অভিযান: নালা-নর্দমায় ধোঁয়া দিচ্ছেন পুরসভার কর্মীরা। শনিবার ইংরেজবাজারে। নিজস্ব চিত্র
মালদহের ইংরেজবাজার শহরে ডেঙ্গি বাহক মশার প্রকোপ কমাতে এবার থেকে দিনে দুবার করে কামান দাগা শুরু করল পুরসভা।
স্বাস্থ্য দফতরের পরামর্শে শনিবার থেকে শহরের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে এই কাজ শুরু হল। এদিন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে মশা তাড়াতে প্রথম সকালে কামান দাগা হয়। শুধু কামান দাগাই নয়, জ্বর ও ডেঙ্গিতে কোনও শহরবাসী আক্রান্ত কি না তা খুঁজতে ১২ থেকে ১৬ তারিখ পর্যন্ত শহরে বিশেষ সমীক্ষার কাজও শুরু করেছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিন্তু বাসিন্দাদের প্রশ্ন, শুধু ধোঁয়া দিলেই কি মশা তাড়ানো যাবে? জমা জল, যা মশার উৎসস্থল তা দূর করতে পুরসভাকে উদ্যোগী হতে হবে।
ডেঙ্গির মোকাবিলা নিয়ে নড়ে চড়ে বসেছে জেলা প্রশাসনও। জানা গিয়েছে, আগামী ১৭ তারিখ ইংরেজবাজার ও পুরাতন মালদহ এই দুই পুরসভার সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী ও কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করবেন জেলাশাসক। জেলা স্বাস্থ্য দফতরও ব্লকে ব্লকে কন্ট্রোল রুম খুলে জ্বর ও ডেঙ্গি সম্পর্কিত তথ্য আদান প্রদানের কাজ শুরু করছে।
গত বছরের মতো এ বারও মালদহ জেলাজুড়েই ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে। চলতি বছরে এপর্যন্ত ২৪৮ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান মিলেছে জেলায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রায় ৫০ জন কালিয়াচক ১ ব্লকে, পরের স্থানই ইংরেজবাজার পুরসভা। এই শহরে এ পর্যন্ত ৪৫ জনের মতো ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। এই মুহূর্তে বিভিন্ন ওয়ার্ডে অন্তত ২০ জন আক্রান্ত। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বিভিন্ন নার্সিংহোম থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকেই এই হিসেব পুরসভার কাছে পৌঁছেছে।
এ দিন থেকে পুর এলাকায় সন্ধ্যার বদলে সকাল ও বিকেল দুবার মশা মারতে কামান দাগা শুরু করা হল। পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলার শুভময় বসু বলেন, ‘‘এতদিন সন্ধ্যায় কামান দাগা হত শহরে। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই এ দিন থেকে সকাল ১০টা থেকে ১২টা ও বিকেল ৪টে থেকে ৬টা পর্যন্ত পালা করে সব ওয়ার্ডে কামান দাগা হবে। কারণ এই দুই সময়েই ডেঙ্গির বাহক মশা সক্রিয় হয়ে ওঠে। এছাড়া মশা মারার তেল স্প্রে নিয়মিত যেমন চলছে তা চলবে।’’
যদিও বিরোধী থেকে শুরু করে বণিকমহলের অভিযোগ, ডেঙ্গি মোকাবিলায় উদাসীন পুরসভা। নিয়মিত আবর্জনা সাফাই যেমন হয়না তেমনি নিকাশি নালাও সাফ হয়না। ফলে মশার উপদ্রব বাড়ছে। বাসিন্দারা এতদিন দিনে কেন দিনের বেলায় কামান দাগা হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে শহরে চারদিন মাইকিংও করা হয়েছে।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৈয়দ শাহজাহান সিরাজ বলেন, আমরা জেলার প্রতিটি ব্লকে একটি করে কন্ট্রোল রুম চালু করেছি। সেখান থেকে প্রতিদিন ব্লকের হাসপাতালগুলিতে জ্বর বা ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে কতজন রোগী আসছেন সে সম্পর্কিত তথ্য সে দিনই জেলায় পাঠাবে, সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy