Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘরে ফেরাতে পুলিশি প্রচার

জেলাশাসকের মাধ্যমে সমাজকল্যাণ দফতরকে ওই এলাকায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরুর অনুরোধ জানিয়েছে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি এ দিন তপন থানার ওসিও বাহিনী নিয়ে ওই এলাকায় যান ও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। পুলিশের তরফেও এ দিন বাসিন্দাদের মধ্যে প্রচার চালানো হয়। তবে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী চতুর হেমব্রম সহ পাঁচ জন এখনও অধরা। এলাকার বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৭ ০২:৪৩
Share: Save:

ডাইনি অপবাদে ঘরছাড়াদের গ্রামে ফেরানোর আগে বাসিন্দাদের সচেতন করতে উদ্যোগী হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ। তপনের রামচন্দ্রপুর অঞ্চলের চকভগীরথ বড়পুকুর এলাকার চারটি পরিবারের ৭ জন সদস্যকে ঘরে ফেরানোর আগে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সচেতন করার কাজ শুরু করল পুলিশ।

বৃহস্পতিবার জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ এসকর্ট দিয়ে গ্রামছাড়া পরিবারগুলিকে ঘরে ফেরানো যায়। কিন্তু তাতে ওই সামাজিক সমস্যা মিটবে না। কিছু বাসিন্দা ডাইনি ও তুকতাকের মতো কু-প্রথায় বিশ্বাসী। তাদের সঙ্গে নিয়েই মাতব্বররা ডাইনি অপবাদ দিয়ে পরিবারগুলিকে ঘর ছাড়তে বাধ্য করেছেন।’’

এ দিন জেলাশাসকের মাধ্যমে সমাজকল্যাণ দফতরকে ওই এলাকায় গিয়ে মানুষকে সচেতন করার কাজ শুরুর অনুরোধ জানিয়েছে জেলা পুলিশ। পাশাপাশি এ দিন তপন থানার ওসিও বাহিনী নিয়ে ওই এলাকায় যান ও পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। পুলিশের তরফেও এ দিন বাসিন্দাদের মধ্যে প্রচার চালানো হয়। তবে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী চতুর হেমব্রম সহ পাঁচ জন এখনও অধরা। এলাকার বিধায়ক তথা প্রতিমন্ত্রী বাচ্চু হাঁসদার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন।

অভিযুক্তরা স্থানীয় বাসিন্দা সুকুরমণি মু্র্মু, লক্ষ্মী মার্ডি, কবিরাজ মুর্মু ও কল্পনা মার্ডির পরিবারকে ডাইনি অপবাদ দিয়ে জরিমানা ধার্য করে বলে অভিযোগ। শুদ্ধিকরণের জন্য পুজো করতে তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৬ হাজার টাকা ও এক মণ ধান দাবি করা হয়। গরীব পরিবারগুলি তা দিতে অপারগ বলে জানালে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হতে থাকে বলে অভিযোগ। ভয়ে ওই চারটি পরিবারের সাত সদস্য গত দু’সপ্তাহ ধরে গ্রাম থেকে পালিয়ে ভিন গাঁয়ে আত্মীদের বাড়িতে লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। বুধবার ঘরছাড়ারা বালুরঘাটে গিয়ে জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হতেই ঘটনাটি নিয়ে হইচই পড়ে যায়।

এ দিন তপনের বিডিও সিদ্ধার্থ সুব্বা বলেন, ‘‘ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট লোকজনকে নিয়ে বৈঠক হয়েছে। শুক্রবার থেকে ওই এলাকায় লাগাতার প্রচার ও সভা হবে। ঘরছাড়াদের গ্রামে ফিরে যেতে কোনও সমস্যা নেই। তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে।’’ তবে এখনও পর্যন্ত তারা গ্রামে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন ঘরছাড়া কবিরাজ, সুকুরমণি মুর্মু ও লক্ষী মার্ডির মতো বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE