মারোয়াড়ি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অমিত মিত্র ও ডেরেক ও’ব্রায়েন। শুক্রবার শিলিগুড়ির এক হোটেলে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
ভোটের আগে শিলিগুড়িতে মারোয়াড়ি সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘রাজ্য সরকার ব্যবসায়ীদের পাশে আছে’ বলে বার্তা দিলেন অমিত মিত্র। শিল্প এবং অর্থমন্ত্রী সরকারের ‘পাশে থাকার’ অনুরোধ জানালেন ব্যবসায়ীদেরও। লোকসভা ভোটের বাজারে রাজ্যের মারোয়াড়ি সমাজের মন পেতে সম্প্রতি এক বৈঠকী-সভায় কিছু অ-বাংলাভাষী ব্যবসায়ীর সঙ্গে ‘আড্ডা’ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঝেরহাটের সেই সভায় ‘নানা কথার মধ্যে’ মারোয়াড়ি-সমাজকে কাছে টানার চেষ্টা দেখেছিলেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকেরা।
ঐতিহ্যগত ভাবে এ রাজ্যের অ-বাংলাভাষী ভোটের বেশিটাই যায় কংগ্রেস এবং বিজেপি-র ভোট-বাক্সে। তার উপরে এ বার নরেন্দ্র মোদী নিয়ে উদ্দীপনা রয়েছে। তৃণমূল অন্দরের খবর, সে সব মাথায় রেখেই মারোয়াড়ি সমাজকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা হয়েছে। দলনেত্রীরই নির্দেশে আসরে নেমেছেন অমিত মিত্র। দোল উৎসব উদ্যাপনের অনুষ্ঠান উপলক্ষে যিনি শুক্রবার হাজির ছিলেন শিলিগুড়ির একটি হোটেলে। সঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব, রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।
প্রথমে প্রশ্নোত্তর-পর্ব। সেখানে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ শোনেন অমিতবাবু। বলেন, “ভোটের আচরণবিধি জারি থাকায় আশ্বাস দিচ্ছি না। তবে বলছি, আবার আসব আপনাদের কাছে।”
পরে অন-লাইনে স্ট্যাম্প ফি চালু করে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে রাজ্যের জমি বা সম্পত্তি কেনাবেচা করার সুবিধে মেলার কথা এ দিন ব্যবসায়ীদের জানান অমিতবাবু। জানান, শিল্পস্থাপন প্রক্রিয়ায় গতি আনতে কোনও সংস্থার রেজিস্ট্রেশনের আগে সরকারি অফিসারদের ‘পরিদর্শন-প্রথা’ বন্ধ করেছেন। ছোট, ক্ষুদ্র বা মাঝারি ব্যবসায়ীদের নথিভুক্তি বা বিভিন্ন বিষয়ে অনুমতি গ্রহণের পদ্ধতি সরল করেছে রাজ্য সরকার। ই-টেন্ডার প্রক্রিয়া কার্যকরী হয়েছে।
সভায় জমি-প্রসঙ্গও টানেন অর্থমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “জমি নিয়ে নানা সময়ে অনেক কথা হয়। রাজ্য সরকারের শিল্প উন্নয়ন নিগমের হাতে ছোট এবং মাঝারি শিল্পের জন্য প্রচুর জমি রয়েছে। সে জমি আপনারা ব্যবহার করুন। সব রকম পরিকাঠামো আমরা তৈরি করে দেব।” আলোচনায় রাজ্যে প্রবেশ করের বিষয়টিও আসে। অর্থমন্ত্রীর দাবি, “রাজ্যে যে প্রবেশ কর চালু হয়েছে, তা অন্য রাজ্যগুলির তুলনায় কম। এই কর থেকে পাওয়া অর্থ রাজ্যে ব্যবসার পরিকাঠামোর উন্নতির জন্যই ব্যবহার করা হয়।”
আগাগোড়া হিন্দিতে বক্তব্য রাখা অমিতবাবু সভার শেষে বলেছেন, “বর্তমান রাজ্য সরকার পাহাড় এবং জঙ্গলমহল শান্ত করেছে। এতে ব্যবসায়ীদেরও সুবিধে হয়েছে। রাজ্য সরকার আপনাদের পাশে রয়েছে। আপনারাও সরকারের পাশে থাকুন, সরকারের হাত শক্তিশালী করুন।”
মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “শিল্প এবং অর্থদু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতর যিনি দেখেন, সেই অমিত মিত্র বলছেন, এটা ব্যবসায়ীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যবসায়ী কমল মিত্তল, দিলীপ দুগ্গলেরা বলছেন, “ভোট হোক বা না হোক, অমিতবাবুকে হাতের কাছে পাওয়াটাই বড় ব্যাপার।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy