শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা যে ভাবে বাড়ছে তাতে উদ্বেগ গাঢ় হচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভার। পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার বৈঠক করেন পুর কর্তৃপক্ষ।
গত ২১ দিনে শহরের ৪০ জন নতুন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ম্যাকএলাইজা পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর এ দিন স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েই হাকিমপাড়ার রজনীকান্ত সরণির বধূ সুস্মিতা দাসের মৃত্যু হয়েছে।
শিলিগুড়ি হাসপাতালের় একটি সূত্র জানিয়েছে, অন্তত ১০০ জন রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। তাদের ৬০ শতাংশ ডেঙ্গি আক্রান্ত বলেই সন্দেহ। তা ছাড়া ম্যাক এলাইজা পরীক্ষার রিপোর্ট সময় মতো না-মেলায় পরিষেবা দিতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে চিকিৎসকদের। মশারির ছাড়াই হাসপাতালের শয্যায় সন্দেহভাজন ডেঙ্গি আক্রান্তরা। হাসপাতালের সুপার অমিতাভ মণ্ডল জানান, সমস্যা মেটাতে তাঁরা চেষ্টা করছেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘চিকিৎসা পরিষেবায় যাতে সমস্যা না হয় তা দেখা হবে। সুস্মিতাদেবী ডেঙ্গি শক সিনড্রম হয়েছে বলে ম্যাক এলাইজা পরীক্ষায় জানা গিয়েছে।’’ শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে প্লেটলেটের ব্যবস্থা না থাকায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ছুটতে হচ্ছে রোগীর আত্মীয়দের। না-হলে বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে। শহরের কলেজপাড়া, খালপাড়া, সেবক রোড়ের একাধিক নার্সিংহোমে এনএসওয়ান পজিটিভ নিয়ে অনেকে ভর্তি রয়েছেন। তাঁদের ডেঙ্গি হয়েছে ধরেই চিকিৎসা হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত শিলিগুড়ি শহরে ৭৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত । ১২, ১৫ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে পরিস্থিতি সব চেয়ে খারাপ। ওই ওয়ার্ডগুলিতেই অন্তত ২০ জনের ডেঙ্গি হয়েছে। শহরের ৪, ৫, ৩১, ৩৯, ৪৪ সব মিলিয়ে ২০ টি ওয়ার্ডে ডেঙ্গি ছড়িয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের নজরে এসেছে। বিভিন্ন জায়গায় জল জমে থাকা এবং বাসিন্দাদের সচেতনতার অভাবেই ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে বলে মনে করছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অম্বিকা নগরের বাসিন্দা সুশান্ত বর্মন। রথখোলার সানু চন্দ্র রবিবার ভর্তি হন। তাঁদের ডেঙ্গি হয়েছে বলে চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন। অথচ দুই দিন তিন দিন পরেও তাঁদের রক্ত পরীক্ষা রিপোর্ট মেলেনি। কদিন আগে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ে মারা গিয়েছিলেন পলাশ দত্ত নামে এক রোগী। মঙ্গলবার জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অসিত বিশ্বাস জানান, পলাশ দত্তের মৃত্যুর শংসাপত্রে উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণেই মৃত্যু বলা হয়েছিল। তবে ওই রোগীর রক্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, তাঁর ডেঙ্গি হয়েছিল। এখনও পর্যন্ত শহরে ডেঙ্গি আক্রান্ত শতাধিক বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy