বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীর সঙ্গে একাধিকবার সহবাস করেও তাকে বিয়ে করতে রাজি হয়নি এক যুবক। পরে সঙ্গীদের নিয়ে তাকে অপহরণের পরে বিক্রির চেষ্টার অভিযোগে যুবক-সহ ৪ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনায় জড়িয়েছে তৃণমূল নেতার নামও। রবিবার রাতে মালদহের চাঁচলের চান্দোয়া দামাইপুর এলাকার ঘটনা। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্তে নামলেও এখনও অবশ্য ওই তৃণমূল নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি।
তৃণমূল নেতা সামিউল ইসলাম চাঁচল-১ ব্লকের কার্যকরী সভাপতি। সম্প্রতি ঋণ না দেওয়ায় দলবল নিয়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এক ম্যানেজারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল সামিউলের বিরুদ্ধে। যদিও কিশোরীকে অপহরণের চেষ্টার সময় ঘটনাস্থলে তাঁর দেখা মেলেনি বলে পুলিশ জানিয়েছে। কিশোরীকে অপহরণের ঘটনায় দলের নেতার নাম জড়িয়ে যাওয়ায় অস্বস্তিতে পড়েছে দল।
যদিও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে দলের নেতাদের একাংশের বিরুদ্ধে শুধু চক্রান্তই নয়, তাকে প্রাণে মারার চেষ্টাও চলছে বলে ওই নেতার দাবি। তবে অভিযোগ জানালেও এ দিন ওই কিশোরী ও তার পরিবারের আপত্তিতে তার মেডিক্যাল টেস্ট করানো যায়নি বলে পুলিশের দাবি। ফলে ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য কিশোরীকে আদালতে পাঠানো হয়। মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতরা হল ইফতেকার হোসেন, তার ভাই বাবুল হক, বন্ধু সুলতান আলি ও গাড়ির চালক রামকৃষ্ণ দাস। ওই ঘটনায় জড়িত বাকি দু’জন হলেন ইফতেকারের বন্ধু মোতি ও তৃণমূল নেতা সামিউল। ইফতেকারের বিরুদ্ধে ফুঁসলিয়ে সহবাস ও বাকিদের বিরুদ্ধে অপহরণের চেষ্টার মামলা করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে।
চাঁচলের চন্ডীগাছির বাসিন্দা ইফতেকারের সঙ্গে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই কিশোরীর সম্পর্ক ছিল। অভিযোগ, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে কিশোরীর সঙ্গে একাধিকবার সহবাসও করেও বিয়েতে রাজি হননি ওই যুবক।
কিশোরীর চাপে রবিবার তাকে বিয়ে করবে বলে চাঁচলে ডেকে পাঠায় ইফতেকার। তারপর তাকে চাঁন্দোয়া দামাইপুর এলাকায় এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিশোরী জানায়, সেখানে নিয়ে গিয়ে ফের তাকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন ইফতেকার। তার অভিযোগ, ‘‘তারপর আমাকে অপহরণ করে বিক্রি করে দেবে বলে ওরা গোপনে পরামর্শ করছিল। ওদের কুমতলব রয়েছে জানতে পেরেই আমি চিত্কার শুরু করি। তার পর বাসিন্দারা আমাকে উদ্ধার করেন।’’
ওই কিশোরীর পরিবারের দাবি, সামিউলও সে সময় কাছাকাছি ছিলেন।
সামিউল দাবি করেছেন, ‘‘আমি ওই ঘটনার কিছুই জানি না। কেন যে আমাকে জড়িয়ে দেওয়া হল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘শনিবার রাতে বেশ কিছু লোকজন সশস্ত্র অবস্থায় আমার বাড়িতে চড়াও হয়। বন্দুক দেখিয়ে আমাকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। পুলিশে সেই অভিযোগ জানিয়েছি। তার পর আজ এই ঘটনায় আমাকে জড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বলে শুনছি। নেতৃত্বকে সব জানিয়েছি।’’
সামিউল ব্লক তৃণমূল সভাপতি মজিবর রহমানের বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর বলে পরিচিত। ব্লক সভাপতি এদিন বলেন, “ওই নেতা জড়িত কি না, সেটা পুলিশই বলবে। তবে এদের জন্য দলের দুর্নাম হচ্ছে।”
জেলা তৃণমূল সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “আমি ঘটনার কথা জানি না। তবে দলের কেউ যদি অন্যায় ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে তা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না। বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy