পরিদর্শকের অভাবে বন্ধ নিয়মিত নজরদারি। আর এরই সুযোগে মালদহ জেলার রেশন দোকানগুলিতে ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে বলে অভিযোগ। যার ফল ভোগ করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এর জন্য প্রশাসনিক উদাসীনতাকেই দায়ী করেছেন তাঁরা।
তাঁদের অভিযোগ, রেশন দোকানগুলির মালিকরা নিজেদের খেয়াল খুশি মতো দোকান চালাচ্ছেন। রেশনে কতটা পরিমাণে পণ্য দেওয়া হবে, তার কোনও বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়না। অনেক সময়ই বরাদ্দের থেকে কম পরিমাণে পণ্য বিলি হয়। বিষয়টি জানলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়না। এই বিষয়ে মালদহ জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মিলন দাস বলেন, রেশন দোকান গুলিতে ব্যাপক দূর্নীতির অভিযোগ পাচ্ছি। সাধারন মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন। আমরা পরিদর্শনে গিয়ে বেশ কিছু রেশন ডিলারকে হাতেনাতে ধরেছি।’’ তাঁর বক্তব্য, সংশ্লিষ্ট দফতরে পর্যাপ্ত আধিকারিক নেই। তাই অসুবিধা সৃষ্টি হচ্ছে। জেলার রেশন দোকানগুলিতে নিয়মিত পরিদর্শন দরকার।
জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলার ১৫টি ব্লকে মোট ৭৬১টি রেশন দোকান রয়েছে। কেরোসিনের দোকান রয়েছে ১০৭৯টি। দোকানের সংখ্যা প্রচুর হলেও নজরদারি চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় আধিকারিক নেই। জেলায় রেশন দোকানগুলিতে নজরদারি চালানোর জন্য পরিদর্শকের পদ রয়েছে ৩৩টি। বছর খানেক ধরে সব পদই শূন্য বলে জানা গিয়েছে। সেই সঙ্গে জেলাতে ইন্সপেক্টরের পদ রয়েছে ১৬টি। এরমধ্যে চারটি পদ শূন্য রয়েছে। ফলে পরিদর্শন করতে হলে এই ইন্সপেক্টরদেরই যেতে হয়। আবার রেশনে পণ্য পাঠানোর ব্যবস্থা থেকে শুরু করে হিসেব নিকেশও রাখতে হয় এই ইন্সপেক্টরদেরই। যার জন্য নিয়মিত রেশনের দোকানগুলিতে নজরদারি চালানো তাঁদের পক্ষে সম্ভব হয় না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলাতে সেপ্টেম্বর মাসের শুরুদিকে রেশনের দোকানগুলিতে পরিদর্শন চালানো হয়েছিল। সেই সময় চাঁচল এবং রতুয়ার ছ’জন রেশন ডিলারকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পুজোর পর জেলাতে আর কোনও রেশনের দোকানে নজরদারি চালানো হয়নি বলে দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। নিয়মিত নজরদারি না চালানোর পর রেশনের দোকানগুলিতে অনিয়ম বাড়ছে বলে অভিযোগ। দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশনে কত পরিমাণে পণ্য মজুত রয়েছে, গ্রাহকদের কত পরিমাণে পণ্য দেওয়া হবে তার তালিকা তৈরি করে নোটিশ বোর্ডে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া রেশনে কি কি পণ্য মজুত রয়েছে তারও তালিকায় রাখতে হবে।
এমন নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ রেশনের দোকানে কোনও তালিকা থাকে না বলে অভিযোগ। সেই সঙ্গে মাথাপিছু বরাদ্দও কম দেওয়া হয়। আবার রেশন ডিলাররা গ্রাহকদের জোর করে সাবান, চা, সরষের তেলের মতো পণ্যগুলি নিতে বাধ্য করে বলেও তাঁদের অভিযোগ। বাজারে এই পণ্যগুলির দাম তুলনামুলক ভাবে অনেক কম। তাই বেশি অর্থ দিয়ে সরকারি দোকান থেকে কেন কিনতে হবে সেটাই তাঁদের প্রশ্ন। এই বিষয়ে জেলা খাদ্য দফতরের নিয়ামক আনন্দ বায়েলী বলেন, ‘‘সমস্যার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খুব শীঘ্রই সমস্যা মেটানো হবে আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy