ফাইল চিত্র।
পাহাড়ে অশান্তির জন্য এ বার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চাকেও কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার নেপাল সীমান্তের খড়িবাড়িতে সংগঠনের বৈঠক করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ে অশান্তির তৃণমূলই মূলত দায়ী। তবে মোর্চাও ইন্ধন দিচ্ছে। এর পিছনে দু’পক্ষেরই রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে।’’ কেন মোর্চাকে দুষছেন, সেই প্রসঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘পাহাড়ে মোর্চার সমর্থনে কিছু ঘাটতি হয়েছিল। তারা সমর্থনকারীদের কাছে টানতে একটা সুযোগ খুঁজছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষার বিষয়টি তুলে ওঁদের সুযোগ করে দিয়েছেন।’’
তবে পাহাড়-সমস্যা নিয়ে কেন্দ্র স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কিছু করতে পারবে না, সেটা তিনিও মানছেন। তিনি জানান, পাহাড়ের বিষয়টি রাজ্যের অধীনে। তাই কেন্দ্র নিজে থেকে এগোতে পারবে না। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য প্রস্তাব গ্রহণ করে সরকারি ভাবে চিঠি দিলে তবেই কেন্দ্র চেষ্টা করবে।’’ তিনি আরও জানান, মোর্চা নেতৃত্ব কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁদেরও চিঠি দিতে হবে। শুধু মুখে বলতেই চলবে না।
কিন্তু বিজেপির রাজ্য সভাপতি হঠাৎ মোর্চাকে নিশানা করলেন কেন? এই নিয়ে দু’টি যুক্তি দিচ্ছেন অনেকে। এক, এর আগে উত্তরবঙ্গে এসেই দিলীপবাবু গোর্খাল্যান্ডের শুধু নামে আপত্তি বলে বিতর্ক তৈরি করেছিলেন। তাঁর সেই কথা সমতলের অনেকেই ভাল ভাবে নেননি। এ বারে এসে সেই ক্ষতই মেরামতের চেষ্টা করলেন। দুই, মোর্চাও সম্প্রতি দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাতে শুরু করেছে। আদালতের নির্দেশে পাহাড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হলে তারও বিরোধিতা করেছে সেখানকার মানুষ। এই অবস্থায় দিলীপেরও মোর্চার বিরুদ্ধে মুখ না খুলে উপায় নেই, মনে করছেন অনেকে।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও বলেছেন, ‘‘দিলীপবাবুরা তো ঘোলা জলেই মাছ ধরতে চাইছিলেন। এ বার সামলান।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘একে মোর্চাকে ইন্ধন দিয়েছেন। তার উপরে রাজ্যে ভেদাভেদের রাজনীতি করে ফায়দা তুলতে চেয়েছেন ওঁরা। তাই ওঁর এ সব কথার কোনও উত্তরই দিতে চাই না।’’ রাজ্য বিজেপির অনেক নেতাই যে ‘বাংলা ভাগ’ চান না, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে গৌতম বলেন, ‘‘ওঁর সঙ্গে তো দলের বক্তব্যেরই ফারাক রয়েছে!’’
মোর্চার পক্ষ থেকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের তরফে আলোচনায় বসার জন্য উদ্যোগী হওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘আমরা অনেক বার কেন্দ্রকে বিষয়টি জানিয়েছি। স্মারকলিপি দিয়েছি। কেন্দ্রের এ বারে আলোচনার জন্য আমাদের ডাকা উচিত। আমরা গোর্খাল্যান্ডের দাবি নিয়েই আলোচনা করতে চাই।’’
এই অবস্থায়, আগামী ৪ অগস্ট রাজ্য বিধানসভা অধিবেশন শুরু হলে পাহাড় নিয়ে আলোচনার প্রস্তাব পেশ করবেন বলে জানিয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। অশোকবাবু জানান, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে পাহাড়ের অবস্থার কথা জানিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘বিধানসভায় পাহাড় নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন। আমি স্পিকারের কাছেও আলোচনার প্রস্তাব জমা দিচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy