ছবি: সংগৃহীত
সকালে খুশির মেজাজই ছিল। বিকেলে খোঁজ শুরু হল নামার গাড়ির।
সৌমেন্দু হাজরা, শিবশঙ্কর দাস, সোমা চট্টোপাধ্যায়দের মতো পর্যটকদের অনেকেরই ইচ্ছে ছিল কুইন অব হিলসে আরও ক’টা দিন কাটাতে। আজ, সোমবার থেকে সরকারি অফিসে অনির্দিষ্টকালের বন্ধ ঘোষণা করলেও মোর্চাও জানায় বাজার, হোটেল, দোকানপাট, পরিবহণ সব খোলা থাকবে। পর্যটনের কোনও সমস্যা নেই। খোদ বিমল গুরুঙ্গ পর্যটকদের কাছে দুঃখপ্রকাশও করেন। তাতেই গোলমাল কাটিয়ে পাহাড়ে পর্যটন দ্রুত ছন্দে ফিরবে এমন আশা ছিল। কিন্তু রবিবার মোর্চার কর্মীদের গ্রেফতারের খবর চাউর হতেই পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে মোর্চা শিবিরে। গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘পুলিশ বাধা দিলে, লাঠি, গুলি চালালে আন্দোলনের তীব্রতা আরও বাড়বে। পাহাড়ের পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। সোমবার থেকে আরও গোলমাল হতে পারে। সেটা বুঝে পর্যটকদের পাহাড় ছেড়ে চলে যাওয়াই ভাল।’’ মোর্চার রাতারাতি ভোলবদলে আশঙ্কার মেঘ জমছে পর্যটন মহলেও।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘গুরুঙ্গ যা বলছেন তা অনভিপ্রেত, হঠকারী। পর্যটকরা কোথায় যাবেন তা উনি ঠিক করে দেবেন না।’’ তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ের অর্থনীতি পর্যটন নির্ভর। সেখানে পর্যটকদের চলে যেতে বলার অর্থ যেই ডালে বসে রয়েছে সেই ডাল কাটতে বলা।’’ তিনি জানান, তাঁরা প্রশাসনিক এবং রাজনীতিক ভাবে মানুষের পাশে থাকছেন।
মোর্চার সভাপতির বক্তব্য ছড়িয়ে পড়তেই অনেকে দার্জিলিং ছেড়ে সিকিম বা ডুয়ার্সের দিকেও রওনা হয়ে যান। কলকাতার বাসিন্দা চিকিৎসক তীর্থঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ শুক্রবার দার্জিলিঙে এসেছি। কয়েক দিন থাকতে চেয়েছিলাম। কিন্তু যা শুনছি, তাতে দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’’ স্ত্রী সোমাদেবী, দেড় বছরের কোলের ছেলেকে নিয়ে তাঁরা সোমবার খুব ভোরে পাহাড় ছাড়ার কথা ভাবছেন। লখনউ-এর বাসিন্দা ওম প্রকাশ শ্রীবাস্তব পরিবারকে নিয়ে এসেছেন। তিনি ক্ষোভের স্বরে বলেন, ‘‘পর্যটকদের যাতে সমস্যা না হয়, সেটা তো সবার আগেই দেখা দরকার।’’ সোমবার পর্যন্ত থাকার ইচ্ছে থাকলেও মোর্চার সিদ্ধান্ত শোনার পর স্ত্রী ছেলেমেয়ে, বয়স্ক বাবা মা-কে নিয়ে পাহাড়ে আর থাকতে চাননি সঞ্জীব ঘোষও। এদিন দুপুরে তাঁরা পাহাড় থেকে নেমে আসেন। চিন্তায় পড়েন, সুইডেন থেকে আসা অ্যানড্রেস গ্রান্থ, আমান্দা প্রউন, জার্মানির মারিয়ে আর্নেনানের মতো বিদেশি পর্যটকেরাও।
এদিন গরমের সন্ধ্যায় ম্যাল চৌরাস্তাতেও পর্যটকদের সংখ্যা কম ছিল। অনেকে হোটেলে ছিলেন। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘একটি অনিশ্চিয়তা তো রয়েছেই। নতুন করে দার্জিলিঙে আর পর্যটকেরা যেতে চাইছেন না।’’ তিনি বলেন, ‘‘বাইরে থেকে যাঁরা আসছেন, বেশির ভাগই দার্জিলিং বাদ দিয়ে সিকিম ও ডুয়ার্সে যাচ্ছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy