কাজ করছেন শোলাশিল্পীরা।—নিজস্ব চিত্র।
খাল-বিল, জলাশয় উজিয়েও দেখা মিলছে না শোলার। এ বার বৃষ্টি পরিমাণে কম হওয়াতে শোলা-গাছের স্বাভাবিক বৃদ্ধি হয়নি বলে জানা গিয়েছে। সে কারণেই দেবী দুর্গা এবং তাঁর ছেলে-মেয়েদের শোলার পরিবর্তে থার্মোকলের মুকুট পরতে হবে। কোচবিহারের ভেটাগুড়ির মালাকার পাড়ার শিল্পীরা থার্মোকল দিয়েই মালা, মুকুট-সহ দেবীর অঙ্গসজ্জার নানা গয়না তৈরি করছেন। সারা বছরই শোলা দিয়ে নানা হাতের কাজ তৈরি করেন এই শিল্পীরা। পুজোর সময়ে চাহিদা বেশি থাকাতে আয়ও বেশি হয় তাঁদেরয় এবারে শোলার আকাল তৈরি হওয়া, থার্মোকলে কাজ করে আয়-ও কম বলে শিল্পীরা দাবি করেছেন।
কোচবিহার শহর থেকে অন্তত ১৫ কিলোমিটার দূরে ভেটাগুড়ির একটি গ্রামে দু’শোরও বেশি মালাকার পরিবার রয়েছে। শিল্পীরা জানান, শোলা দুই ধরনের। একটি কাঠশোলা, অন্যটি ভাটশোলা। পাঁচ থেকে ছয় ফুট লম্বা হয় ওই গাছ। অপেক্ষাকৃত নরম ভাট শোলা দিয়েই গয়না তৈরি করতে পছন্দ করেন মালাকাররা।
ভেটাগুড়ির বাসিন্দা জ্ঞানেন্দ্র মালাকার, তাপস মালাকাররা জানান, বিভিন্ন জলাশয় থেকে তাঁরা ভাটশোলা সংগ্রহ করে থাকেন। একেক জন শিল্পীর ১০ হাজারটি শোলা প্রয়োজন। সেখানে এবার এক জন শিল্পী এক থেকে দেড় হাজার শোলা পেয়েছেন। তার বেশিরভাগটাই অসম থেকে আনতে হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। এবারের বর্ষায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়াতেই এই বিপত্তি বলে দাবি করেছেন শিল্পীরা। বৃষ্টি কম হওয়ায় খাল, বিলে জল কম ছিল। সে কারণেই শোলা-সঙ্কটের শুরু বলে জানানো হয়েছে। এমনকী বাজারেও শোলা মিলছে না। জ্ঞানেন্দ্রবাবু বলেন, “শোলা না পেয়ে থার্মোকলের দ্বারস্থ হতে হয়েছে। যদিও, থার্মোকলের চাহিদা কম।” এক শিল্পীর কথায়, “প্রতিবারই পুজোর সময় দশ হাজার টাকা জমাতে পারতাম। এবারে থার্মোকল ব্যবহারের জন্য লাভ অনেকটাই কম হবে বলে মনে হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy