেতা কর্মীদের লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে মারধর করে পিস্তল দেখিয়ে খুনের হুমকি দিয়ে টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র সমর্থকদের বিরুদ্ধে। হামলায় জখম হন রায়গঞ্জের কমলাবাড়ি ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান বিষ্টুচন্দ্র বর্মন, ওই পঞ্চায়েতের কংগ্রেস সদস্য চন্দন দাস সহ সাত জন কংগ্রেস কর্মী। ওই ঘটনার পর কংগ্রেসের তরফে আইএনটিটিইউসি-র ১২ জন সমর্থকের বিরুদ্ধে কর্ণজোড়া পুলিশ ফাঁড়িতে লাঠিসোটা, লোহার রড ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই অভিযোগ দায়ের হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যে আইএনটিটিইউসি-র তরফে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত, দলের জেলা সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ, সন্দীপ বিশ্বাস, রায়গঞ্জ লোকসভা এলাকার যুব কংগ্রেস সভাপতি মানসকুমার ঘোষ, রায়গঞ্জের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর হারাধন দাস, রায়গঞ্জ শহর যুব কংগ্রেস সভাপতি অভিজিৎ সাহা, রায়গঞ্জ ব্লক যুব কংগ্রেস সভাপতি তুষার রায়, রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কংগ্রেসের কর্মাধ্যক্ষ অনিমেষ দেবনাথ, কংগ্রেস কর্মী অভিজিৎ চন্দ্র বর্মন ও বাপ্পা মজুমদারের বিরুদ্ধেও পাল্টা লাঠিসোটা, লোহার রড ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ দু’পক্ষের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে।

দীপা বলেন, ‘‘এলাকার কংগ্রেস নেতাদের মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে। ইসলামপুরের ভূজাগাও এলাকাতে স্কুল নির্বাচনের সময় কংগ্রেসের উপর হামলা হয়েছে। পুলিশের নিস্ক্রিয় ভূমিকার জন্য তারা মদত পেয়েছে। এমনকি এলাকাতে ধর্ষিতার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলাতে পুলিশ ধর্ষিতার বাবাকে গ্রেফতার করছে। তবে এ ভাবে কংগ্রেসকে দমানো যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE