কম খরচে পড়াশোনা করানোর টোপ দিয়েই নাকি কিশোর-কিশোরীদের আনা হতো দার্জিলিঙের সুখিয়াপোখরির অনুমোদনহীন হোমে। আবাসিকদের পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংস্থার থেকে অনুদানও জোগাড় করত সংস্থাটি। তবে আবাসিকদের অনেককেই কর্তৃপক্ষ স্কুলে পাঠাতেন না বলে অভিযোগ। প্রশাসনের থেকে অনুমতি নিতে গেলে যদি নজরদারি শুরু হয়ে যায়, এই আশঙ্কায় সে মুখোও হননি হোম কর্তৃপক্ষ।
এই দফায় তদন্তে নেমে এমনটাই জানতে পেরেছেন প্রশাসনের কর্তারা। অনুমোদন ছাড়া হোম চালানোর অভিযোগে পকসো ধারায় মামলাও রুজু হয়েছে। নানা অভিযোগ ওঠার পরেই চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হোম পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কর্তাব্যক্তিরা ফেরার হয়ে গিয়েছেন। খোঁজ মিলছিল না আবাসিকদেরও। কিশোর-কিশোরীদের পাচার করে দেওয়া হয়েছে কি না, তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়। প্রায় সপ্তাহ দুয়েক খোঁজের পরে প্রশাসনের দাবি, হোমের কর্ণধারের খোঁজ না মিললেও আবাসিকদের সন্ধান মিলেছে। এ কথা জানিয়ে দার্জিলিঙের জেলা পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, ‘‘আবাসিকদের কেউ নিজেদের বাড়িতে রয়েছেন। কেউ আবার অন্য নিরাপদ আশ্রয়ে আছেন।’’
জুভেনাইল জাস্টিস আইন অনুযায়ী একই হোমে কিশোর-কিশোরীদের রাখা যায় না। কোথাও হোম চালানো হলে তার যাবতীয় তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনকে জানাতে হয়। এ ক্ষেত্রে হোম চলার কথা প্রশাসন জানত না।
সম্প্রতি হোমের এক কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় প্রশাসনের নজরে আসে ঘটনাটি। তার পরে শুরু হয় তদন্ত। হোম কর্তৃপক্ষের কাছে লাইসেন্সের নথি দেখতে চাওয়ার পরে সকলে বেপাত্তা হয়ে যান। আবাসিকদেরও তিন জন ছাড়া বাকিদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। তাদের পাচার করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে রহস্য তৈরি হয়। পরে অবশ্য প্রশাসন জানায়, সকলেই ঠিক রয়েছে।
সুকিয়াপোখরির ওই হোমটির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, আবাসিকদের সেখানে রেখে পড়াশোনা চালানোর জন্য কয়েক লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছে হোমটি। প্রশাসন সেই টাকার হিসেব নিচ্ছে। অনুমোদনহীন হোমটি কী ভাবে অনুদান পায়, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি এর মধ্যে প্রশ্ন তুলেছে, অনুমোদন ছাড়া এত দিন হোমটি চলল কী করে?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy