মহিলাদের স্বল্পকালীন আবাসে তিন তরুণী ফিনাইল খাওয়ার ঘটনায় হোম পরিচালন সমিতির এক সদস্যকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শনিবার রাতেই কোচবিহার কোতোয়ালি থানার বাণেশ্বর থেকে জগদীশ (ওরফে ভজন) চৌধুরী নামে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে হোমের আবাসিকদের মারধর এবং শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ ছাড়াও পরিচালন সমিতির আরেক সদস্য ও হোমের করণিকের দায়িত্বে থাকা এক মহিলা কর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগে এফআইআরে নাম রয়েছে হোম সুপারেরও। এ দিন ধৃতকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার আগে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তাঁকে কোচবিহার এমজেএন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
কোচবিহারের জেলাশাসক পি উল্গানাথন বলেন, “তদন্ত করে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।” কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।” ভজনবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করেন।
যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওই হোম চালায় তার সম্পাদক বাবলু কার্জী বলেন, “কখনও কেউ অভিযোগ তুলতে পারেনি। এখন যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা মিথ্যে। এমন অবস্থায় আমরা আর হোম চালাতে ইচ্ছুক নই।” ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, হোমের তরুণীদের নানা ভাবে উস্কে দিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করাচ্ছেন হোম সুপার ইতি রায়। ইতিদেবী বলেন, “কী কী হচ্ছে তা তো হোমের আবাসিকরাই বলছেন। আর আমি তা প্রশাসনকে জানিয়েছি। তাতেই আমার উপরে অনেকে ক্ষুব্ধ।”
ওই হোম নিয়ে অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। গত কয়েক মাসে জেলাশাসক তিনটি তদন্ত কমিটি তৈরি করে ওই হোমের অবস্থা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। সেই তিনটি রিপোর্টেই নানা সমস্যার কথা উঠে আসে। জেলাশাসক হোম কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেন। তাতেও কাজ কিছু হয়নি।
অভিযোগ, তরুণীদের ওই হোম সুরক্ষিত নয়। ভজনবাবু সহ যে দু’জনের নাম এফআইআরে রয়েছে, তাঁরা হোমের ভিতরে গিয়ে আবাসিকদের মারধর করতেন বলে অভিযোগ। শ্লীলতাহানিরও অভিযোগও রয়েছে। সুপার অবশ্য দাবি করেছেন, মাস কয়েক আগে তিনি সুপার হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছেন। সমস্ত বিষয়গুলি তুলে ধরে জেলাশাসকের নির্দেশে কোচবিহার জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক দেবদাস বিশ্বাস এফআইআর করেন। এদিকে আজ, সোমবার জেলার সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি হোম কর্তৃপক্ষকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, “কোথাও কোনও অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি হোমের আবাসিকদের কি কি প্রয়োজন তা খতিয়ে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy