Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জলাভাবে বন্ধ মিড-ডে মিল

নেই-এর তালিকা দেখলে আঁতকে উঠতে হয়। স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, নেই শিক্ষাকর্মীও। একাধিক শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চও ভাঙা। বিদ্যুতের সংযোগ থাকলেও তা ব্যবহার করা যায় না।

একদল: স্কুলের সামনে খুদেরা। বন্ধ মিড-ডে মিল। নিজস্ব চিত্র

একদল: স্কুলের সামনে খুদেরা। বন্ধ মিড-ডে মিল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মাদারিহাট শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২৪
Share: Save:

নেই-এর তালিকা দেখলে আঁতকে উঠতে হয়। স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই, নেই শিক্ষাকর্মীও। একাধিক শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চও ভাঙা। বিদ্যুতের সংযোগ থাকলেও তা ব্যবহার করা যায় না। এ বার জলের অভাবে মিড-ডে মিলও বন্ধ হয়ে গিয়েছে টোটোপাড়ার ধনপতি টোটো মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে।

প্রতি বছরেই গরম পড়লে জলকষ্ট শুরু হয় টোটোপাড়ায় । এ বার এপ্রিল থেকে জলের অভাবে মিড-ডে মিলের রান্না বন্ধ রয়েছে ওই স্কুলে। এর আগে কোনও কোনও বছরে জলের অভাবে দু’একদিন রান্না বন্ধ ছিল। কিন্তু টানা ১৮ দিন ধরে জলের অভাবে মিড-ডে মিল বন্ধ থাকা এবারই প্রথম। বাড়ি থেকে জল নিয়ে এসে তেষ্টা মেটাতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া প্রতিমা টোটো জানায়, ‘‘দুপুর হলেই খিদে পায়। কিন্তু রান্না না হওয়ায় খিদে সহ্য করতে হয়।’’

টোটো জনজাতির মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটাতে ১৯৭৯ সালে টোটোপাড়ায় ধনপতি টোটো মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এখন ওই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা ৩৬২। রয়েছে ৪০ জনের হোস্টেলও। এই হোস্টেলের রান্না করেন একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। তাঁরা দূর থেকে জল এনে কোনওমতে হোস্টেলের আবাসিকদের খাওয়া চালাচ্ছেন। কিন্তু স্কুলের তিনশোরও বেশি পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের জন্য যে পরিমাণ জলের প্রয়োজন তা আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মিশা ঘোষাল বলেন, ‘‘আমি নিরুপায়। পড়ুয়াদের মুখে দুপুরের খাবার তুলে দিতে না পেরে খুব কষ্ট লাগছে।” গোটা ঘটনা বিডিও, স্কুল পরিদর্শককে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।

গরমে ওই এলাকার জলের স্তর নেমে যাওয়ায় জল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান মাদারিহাট-বীরপাড়ার বিডিও রাজীব দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘অন্য এলাকা থেকে নতুন করে পাইপ টেনে জল আনার কাজ শুরু হয়েছে। দু’এক দিনেই জলের সমস্যা দূর হবে।”

শুধু জলভাব নয়, আরও একাধিক সমস্যার জেরবার এই স্কুল। রয়েছে চার জন শিক্ষকের অভাব। বিজ্ঞান বিভাগে এক জনও শিক্ষক নেই। স্কুলের করনিক, চতুর্থ শ্রেনির শিক্ষাকর্মিও নেই। স্কুলের একাধিক শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চ, স্কুলের দরজা-জানালা ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ থাকলেও তার, ওয়ারিং সব নষ্ট হয়ে যাওয়াতে তা ব্যবহার করা যায় না।

আলিপুরদুয়ার জেলার স্কুল পরিদর্শক তপন সিংহ বলেন, “টোটোপাড়া স্কুলের শিক্ষক বা কর্মী নিয়োগের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ এসএসসি-র মাধ্যমে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ হবে। মিড-ডে মিলের ব্যাপারে বিডিও দেখবেন বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid day meal Water Crisis
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE