নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) রেল স্টেশন থেকে অবৈধ হকার উচ্ছেদ নিয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজি ও রেল কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করতে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ওই নির্দেশ দেন।
জয়মাল্যবাবু জানিয়েছেন, অবৈধ উচ্ছেদ নিয়ে কী পরিকল্পনা ও কর্মসূচি নেওয়া হল, তা রিপোর্ট আকারে ছ’সপ্তাহ পরে আদালতে পেশ করতে হবে মুখ্যসচিবকে। পরিকল্পনা না করে এনজেপি স্টেশন থেকে অবৈধ হকার উচ্ছেদ করতে গেলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলেও এ দিন মত দেন বিচারপতি বাগচী। তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি একান্তই রাজ্যের বিষয়। তাই রেল কর্তৃপক্ষের উচিত রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বসে হকার উচ্ছেদ নিয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা করা।’’
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এনজেপিতে ৭৯ জন অবৈধ হকারের লাইসেন্সের মেয়াদ অনেক দিন আগেই ফুরিয়েছে। তাঁদের উচ্ছেদ করার অনুমতিও পেয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ। ওই উচ্ছেদকে বেআইনি বলে অভিযোগ তুলে ওই হকারেরা কয়েক মাস আগে বিচারপতি বাগচীর আদালতে মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলা খারিজ করে দেন বিচারপতি।
রেলের তরফে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল কৌশিক চন্দ জানান, মামলা খারিজ হওয়ার পরে তাঁদের উচ্ছেদ করতে চেয়ে জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপারের কাছে প্রয়োজনীয় পুলিশ মোতায়েনের অনুরোধ করা হয়েছিল। পুলিশ সুপার লিখিত চিঠি দিয়ে রেলকে জানিয়ে দেন, এর আগে বারাসত, বারুইপুর স্টেশন থেকে হকার উচ্ছেদ করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতি হয়েছে। তাই হকার উচ্ছেদের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ রাজ্য প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিতে পারেন। ওই চিঠি পাওয়ার পরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সপ্তাহখানেক আগে বিচারপতি বাগচীর আদালতে মামলা দায়ের করেছিল রেল।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের এক কর্তার দাবি, রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবের হাতেও স্টেশন ও লাগোয়া এলাকায় কোথায় কতটা জবরদখল রয়েছে তার রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। তারপরেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘রেলের সব চিঠিই নবান্নে পাঠানো হয়েছে। যেহেতু আইনশৃঙ্খলার ব্যাপক অবনতির আশঙ্কা রয়েছে তাই এই সিদ্ধান্ত শুধু জেলা প্রশাসনের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়।’’
দু’পক্ষের সওয়াল শুনে বিচারপতি মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দেন, রাজ্য পুলিশের ডিজি, সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার ও রেলকর্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসতে। কী ভাবে উচ্ছেদ হবে, কবে, কখন উচ্ছেদ হবে, কাদের উচ্ছেদ করা হবে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে ওই বৈঠকে। বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, তা রিপোর্ট আকারে ছ’সপ্তাহ পরে বিচারপতি বাগচীর আদালতে পেশ করবেন মুখ্যসচিব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy