শুল্ক দফতরের ছাড়পত্র মিলেছে। আগামী মাস থেকেই রাধিকাপুর স্টেশন থেকে বাংলাদেশের ট্রেন ছাড়বে। আপাতত শুধু পণ্য পরিবহণ হবে। পরে দু’দেশের মধ্যে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের প্রস্তাবও বিবেচনা করছে রেল কর্তৃপক্ষ।
উত্তর দিনাজপুর জেলার এই স্টেশন থেকে বাংলাদেশে পণ্য পরিবহণ এই প্রথম নয়। এক সময়ে এ প্রান্ত থেকে সার, কয়লা, ফল বাংলাদেশে যেত। দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে পরিবহণ বন্ধ। সম্প্রতি রেলের তরফে প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করে রাধিকাপুর স্টেশনে নতুন করে পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। গুদাম তৈরির কাজও শুরু হয়েছে। তবে আপাতত এ দেশ থেকে বাংলাদেশে পণ্য রফতানি হবে। আমদানি শুরু হতে আরও কিছু দিন প্রয়োজন বলে রেলের তরফে জানানো হয়েছে। এই লাইন ব্যবহার হবে বাংলাদেশ-নেপাল পণ্য চলাচলেও।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নিউ জলপাইগুড়ির সিনিয়র এরিয়া ম্যানেজার পার্থসারথি শীল বলেন, ‘‘শুল্ক দফতরের ছাড়পত্র আসার পরে পণ্যবাহী রেক চালানোয় আর কোনও বাধা থাকল না। আশা করছি শীঘ্রই যাতায়াত শুরু হবে।’’
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী উত্তর দিনাজপুর জেলার রাধিকাপুর স্টেশন থেকে এক সময়ে মিটারগেজ লাইনে পণ্যবাহী রেক চলাচল করত। ছোট লাইনে রেক পাওয়া পরে সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। ভারতের অংশে লাইন ব্রড গেজ হলেও বাংলাদেশে সে পরিকাঠামো না থাকায় রেক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সম্প্রতি নতুন লাইন পাতা সহ অন্য পরিকাঠামো বরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় সরকার। রাধিকাপুর থেকে বাংলাদেশের বিরল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিনশো মিটার মিটার গেজ লাইন তুলে ফেলে সম্প্রতি ব্রড গেজ পাতা হয়। চলতি মাসে শুল্ক দফতরের অনুমতিও চলে এসেছে রেলের তরফে। নজরদারির জন্য রাধিকাপুরে শুল্ক দফতরের বিশেষ ইউনিট তৈরি হয়েছে। প্রথম দফায় বালি-পাথর ভর্তি কয়েকটি রেক চালু হবে রাধিকাপুর থেকে।
রেলের এক কর্তা জানিয়েছেন শুধু রাধিকাপুর-বিরল নয়। পরে নেপাল-ভূটানের সঙ্গে রেলপথে বাণিজ্য শুরু হবে উত্তরবঙ্গে। হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথ তৈরি হয়ে রয়েছে। ওই লাইনে চলাচল শুধু রেলের সবুজ সঙ্কেতের অপেক্ষা। চলতি বছরেই ওই লাইনে চলাচল শুরু হতে পারে বলে রেলের দাবি। তবে সেখানে পণ্যবাহী রেক নয় যাত্রীবাহী ট্রেন চালানোর প্রস্তাব রয়েছে রেলের। বাকি শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার চূড়ান্ত অনুমোদন। দ্রুত রেল-বাণিজ্য চাইছিল বিভিন্ন বণিক সংগঠনগুলিও। রাধিকাপুর থেকে বাংলাদেশে বাণিজ্য শুরু হলে উত্তর দিনাজপুর জেলা তো বটেই উত্তরবঙ্গের ব্যবসায়ীদের সামনেও নতুন সুযোগ খুলে যাবে বলে আশা সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ চ্যাপ্টারের জোনাল সদস্য সুজিত রাহা। তিনি বলেন, ‘‘রেলের কাছে অনেকদিন ধরেই এই দাবি ছিল। এরপরে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি লাইনে দ্রুত রেল চলাচল শুরু করতে রেল দ্রুত পদক্ষেপ করবে বলে আশা করছি।’’ বাণিজ্য পরিবহণ শুরু হলে শুধু অর্থনীতিতে নয় দুই বাংলায় আরও বেশি করে সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে বলে মনে করছেন সুজিতবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy