শিশু পাচার কাণ্ডের পরে জলপাইগুড়ির নর্থ বেঙ্গল পিপলস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নামে হোমটির ১৫টি শিশুকে অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ৫টি শিশুকে রাখা হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার নওপাড়া তিওড় সমাজকল্যাণ সমিতির হোমে। ওই পাঁচটি শিশুর মধ্যে ২টি শিশুকে বিদেশে দত্তক নিয়ে পাঠানোর কথা ছিল জলপাইগুড়ির ওই হোম থেকে। তার আগেই শিশু পাচারের অভিযোগ ওঠায় ওই প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। তারপরই ওই হোমের শিশুদের দক্ষিণ দিনাজপুর, উত্তর দিনাজপুর এবং কোচবিহারের বিভিন্ন হোমে পাঠানো হয়।
গত ২২ জানুয়ারি বিশ্বজিৎ, চাঁদনি এবং প্রহ্লাদ নামে ৩টি শিশুকে এবং গত ৩ ফেব্রুয়ারি ইপসা এবং মধুরা নামে আরও ২টি শিশুকে হিলির নওপাড়া সমাজকল্যাণ সমিতির হোমের আশ্রয়ে পাঠানো হয়েছিল। ৮ মাসের শিশুকন্যা ইপসাকে ইতালি এবং ৯ মাসের মধুরাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানোর কথা থাকলেও দিল্লি থেকে ওই সংক্রান্ত এনওসি বাতিল করা হয় জলপাইগুড়ি কাণ্ডের পর। তবে তিওড় ন’পাড়া সমাজকল্যাণ সমিতির হোম সুপার জীতেশ দেবনাথ জানান, মধুরাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবার দিল্লি থেকে তাঁদের কাছে এনওসি এসেছে। হোমের তরফে প্রশাসন এবং পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে নথি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিদেশে দত্তকের বিযয়ে সরকারি নিয়ম মেনে নথিপত্র দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিওড়ের ন’পাড়ার ওই হোমে পাঠানো পাঁচটি শিশু মিলিয়ে বর্তমানে মোট ১১টি অনাথ বাচ্চা রয়েছে। যাদের বয়স ৬ মাস থেকে ৯ বছর। হোমে গিয়ে দেখা যায়, মায়ের স্নেহে দুধের শিশুদের দেখাশোনা করছেন আয়ারা। হোমের কর্ণধার তথা বঙ্গরত্ন প্রাপ্রক অমূল্যরতন বিশ্বাস বলেন, ‘‘শিশুদের চিকিৎসকেরা নিয়মিত পরীক্ষা করেন। নার্সরাও শিশুদের যত্ন করেন।’’
জলপাইগুড়ির ওই হোম থেকে চার শিশুকে নিয়ে আসা হয়েছে কোচবিহারের বাণেশ্বরের দত্তক হোমে। যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে শিশুদের ওই হোম, তাদেরই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের একটি স্বল্পকালীন আবাস। সেখানকার তিন আবাসিক ফিনাইল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। ওই এনজিও-র এক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আবাসিক দুই তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগও ওঠে। তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে। শুধু তাই নয়, ওই হোমে আবাসিকদের ঠিক ভাবে খাবার ও জামাকাপড় দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ। এর পরে ফের ওই এনজিওর অধীনেই একটি হোমে কী করে ওই শিশুদের রাখা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তবে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান স্নেহাশিস চৌধুরী অবশ্য জানান, স্বল্পকালীন আবাসের সঙ্গে শিশুদের হোমের কোনও সম্পর্ক নেই। শিশুদের হোমের পরিকাঠামো আলাদা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy